একটি দেশের সকল ধর্মের সকল বর্ণের, ধনী ও গরীব প্রতিটি নাগরিকের পবিত্র স্থান সেই দেশের বিচারালয়। মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই অপরাধপ্রবণ, তাই স্বাভাবিক কারণেই সমাজকে সুস্থ এবং সুষ্ঠু গন্ডিতে ধরে রাখার জন্য আইন-আদালতের প্রয়োজন। এই আইন-আদালতের কর্ণধার হলেন বিচারক। এই বিচারালয়ে বিচারকের কাছেই মানুষ চায় সব অবিচারের প্রতিকার। কিন্তু, সমাজে অন্যায় ঘটলেই বিচারের প্রশ্ন আসে।
নির্মোহ ও কঠোর বিচারালয় সেই অন্যায়ের অবকাশকেই সমাজের অতি ক্ষুদ্র বৃত্তে বন্দি করে দেয়। তাই, একটি দেশের বিচারালয়ের গুরুত্ব ও দায়িত্ব অপরিসীম।
একজন বিচারপ্রার্থী কি বিচার পাবেন তা বাস্তবে সম্পূর্ণটাই নির্ভর করে বিচারকের উপর, বিচারক যেই রায় দিবেন তাই মান্য। বিচারক যদি জ্ঞানে ও আদর্শে মহান ও অবিচল না হন - কোন আইন, কোন যুক্তি সুবিচার আনবে না। আমাদের বিচারালয়গুলিতে অবিচারের পাতাভরা নজির আমরা প্রতিনিয়ত দেখছি।
আবার বিচারকের উপর মানুষের কতটুকু আস্থা আছে তার উপর নির্ভর করে মানুষ প্রতিকারের জন্য বিচারালয়ের দ্বারস্থ হবে কি না। বিচারালয়ের উপর মানুষের এই আস্থায় যখন চিড় ধরে তখন সমাজে নিয়ম-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে জ্যামিতিক হারে। দেশ পরিনত হয় অপরাধের স্বর্গরাজ্যে, সন্ত্রাস বাসা বাঁধে সমাজের প্রতিটি আনাচে-কানাচে। এমন পরিস্থিতি কোন স্বদেশ প্রেমিক সুস্থ মানুষের কাম্য হতে পারে না।
দেশের এই ভয়ংকর অবস্থায় লাভবান হয় হাতেগোনা কিছু লোক যারা নিজ অপকর্মের জন্য বিচারের সন্মুখীন হয় না ভেঙ্গেপড়া বিচার ব্যবস্থার কারণে।
অনেক সময়েই সরকারের ও প্রশাসনের ক্ষমতাধরগন পরিকল্পিতভাবে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন তাদের গনবিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য, নিজের স্বার্থে দেশের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে। এসব দেশের মানুষের দুর্ভাগ্য এই যে, এই অল্প কয়েক জনের হাতেই থাকে আবার সেই দেশের বিচার-ব্যবস্থাকে সকল দুষ্ট প্রভাব, অনিয়ম ও অনাচার থেকে রক্ষা করার। এমন করুণ প্রহসন দুর্ভাগা দেশের ‘ললাটলিখন’ বলে চালাবার প্রয়াসও এই সকল সার্থান্ধদের প্রচারমন্ত্র যা ভুক্তভোগী জনতাকে বিভ্রান্ত করে।
কিন্তু, বাংলাদেশ, হায়রে আমার বাংলাদেশ! সুনীতি এবং সভ্যতার করুণ সমাধি যেন এখানেই হলো, এবং বার বার। এই দেশে ‘খুনের আসামীকে’ও নিয়োগ দেয়া হয় সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকের আসন অলংকৃত করার জন্য।
সর্বোচ্চতেই যদি এই অবস্থা, তাহলে নীচের দিকে যে কি হচ্ছে তা অনুমান করা কি খুব কঠিন! কোন্ সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ স্বদেশের সর্বনাশের এমন চিন্তাটিও করতে পারে, ভেবে পাই না! অথচ, তাই তো হচ্ছে আমাদের প্রাণ-প্রিয় বাংলাদেশে। এই অস্বাভিক আচরণের প্রতিবাদের ভাষা আমি খুঁজে পাই না!
শুধু ভাবি, এ লজ্জা আমি কি করে ঢাকি?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।