মুক্তচিন্তার পথিক
খুন সেখানে করমর্দন করার মতোই সোজা! রাস্তা ঘাটে যেখানে সেখানে যখন তখন মিলতে পারে নারী কিংবা পুরুষের কাটা মাথা। অপরাধীদের বিরুদ্ধে 'জিহাদ' করার ঘোষণা দিয়ে দুনিয়াছাড়া হয়েছেন অনেক বাঘা বাঘা পুলিশ কর্মকর্তা। মাদক ব্যবসা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটে জিতে মেয়র হয়েছিলেন ম্যানুয়েল রডরিগেজ। কিন্তু অপরাধীরা গত জুনে তাকে খুন করে। অপরাধীদের রোষানলে পড়ে গত সপ্তাহে পুত্রকে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান একজন লোকাল মেয়র।
কিন্তু সেখান থেকে তাদের খুঁজে বের করে হত্যা করে অপরাধীরা। এমন একটি অঞ্চলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে পুলিশ বিভাগের প্রধান হতে রাজি হচ্ছিলেন না কেউ। একারণে ওই পদটি 'বিশ্বের সবচে কঠিন' চাকরি হিসেবে পরিচিতি পায়। কিন্তু সেই কঠিন চাকরিটিতে যোগদান করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন ২০ বছর বয়সী এক কলেজছাত্রী। তার নাম মারিসোল ভ্যালেস গার্সিয়া।
তাকে বলা হচ্ছে দেশের সবচে 'সাহসী নারী'।
ঘটনাটি উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর। দেশটির সীমান্তবর্তী চিহুয়াহুয়া প্রদেশের প্রাজেদিস জি গুয়েরেরো মিউনিসিপ্যালিটি হচ্ছে সবচে অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোর অন্যতম। এযাবত সেখানাকার পুলিশবাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব যিনিই নিয়েছেন তিনিই অপহূত ও খুন হয়েছেন। ফলে ওই পদে চাকরি করার জন্য লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
সেই চাকরিটি নিয়ে পুরুষ পুলিশদের লজ্জায় ফেলে দিয়েছেন মারিসোল ভ্যালেস। তার বয়স মাত্র ২০ বছর। তিনি এক সন্তানের জননী এবং এখনও পড়াশুনা করছেন। মেয়রের কার্যালয় জানায়, এ অঞ্চলে প্রতিদিন সহিংসতার আশংকার মধ্যে ভ্যালেসই কেবল এই পদটি গ্রহণ করতে রাজী হয়েছেন।
ভ্যালেস বলেন, তিনি কারো চোখ রাঙ্গানি বরদাশত করবেন না।
তিনি মেক্সিকোর সবচেয়ে গোলযোগপূর্ণ শহর সিউদাদ জুয়ারেজের কাছে একটি কলেজে অপরাধবিদ্যায় পড়াশুনা করছেন। পুলিশ প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি বলেন, 'মেক্সিকোর এখন আমরা সবাই ভীত। ' ভ্যালেস ১৯ পুলিশ কর্মকর্তার সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে তার নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ভ্যালেস বলেন, 'আমি ঝুঁকি নিয়েছি, কারণ আমি চাই আমার সন্তান ভিন্ন একটা সমাজে বসবাস করুক। আমি চাই লোকজন কোন ধরণের ভয়ভীতি ছাড়াই বাইরে বের হতে হোক।
' উলেস্নখ্য, ওই অঞ্চলটিতে এ বছর আড়াই হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। শহরটি অবৈধ মাদক ও মানব পাচারের অন্যতম ট্রানজিট পয়েন্ট। ভ্যালেস বলেছেন, 'সমাজের উন্নয়নে তরুণদের সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন। ' তিনি আরো বলেন, 'আমার কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে চাকরি করলেই অভিজ্ঞতা তৈরি হবে।
' তার এই দুঃসাহস দেখে পেরিওদিস্তা ডিজিটাল তার খবরের শিরোনাম দিয়েছে, 'মেক্সিকোতে পুরুষ নেই'!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।