আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যে রহস্যের শেষ নেই ।।

নিরপেক্ষ আমি

চাঁদে নাকি বসত গড়বে মানুষ। মঙ্গল গ্রহে চলছে জরিপ। পৃথিবী জয় করে মানুষ এখন হাতের মুঠোয় পুরতে চাইছে বিশ্বজগত্। কিন্তু এখনো এমন কিছু রহস্য আছে, যেগুলো যুগ যুগ ধরেই অমীমাংসিত। আবার কোনোটার মীমাংসা হয়ে গেলেও কিছু লোক সমাধান মানতে নারাজ।

সেই সব রহস্য নিয়ে এই লেখা। সাইবেরিয়ার বিস্ফোরণ ৩০ জুন, ১৯০৮। সকাল সাতটা বেজে ১৭ মিনিট। মধ্য সাইবেরিয়ার তুনগুসকা অঞ্চলে বিরাট এক বিস্ফোরণ ঘটল। আঘাতের কেন্দ্র থেকে ২০ মাইল ব্যাসার্ধে সব গাছ মাটি থেকে উপড়ে গেল।

যেন বিশালাকৃতির আগুনের বল আছড়ে পড়েছে মাটিতে! পুড়ে মারা গেল দেড় হাজার সাইবেরীয় হরিণ। আঘাতের কেন্দ্রস্থল থেকে ৪০ মাইল দূরে স্থানীয় কৃষক সেমেনভের বাড়ি ছিল। সিঁড়ির কাছে বসে সকালটা উপভোগ করছিলেন তিনি। তখনি ঘটে বিস্ফোরণ। প্রচণ্ড আলোর ঝলকানি, সঙ্গে ভীষণ আগুনের হলকা, পরনের জামা জ্বলে-পুড়ে যায় আগুনে।

সেমেনভের এর পর আর কিছু মনে নেই। কী হয়েছিল সেদিন সাইবেরিয়ার তুনগুসকায়? এটা কি উল্কাপাত, নাকি ছিটকে পড়েছে কোনো গ্রহের টুকরো? না মহাশূন্যের কোনো স্পেসশিপ থেকে কোনো টুকরো এসে পড়েছে পৃথিবীর গায়ে? নাকি অন্য গ্রহের প্রাণীরা আঘাত করেছে পৃথিবীকে? এখনো পর্যন্ত এসব প্রশ্নের কোনো অবিতর্কিত সমাধান নেই বিজ্ঞানীদের কাছে। একুশ শতকে এসেও এর কোনো গ্রহণযোগ্য উত্তর বা ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না কেউ। বিজ্ঞানীরা সাইবেরিয়ায় এমন আঘাতের কারণ উদ্ঘাটন করতে গিয়ে সত্যিই ধাঁধায় পড়ে গেছেন। সমাধান না থাকলেও কিছু অনুমান আছে।

প্রথম অনুমান করা হয়, এটা অবশ্যই শক্তিশালী কোনো উল্কার পতন। সেই উল্কার তীব্র উত্তাপেই পুড়ে গেছে চারপাশ। যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনাতেও এমন উল্কার বিস্ফোরণ হওয়ার নজির আছে। সমস্যা হলো, সে ক্ষেত্রে উল্কাপিণ্ডের আলামতও তো থাকার কথা। কিন্তু সে রকম কিছু তো পাওয়া গেল না! দ্বিতীয় সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দেওয়া হয় পঞ্চাশের দশকে।

এবার বলা হয়, ভিন্ন গ্রহের কোনো উন্নত সভ্যতার লোকজন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে, যার প্রভাবেই জলে-পুড়ে গেছে তুনগুসকার বিস্তৃত এলাকা। এই যুক্তির পক্ষের লোকেরা হালে আরও পানি পান ১৯৫৮-৫৯ সালে। এ সময় এ অঞ্চলে অতি উচ্চমাত্রায় রেডিও অ্যাক্টিভিটির নমুনা মেলে। অবশ্য ১৯৬১ সালের একটি অনুসন্ধানী গবেষণার পর এই ভিনগ্রহের তত্ত্ব বাতিল করে দেওয়া হয়। তৃতীয় ধারণা থেকে বলা হলো, এটি একটি ধূমকেতুর শীর্ষভাগ, যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেছিল।

তাই তার বিস্ফোরণ ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না। ১৯০৮ সালের ওই বিস্ফোরণের পর বহু দিন ইউরোপের আকাশে রাতের বেলায় সাদা কিছু দাগ চোখে পড়েছে, যা ওই ধূমকেতুর অতিরিক্ত অংশ বলেও অনুমান করা হলো। ১৯৬৫ সালে জন্ম নিল চতুর্থ অনুমান। বলা হলো, ‘অ্যান্টি রক’ জাতীয় কোনো বস্তু বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে এই বিস্ফোরণ ঘটায়। সর্বশেষ ধারণাটি বলে, একটি অতিক্ষুদ্র ‘ব্ল্যাকহোল’ আছড়ে পড়েছিল সাইবেরিয়ায়।

নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী উইলিয়ার্ড লিব্বি ও তাঁর সহকর্মীরা সাইবেরিয়ার এ বিস্ফোরণ নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিরেট কোনো সিদ্ধান্তে কেউ-ই পৌঁছাতে পারেননি। আদৌ সেটা কি সম্ভব হবে? শিখ্তী সানী তারিখ: ১১-১২-২০০৯ সুত্র: প্রথম আলো। আরো তথ্য জানুন

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।