আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সীমান্ত চুক্তি: ‘নরম হচ্ছে’ বিজেপি

বিজেপির শীর্ষ নেতাদের এক বৈঠকের পর বুধবার কলকাতাভিত্তিক দৈনিক টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় পার্লামেন্টের বিরোধী দল আর প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে বাদ সাধতে চায় না।
১৯৭৪ সালে স্বাক্ষরিত স্থল সীমান্ত চুক্তি এবং এর আওতায় ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত প্রটোকল বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত সংবিধানের বিলটি আগামী সোমবার আবারো পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় তোলার উদ্যোগ নেবে ক্ষমতাসীন কংগ্রেস।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরে স্থল সীমান্ত চুক্তির ওই প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়।
সীমান্ত চুক্তি ও প্রটোকলের বাস্তবায়ন হলে উভয় দেশের মধ্যে ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় হবে। নির্ধারিত হবে ছয় দশমিক এক কিলোমিটার অমীমাংসিত সীমানা।

কিন্তু এর জন্য পার্লামেন্টে বিল পাস করতে হলে রাজ্যসভা ও লোকসভায় দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন, যা কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট সরকারের নেই।

তবে আগে এ বিলের ব্যাপারে আলোচনা করা হয়নি জানিয়ে এর বিরোধিতা করে আসছে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। মূলত এ বিষয়ে দলের পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম শাখার কঠোর বিরোধী অবস্থানের কারণেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এটা করছে বলে ধারণা করা হয়।
গত মাসে লোকসভায় বিরোধী দলীয় নেতা সুষমা স্বরাজ বলেন, তার দল এই বিল পার্লামেন্টে তুলতে দেবে না।
কিন্তু পরে এ বিষয়ে কিছুটা নমনীয় হয় বিজেপি, বিশেষত পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা অরুণ জেটলির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর তাদের এই অবস্থান দেখা দেয়।


এরপর এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে একাধিক সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়, যাতে ‘জাতীয় স্বার্থ’ রক্ষার বিষয়ে উদাসীনতার জন্য বিজেপিকে দায়ী করা হয়।
এ বিষয়ে অন্তত তিনটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করে ভারতের সর্বাধিক প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক টাইমস অফ ইন্ডিয়া। তার সর্বশেষটি লেখেন বিজেপির এমপি বরুণ গান্ধী, যিনি স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন না করে ভারত প্রতিবেশী বাংলাদেশের ‘প্রকৃত বন্ধু’ হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করছে বলে অভিমত দেন।
এদিকে এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এ চুক্তি বাস্তবায়ন ও তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিরোধিতাকারীদের সমালোচনা করেন বিজেপি ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আসাম ও কাশ্মীরের সাবেক গভর্নর শ্রীনিবাস কুমার সিনহা।
দেশটির সেনাবাহিনীর সাবেক এই উপ-প্রধান শেখ হাসিনার মতো ‘প্রকৃত বন্ধুর’ প্রতি ভারতের সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।


বিজেপি নেতাদের বরাত দিয়ে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, দলের জ্যেষ্ঠ নেতা এল কে আদভানি মঙ্গলবার রাতে সুষমা স্বরাজ এবং রাজ্যসভায় বিরোধী দলীয় নেতা অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠক করেন। সংবিধান সংশোধনের ওই বিল যাতে পার্লামেন্টে তুলতে দেয়া হয় সেজন্য তাদের বলেন তিনি।
রাজ্যসভায় একবার এ বিল উঠলে তা সে সময় পাশ না হলেও পরবর্তীতে পাশ করানোর সুযোগ তৈরি হয়।
গত সোমবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশিদ বিলটি পার্লামেন্টে তুলতে গিয়েও বাধার মুখে পিছু হটেন। এরপর পার্লামেন্টে বিজেপি নেতা সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন তিনি।


এদিকে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে নয়া দিল্লির জোরালো পদক্ষেপ চায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার, আগামী বছরের শুরুতেই যাদের জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে।
দিল্লিতে বাংলাদেশের হাই কমিশনার তারিক এ করিম সম্প্রতি বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাত করেন। দৃশ্যত সীমান্ত চুক্তিতে বিজেপির সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যেই তার ওই সাক্ষাৎ।
এর আগে গত মে মাসে বিলটি পার্লামেন্টে তুলতে গিয়ে আসাম গণ পরিষদ ও বিজেপির আসাম শাখার তীব্র বিরোধিতার মুখে পিছু হটে ভারত সরকার। বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখাও এই চুক্তির বিরোধী।


তবে বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম শাখার জেনারেল সেক্রেটারি বরুণ গান্ধী বুধবার টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত তার প্রবন্ধে বলেন, এই চুক্তি আটকে রেখে এবং তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি না করে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের সুযোগ হাতছাড়া করছে ভারত।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।