রমজান মাসের শেষের দিক। ঈদ আসি আসি করছে। ছোট্ট শহরটির দোকানপাটে উপচে পড়া ভিড়। তবে রাত দুটোর মধ্যে কেনাবেচা মোটামুটি শেষ হয়ে যায়। সে রাতে দোকানিরা ঝাঁপি বন্ধ করে বাড়ি ফেরার আয়োজনে ব্যস্ত।
শহরের নামকরা শাড়ির দোকান ‘রূপসী শাড়িঘর’-এর মালিক চান মিয়ারও কাজ প্রায় শেষ। কর্মচারী দুজনকে বিদায় করে, হিসাবের খাতা বন্ধ করল চান মিয়া। উঠতে গিয়ে আবার বসে পড়ল সে—সামনে দাঁড়িয়ে এক ভদ্রমহিলা। সুন্দরী। বিস্মিত হলেও নিজেকে সামলে নিল চান মিয়া: ‘দেখুন, আজ তো দোকান বন্ধ করে দিচ্ছি, আপনি বরং কাল আসুন।
’ মহিলার বাঁকা ভুরু সামান্য কুঁচকে গেল। নীল পাথরের মতো স্থির দুটো সুরমা টানা চোখে নিমেষের জন্য ক্রোধ ঝলসে উঠল। কোনো কথা না বলে তর্জনী তুলে ওপরের তাকের একটি দামি শাড়ির প্যাকেট দেখাল মহিলা। কাঁচা সোনাবরণ চম্পাকলি আঙুলে আংটি ভীষণভাবে ঝলমল করছে। কেমন যেন ভয় ভয় করছে চান মিয়ার।
রাস্তার দিকে তাকাল সে। জনশূন্য আবছা আঁধারি পথ। ঘামছে চান মিয়া। হঠাৎ মনে পড়ল, এই মহিলাই তো এসেছিল গতকাল। ১০ হাজার টাকার নীল শাড়িটির বায়না ধরেছিল সঙ্গে থাকা স্বামীর কাছে।
সম্ভবত স্বামী রাজি না হওয়ায় দুজনই একসময় দোকান থেকে বেরিয়ে যায়। ক্রেতার ভিড়ে ওদের দিকে খেয়াল করার ফুরসত ছিল না তার। বমিভাব হচ্ছে চান মিয়ার, ঘাম বেড়ে যাচ্ছে—কানে আসছে আজকের সকালের ক্রেতাদের ভিড়ের মাঝে কিছু কথা, ‘আরে মিয়া আজকের কাগজ পড়েননি? ওই যে এক সুন্দরী মহিলা গতরাতে আত্মহত্যা করেছে?’ কেন? কেন? আরে স্বামী বেচারা ১০ হাজার টাকা দামের শাড়ি কিনে দিতে না পারায়—তাই বলে আত্মহত্যা?।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।