এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের ত ই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝিঁ পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ। http://zizipoka.com/
ভূতুড়ে বাড়ি
ইউরোপের ইংল্যান্ড আর স্কটল্যান্ডে এত বাড়ি রয়েছে যেগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অশরীরী ইতিহাস, স্বচ্ছন্দে এ দেশ দুটিকে ‘হানাবাড়ির দেশ’ বলে চালিয়ে দেয়া যায়। এ দেশ দুটিতে রয়েছে শত বছরের পুরনো বেশকিছু দুর্গ, যেগুলোর প্রতিটির সঙ্গেই প্রায় জড়িয়ে আছে কোনও না কোনও ভৌতিক কাহিনী। উত্তর ইংল্যান্ডের চিলিংহাম কাস্ল, দণিক্ষ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের ওল্ড ওয়ার্ডার কাস্ল, ডেভনের বেরি পমেরয় কাস্ল, সমারসেটের ক্যাডবেরি কাস্ল, ডরসেটের কর্ফ কাস্ল, সাসেক্সের আরুন্ডেল কাস্ল, এ রকম আরও অনেক দুর্গের পরতে-পরতে জড়িয়ে রয়েছে অতৃপ্ত আত্মাদের কাহিনী।
স্কটল্যান্ডের আলডৌরি কাস্ল, বার্কালডাইন কাস্ল, হার্মিটেজ কাস্ল বা ডনট্রান কাস্লের নামও এ প্রসঙ্গে করা যায়।
কার্ডিফ দুর্গের পাঠাগারের ফায়ারপেস থেকে বেরোতে দেখা যায় এ দুর্গেরই স্থপতি মার্কুইস অপবুটকে। ১৮৪৮ সালে মারা গিয়েছিলেন তনি। তার আত্মাকে দেখা যায় প্রায় ছ’ফুট চওড়া দেয়াল ভেদ করে যে ঘরে তিনি মারা গিয়েছিলেন সেখানে ঢুকতে। লোথার দুর্গে দেখা যায় স্যার জেম্স লোথারের ভূতকে। ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে মাঝে মাঝেই সেখানে বেড়াতে আসে তার আত্মা।
সাসেক্সের আরুন্ডেল দুর্গের ভূত পরিচিত ‘ব- ম্যান’ নামে। লাইব্রেরির বইপত্র নেড়েচেড়ে সে নাকি হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। ডেভনের ওকহ্যাম্পটন দুর্গে মাঝে মধ্যে দেখা দেয় এক কালো কুকুরের ভূত। ভৌতিক কাণ্ড-কারখানার নিরিখে স্কটল্যান্ডের আর এক অন্যতম প্রাচীন কেলা এডিনবার্গ দুর্গও পিছিয়ে নেই। বলা হয়ে থাকে, গোটা এডিনবার্গটাই নাকি এক ভুতুড়ে শহর।
আর সেই শহরেই যখন আছে পুরনো ওই কেলা তখন তো সোনায় সোহাগা। দুর্গে বেড়াতে এসে বহু মানুষের গা ছমছমে অভিজ্ঞতা হয়েছে। কেলার নিচে গোপন সুড়ঙ্গের শেষ দেখত পাঠান হয়েছিল এক বাঁশিঅলাকে। সে নাকি আর ফিরে আসনি। আজও তার বাঁশির সুর শোনা যায় কেলায়।
কেউ দেখেছেন মুণ্ডহীন এক ড্রামবাদককে। শুনেছেন তার ড্রামের শব্দ। দুর্গের এক জায়গায় আছে যুদ্ধে ব্যবহৃত কুকুরদের সামাধি। রাতে সেখান থেকে ভেসে আসে কুকুরের ডাক। এক সময় বহু সৈন্যূকে এখানকার গোপন কুঠুরিতে যুদ্ধবন্দি করে রাখা হয়েছিল।
সেসব কুঠুরিতে ঢুকে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেকের। ২০০১ সালে এখানে ভূতের খোঁজে অভিযান চালান একদল গবেষক। তারাও মানতে বাধ্য হন, ‘প্যারানর্মাল এলিমেন্ট’-এর উপস্থিতি রয়েছে এখানে। নর্দাম্বারল্যান্ডের ফেদারস্টোন কাস্লে যখন ব্যারন ফেদারস্টোনের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল, সে সময় শত্র“র আক্রমণে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সব। তাদের হাতে মারা পড়েন অনেকেই।
এখনও নাকি গভীর রাতে দেখা যায় সেই বিয়ের আসর।
কেন্টের ডোভার দুর্গের রাজার শোওয়ার ঘরের দরজা দিয়ে মাঝে মধ্যে দেখা যায় কোনও এক অতৃপ্ত আত্মার শরীরের নিম্নাংশকে বেরোতে। ওই দুর্গেই পশ্চিম দিকের সিঁড়িতে লাল পোশাক পরিহিতা এক মহিলাকে দেখেছেন অনেকে। দুর্গের একটি জায়গায় আগে একটি দরজা ছিল, যেটি পরে বন্ধ করে দেয়া হয়। এখনও নিশুতি রাতে ওখানে দরজা বন্ধ হওয়ার ও খোলার শব্দ শোনা যায়।
কনউই দুর্গের ভূতের সঙ্গে আবার জড়িয়ে আছে এক করুণ কাহিনী। এই দুর্গের বাসিন্দা এক রাজপুরুষ এক সময় যুদ্ধে যান। যুদ্ধ থেকে ফেরার দিন তার পথ চেয়ে দুর্গের উপরের ছাদে অপো করছিলেন তার স্ত্রী-পুত্র। সন্ধ্যার অন্ধকার নেমে আসায় তারা যখন নিচে নেমে আসছিলেন, সে সময় পা হড়কে সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে পড়ে মারাÍক আহত হন ওই মহিলা। দুর্গের এক ভৃত্য ডেকে আনে ডাক্তারকে।
ডাক্তার বলেন, রোগীর চোট গুরুতর, তার মৃত্যু আসন্ন। স্ত্রীকে বাঁচাতে চেষ্টা না করায় ওই রাজপুরুষ তাকে শাস্তি দিতে পারে এই ভেবে ওই ভৃত্য ডাক্তারসহ আহত মহিলা ও তার পুত্রকে আটকে রাখে ওই ঘরে। যুদ্ধ থেকে ফিরে ওই রাজপুরুষ দুজনকেই মৃত অবস্থায় দেখেন। সেই ডাক্তারের আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। শোকে পাগল হয়ে মারা যান ওই রাজপুরুষ।
এখনও নাকি রাতের অন্ধকারে লণ্ঠন হাতে ডাক্তারকে খুঁজে বেড়াতে দেখা যায় তাকে! স্কটল্যান্ডের বার্কালডাইন দুর্গে আততায়ীর হাতে নিহত হয়েছিলেন ডোনাল্ড ক্যাম্পবেল। নিশুতি রাতে তাকে খুঁজে বেড়াতে দেখা যায় সেই আততায়ীদের। সাদারল্যান্ডের ডানরবিন দুর্গের চিলেকোঠা থেকে পড়ে মারা গিয়েছিলেন চতুর্দশ আর্লের কন্যা। সেই মেয়েটিকে এখন ঘুরতে দেখা যায় ওখানে। সন্ধি প্রস্তাব নিয়ে আসা এক প্রতিনিধি দলকে বর্ডারসের হার্মিটেস কেলায় বন্দি করে অভুক্ত রেখে মেরে ফেলেন সেখানকার অধিকর্তা।
সেই মৃত দূতদের এখনও দেখা যায় কেলার ধ্বংসাবশেষের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে।
ভুতুড়ে রাজপ্রাসাদ
শুধু দুর্গই নয়, ভূতের দেখা মেলে রাজপ্রাসাদেও। হ্যাম্পটন ফোর্ট প্রাসাদে দেখা দেন রাজা অষ্টম হেনরি, তার ছ’জন স্ত্রীকে নিয়ে। এদের মধ্যে অ্যান বোলিন এবং জেন সিমুরকে হত্যা করা হয়েছিল শিরচ্ছেদ করে। মুণ্ডহীন অবস্থাতেই ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় তাদের ছায়া শরীর।
তবে ভূতের সংখ্যায় সবকিছুকে ছাড়িয়ে গিয়েছে টাওয়ার অফ লন্ডন। অ্যান বোলিনের আত্মা নাকি উদয় হয় এখানেও। সেই সঙ্গে দেখা মেলে টমাস বেকেট, স্যার ওয়াল্টার র্যালে, লেডি জেন গ্রে’র ভূতের। সলিসবারির অষ্টম কাউন্টসের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছিল এখানেই। সেই ঘটনা রাতে এখনও দেখা যায় এখানে।
এক ভলুককেও নাকি দেখা গিয়েছে টাওয়ারের সিঁড়ি দিয়ে নামতে। রাতের পাহারাদার সেই ভলুককে বন্দুকের বেয়নেট দিয়ে আঘাত করলে, তার ছায়া শরীর ভেদ করে যায় বেয়নেট এবং সঙ্গে সঙ্গে অদৃশ্য হয়ে যায় সেই ভলুকও। উইনচেস্টার ম্যানসনের বন্ধ রান্নাঘর থেকে আজও নাকি ভেসে আসে খাবারের গন্ধ, বন্ধ ব- রুমের ভেতরে বসে কেউ যেন অর্গান বাজায়। পাওয়া যায় মানুষের হেঁটে-চলে বেড়ানো আর নিশ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ।
সূত্র
আরো ভূত
সাদা বাড়ি কালো ভূত
ভূতফুল
কিছু চীনা ভূত
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।