আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কমিউনিষ্ট পার্টি ও গার্মেন্টস শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ জামিনে মুক্তি কিছু প্রাসঙ্গিক কথা

একজন খেটে খাওয়া-শ্রমজীবী মানুষ। নিজের অধিকারের কথা বলতে চাই ও অন্যের শুনতে চাই। তাই বলে দেশ, দেশের মাটি, আলো-বাতাশ ও মানুষকে বাদ দিয়ে নয়।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের উপদেষ্টা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যডভোকেট মন্টু ঘোষ মুক্তি পেলেন। ১১ অক্টোবর সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।

সন্ধ্যায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার সময় কয়েকশ নেতা-কর্মী মন্টু ঘোষকে স্বাগত জানিয়ে মিছিলসহকারে পার্টির পুরানা পল্টন¯’ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। সিপিবি কার্যালয়ে এক অনাড়¤^র অনুষ্ঠানে সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও ঢাকা নেতৃবৃন্দ, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিভিন্ন গার্মেন্টস শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, সাপ্তাহিক একতা পরিবার, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ফুল দিয়ে অ্যাড. মন্টু ঘোষকে ¯^াগত জানান। এ সময় এক আবেগঘন পরতির সৃষ্টি হয়। এ সময় দলীয় ও গার্মেন্টস শ্রমিক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে মন্টু ঘোষ বলেন, জেল-জুলুম-অত্যাচারে শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন থেকে আমাদের পিছু হটার কোন সুযোগ নেই। তিনি অবিল¤ে^ শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ারও আহŸান জানান।

যারা আমার মুক্তির জন্য নানাভাবে অবদান রেখেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান মন্টু ঘোষ। খবর পিটিবি নিউজ ডটকম এর। মন্টু ঘোষ মূলত কমিউনিষ্ট নেতা। গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য কাজ করেন বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির গার্মেন্টস শ্রমিক উইংস ‘গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র’র উপদেষ্টা হিসাবে। সম্প্রতি গার্মেন্টস সেক্টরের শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার পর পরই বেশ কিছু এলাকায় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

গার্মেন্টস সেক্টর প্রায় উত্তাল হয়ে পড়ে। সরকার এই টালমাটাল অবস্থা থামানোর জন্য শুরু করে এ্যাকশন। পর্যায়ক্রমে গ্রেপ্তার হন মন্টু ঘোষ (কমিউনিষ্ট নেতা), কল্পনা আক্তার ও বাবুল আক্তার ( এনজিও বেইজড শ্রমিক নেতা), হাজী শহিদুল ইসলাম (বিএনপি নিয়ন্ত্রিত শ্রমিক নেতা) আরো ফুটেজ দেখে তেজগাঁও থেকে কয়েকজন গার্মেন্টস শ্রমিককে আটক করা হয়। এরপর আস্তে আস্তে গার্মেন্টস সেক্টর পুরো ‘শীতল’ হয়ে আসে। ন্যুনতম মজুরি ঘোষণার পর সরকারের এ্যকশনের ফলে শ্রমিকদের মুখ কার্যত বন্ধ হয়ে আসে।

শ্রমিকদের পক্ষে কেউ কোন কথা আর বলার সাহস পায়না। মিডিয়াও অনেকটা শ্রমিকদের ঘাড়ে দোষ দিয়ে শ্রমিকদের পক্ষে আর কোন লেখার সাহস পায়না। এ অবস্থায় একটি মহল বলে, ন্যুনতম মজুরি ঘোষণার পর ভাংচুর করার মধ্য দিয়ে একটি পক্ষ ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আর সেই সুযোগে গার্মেন্টস মালিকরা সরকারের কাছে দেনদরবার করে তাদের জন্য বড় সুযোগটি নিয়েছিল। আর একটি পক্ষ বলেছিল, কিছু ম্যানেজ হওয়া শ্রমিক নেতারা মালিকরা দ্বারা ম্যানেজ হওয়ার মধ্যে দিয়ে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করেছিল।

তার কারণে গার্মেণ্টস মালিকরা সরকারের উপর প্রভাব বিস্তার করে শ্রমিকদের গ্রেপ্তার করার সুযোগ পেয়েছিল। গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিয়ে যারা খবর রাখেন, গার্মেন্টস সেক্টরকে যারা আরো সুপ্রতিষ্ঠিত দেখতে যান তাদের অভিমত ছিল একটু আলাদা। তাদের মতে, মজুরি বোর্ড যে মজুরি ঘোষণা করেছিল তার পর যদি ভাংচুর, অগ্নি সংযোগ বা নাশকতার কোন পথ বেছে না নিতো। যদি শ্রমিক নেতারা একটি নিয়মাতান্ত্রিক আন্দোলন অব্যাহত রাখতো তাহলে মালিকরা যে সুযোগ নিয়ে এখন পুরো গার্মেন্টস সেক্টরে যে লালঘোড়া দাবড়িযে দিচ্ছে, সেটা করার সুযোগ পেতো না। একটি ব্যালেন্স অব¯’া বিরাজ করতো।

মজুরি ঘোষণার আগে সরকার প্রধান মালিককে যেভাবে লুটেরা হিসাবে চিহ্নিত করে বক্তব্য দেয়া হয়েছিল, তা শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের পক্ষে থাকতো। যা পরে সেই সরকার প্রধানের মুখটি বন্ধ হয়ে যায়। সর্বপরি গার্মেন্টস সেক্টরে যাই হোক একটি সুসংগঠিত সেক্টর হিসাবে যদি বাঁচিয়ে রাখার জন্য মালিক এবং সরকার চিন্তা করে থাকে, তাহলে একটু ভাল করে চিন্তা করতে হবে। কারণ গার্মেন্টস শ্রমিকরা মালিক দ্বারা অত্যাচারিত। (কোন কোন মালিক আছেন খুবই ভাল) সেই অত্যাচারিত শ্রমিকরা কোন বিশেষ সংগঠনের পতাকা তুলে সংগঠিত নয়।

তারা কোন সংগঠনেকেও ভালভাবে বিশ্বাস করে না। যদিও কিছু কিছু সংগঠন তুলনামুলকভাবে মোটমুটি কাজ করছে। এই শ্রমিকদের মধ্যে সব সময় মালিক বিরোধী আগুন জ্বলে। তাই তারা যখন বিশেষ কোন ইস্যুতে বিক্ষুব্ধ হয়, তখন তাদের একটি দিশলাইয়ের একটি কাঠি জ্বালিয়ে দিলেই আন্দোলন হয়ে যায়। এই সব অবস্থা থেকে উত্তোরণের একটিই মাত্র পথ তাহলো মালিকদের উচিত হবে শ্রমিকদের আ¯’ায় আনা।

আর এই জন্য সরকারকে ‘ঘটকের’ ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকারকে কারো পক্ষ নিলে এটি হবে দেশ এবং দেশের শ্রমিকদের জন্য হবে সবচেয়ে খারাপ কাজ। ##

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.