প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গবেষণাক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে আছে। এ কারণে তাঁর সরকার গবেষণা খাতে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) নতুন ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসকদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ দেশের গরিব মানুষের করের টাকা দিয়ে আপনারা মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করেছেন। চিকিৎসক হয়েছেন, তাদের যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা আপনাদের দায়িত্ব।
’ খবর বাসস ও ইউএনবির।
বিএমআরসির চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী।
চিকিৎসা খাতে গবেষণায় বরাদ্দ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গবেষকেরা তাঁদের কার্যক্রম সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় তহবিল চাইলে সরকার সে অনুযায়ী তাঁদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করবে। তিনি গবেষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘তহবিল সরবরাহে আমরা গড়িমসি করব না। সরকার আপনাদের সঙ্গে আছে।
আপনাদের জন্য যা যা করা দরকার আমরা তা করব। ’
প্রধানমন্ত্রী গবেষণা খাতে তহবিল সহায়তা দিতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, চিকিৎসা গবেষণা খাতে ওষুধ কোম্পানিগুলো এগিয়ে আসতে পারে এবং এ বিনিয়োগ থেকে তারাও লাভবান হতে পারে। মানসম্মত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে তিনি চিকিৎসকদের প্রতি মৌলিক গবেষণা চালিয়ে যাওয়ারও আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সংগঠনকে ধ্বংস করার অভিযোগ এনে সাবেক বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, সাবেক জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে দুর্নীতি ও লুটপাটে জড়িয়ে পড়ে। তাদের আমলে সব প্রতিষ্ঠান অকার্যকর হয়ে পড়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, জোট সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের চিকিৎসাশিক্ষা ভয়ানক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। দলীয় ক্যাডারদের ভর্তি করতে তারা পর্যাপ্তসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ না করে এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি না করেই নির্বিশেষে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসকদের শুধু রোগ শনাক্ত করা এবং চিকিৎসা করার গণ্ডি না হয়ে চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়নে গবেষণা করারও আহ্বান জানান।
গুটিবসন্ত, পোলিও ও কলেরা নির্মূল করার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়া ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে চিকিৎসকদের গবেষণা করতে অনুরোধ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য খাতে তথ্যপ্রযুক্তির সংযোজন করেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগসহ কম্পিউটার সরবরাহ করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ওয়েব ক্যামেরা সরবরাহ করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা এবং জেলা পর্যায়ে ‘মোবাইল ফোন হেলথ সার্ভিস’ চালু করা হয়েছে।
চীনের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে চীনের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। চায়নিজ পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রেন্ডশিপ উইথ ফরেন কানট্রিজের প্রতিনিধিদল গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে দেখা করতে গেলে তিনি এ গুরুত্বারোপ করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী সংস্কৃতি, খেলাধুলা, যোগাযোগ ও মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রেও সম্পর্ক বাড়ানোর প্রতি জোর দেন। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট চেন হাওসু। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।