স্বাধীন দেশে স্বাধীন ভাবে চলতে চাই.......
ভাই ইভ টিজিং (মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা) করবেন। করলে আজই আপনার পাশের কোন সুন্দরি মেয়ে দেখলে ইভ টিজিং শুরু করে দেন। করছেন না কেন? আরে ভাই ভয় পাচ্ছেন? দূর মিয়া.. এটা কোন ভয় হলো নাকি? কোন সমস্য নাই। কারন আপনার পাশে আছে প্রশাসন। আপনার পাশে আছে মহিলা বিরোধী প্রধান মন্ত্রী।
আপনার পাশে আছে মহিলা বিরোধী সরাষ্ট্র মন্ত্রী। তাই আপনি নিশ্চিন্তে ইভ টিজিং করে যান। কেউ যদি আপনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে নিয়ে তাকে ওপারে পাঠিয়ে দিন। সে যদি মেয়ের বাবা কিংবা মা অথবা মেয়ের শিক্ষক যেই হোক না কেন তাকে শেষ করেই দিন। আর আপনার মোটর সাইকেল কিংবা গাড়ি থাকলে তাতে চাপা দিয়ে মেরে ফেলুন।
আর যদি এসব কিছু না থাকে তাহলে ছুরি অথবা পিস্তলতো আছেই। কারন ইভ টিজিং আর খুন আপনার জন্য এখন ফ্রি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এতক্ষনতো আমার ঘ্যান ঘ্যান কথাগুলো শুনলেন এবার বিভিন্ন পত্রিকা ঘেটে আরো কিছু বাজে খবর আপনাদের শেয়ার করলাম।
এবার ইভ-টিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় লাশ হলেন এক অভিভাবক। ফরিদপুর চিনির কল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী হীরা বিশ্বাসের মা চাঁপা রানী ভৌমিক (৪৫) মেয়ের উত্ত্যক্তকারীর মোটরসাইকেল চাপায় গুরুতর আহত হন।
পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে তিনি মারা যান। তিনি ফরিদপুর চিনিকলে কর্মরত ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার সময় নিজ বাড়ির কাছে খাদ্য গুদামের সামনে বিদেশগামী হারান চন্দ্র সরকারের মেয়েকে বিদায় জানিয়ে স্বামী স্বপন বিশ্বাসসহ হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় মধুখালী বাজারের রতন সাহার ছেলে বখাটে ও সন্ত্রাসী রনি সাহা (২২) অপর দুই সঙ্গীসহ মোটরসাইকেল চালিয়ে পেছন থেকে তাকে চাপা দেন।
এতে রানী ভৌমিক গুরুতর আহত হন। প্রথমে তাকে মধুখালী ও পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার ভোরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে নিহত চাঁপা রানী ভৌমিকের ভাই অরুণ ভৌমিক বাদী হয়ে মধুখালী থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ঘাতক রনি সাহা স্কুলে যাওয়ার পথে চাঁপা রানীর মেয়ে হীরা বিশ্বাসকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো।
বাধ্য হয়ে চাঁপা রানী ও স্বপন বিশ্বাস এ ঘটনাটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, চিনিকলেরর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যানকে অবহিত করলে তারা রনির পিতাকে বিষয়টি জানায়। এতে রনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং প্রতিশোধের সুযোগ খুঁজতে থাকে।
এ ঘটনায় আজ বুধবার ফরিদপুর চিনিকলের শ্রমিক কর্মচারী, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, মহিলা পরিষদসহ মধুখালীর সর্বস্তরে জনগণ হত্যাকারীকে গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
এক পর্যায়ে জনগণ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আধাঘন্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখে। বিপুল সংখ্যক স্থানীয় জনতা বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান সুরাইয়া সালাম জানান, নিহত চাঁপা রাণীর স্বামী মৌখিকভাবে তার কাছে অভিযোগ করেছিলেন। তিনি ইভ-টিজিংকারী রনি সাহার বাবা রতন সাহাকে ডেকে এনে ছেলেকে শাসন করার জন্য সতর্কও করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আওলাদ আলী ফকির জানান, মামলাটি হত্যা মামলা হিসাবে নেওয়া হয়েছে। দায়ীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সমাজে ইভ-টিজিং এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, এ কারণে শুধু মেয়েরাই প্রাণ দিচ্ছেন না, প্রতিবাদকারীরাও এখন আর নিরাপদ নন।
নাটোরে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বখাটেদের হামলায় প্রাণ দিলেন কলেজ শিক্ষক মিজানুর রহমান। তার মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই ঝরে গেলো মা চাঁপা রানী ভৌমিকের প্রাণ।
সমাজ থেকে এটি সমূলে উৎপাটন করতে হলে ব্যাপক প্রচারণার পাশাপাশি গণসচেতনতা বৃদ্ধির প্রতি জোর দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি ইভ-টিজিং বন্ধে কঠোর আইনের পাশাপাশি আইনের কার্যকর প্রয়োগ এবং এর প্রচারণাও প্রয়োজন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।