^^^^^^^^^
রনিদের পুকুর ঘাটে আড্ডাটা জমে উঠেছে অমনি নারকেল গাছে ঝুলানো ৬০ ওয়াটের বাল্বটা নিভে গেল, লোড সেডিং। অবশ্য বৈশাখের এমন দিনে কাপ্তাই লেকের পানির স্তর নেমে যাওয়ার অজুহাতে প্রায় প্রতিদিনিই এক দেড় ঘন্টা করে লোড সেডিং হচ্ছে। আজ তেমন গরম নাই, আকাশটাও মেঘলা। রাতের দিকে ঝড়ো বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতক্ষন ধরে প্রেম বিষয়ক গল্প হলেও পাজি রাসেল এই অন্ধকারে গল্পের ট্র্যাক চেন্জ করে নেয়।
--------------------------------------------------------------------------------
সেদিন আকাশে এক বিন্দু জোসনা বা একটাও নক্ষত্র দেখা যায়নি, তার উপরে আকাশটা বিশ্রিভাবে মেঘে ঢাকা ছিল। শুধু দুর পাহাড়ে টর্চের আলোর মত বিদ্যুৎ চমকানোর আলো দেখা যাচ্ছিল, আর গুড়ু গুড়ু মেঘের আওয়াজ। ক্রমেই মেঘের গর্জনটা কাছে আসছিল আর বিদ্যুৎ চমকানোর আলোটাও স্পস্ট হচ্ছিল। আড্ডাটা সেদিন বেশি দীর্ঘ হয়ে গিয়েছিল, এমন অন্ধকারে একা আসতে হবে সেটা তখন মনে ছিলনা, মনে থাকলেই বা কি হতো, এমন ভুতুড়ে গল্পের আসর ছেড়ে একা বেরুনোর মত শাহস করতে পারছিলাম না। অন্ধকারে গগনের টিলার পাশ দিয়ে নিশ্বাস বন্ধ করে হেঁটে আসছিলাম আর মনে মনে দোয়া ইউনুস পড়ছিলাম.......
--------------------------------------------------------------------------------
পাজি মোটুটা শুরু করে- সেদিন কি হয়েছিল জানিস? গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাজার থেকে ফেরার সময় যখন ছড়াটার ওখানে আসি ঠিক তখন...... ছড়া মানে ঐ যে, গগনের টিলা আর নাথদের চিতা খোলার মাঝের ছড়াটা।
ওখানে এসেই আমার চোখ যায় পুলের নিচে কি যেন নড়ছে। সাইকেল রেখে পুলের পাশ দিয়ে যখন একটু নিচে নামি দেখি নাথ বাড়ির পারু, সাদা শাড়ি আর খোলা চুলে দাঁড়িয়ে আছে শুকনা ছড়ার মাঝে। চিৎকার করে ডেকে উঠি- এই পারু, সন্ধ্যায় তুই এখানে কি করছিস? ও আমার দিকে একবার মুখ ঘুরিয়ে আবার হেঁটে চলেছে ছড়া ধরে, ছড়ার পার দিয়ে আমিও তার পিছু পিছু হাঁটছি। হঠাৎ আমার চোখ যায় তার পায়ের দিকে, দেখি তার পা গুলো মাটি থেকে এক হাতের মত উপরে, তখনি মনে পড়ে পারুতো চার মাস আগে ক্যান্সারে মারা যায়। পিছু ফিরে মরিস গ্রিনের মত স্প্রিন্ট দৌড় লাগাই, পুলের উপরে সাইকেল ছিল বলে সেদিন রক্ষা হয়েছিল, জানিস তো লোহা কে ভুতরা ভয় পায়।
আর্মস্ট্রংয়ের মত জোরে সাইকেল চালিয়ে সোজা ঘরে পৌঁছি.......
-----------------------------------------------------------------------------
পুলটা কোন মতে পেরিয়ে আসি সেদিন, না পারু আমাকে ভয় দেখাতে আসেনি। তবে আমার পুরো শরীরে তখন ভয়ে কাঁটা দিয়েছিল। ভুতের ভয় আমাকে এত বেশি পেয়েছিল যে অন্ধকার পথ আর আসন্ন ঝড় কোনটাই আমার কাছে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছিলনা। ততক্ষণে টিপটিপ বৃষ্টি পড়া শুরু হয়ে গেছে, বিদ্যুতের চমক অল্প হলেও রাস্তা দেখাচ্ছিল। আমিও বাড়ির কাছাকাছি বড়পুকুরটার পাশের রাস্তায় চলে আসছিলাম, ঠিক ঐ মুহুর্তে দমকা হাওয়ার সাথে পুকুর পাড়ের বাঁশ ঝাড়ের সব বাঁশ আমার পথ আগলে দাঁড়ায়, আর বিকট শব্দে কাছাকাছি কোথাও বাজ পড়ে।
পরক্ষনে দেখি শন শন শব্দে বাঁশ ঝাড় সব আগের জায়গায় ফিরে গেছে। আমি জান হাতে নিয়ে দৌঁড় দিয়ে ঘরের দরজায় পৌঁছে চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যাই.......
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।