Life is a Target.... Life is a Mission...
বিশ্বের জনপ্রিয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান 'গুগল'-এর ২০লাখ ডলার মূল্যমানের পুরস্কার পেয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমানের 'খান একাডেমি'। এক লাখ চুয়ান্ন হাজার প্রকল্পের মধ্য থেকে শিক্খাষা বিভাগে সেরা নির্বাচিত হয়েছে খান একাডেমির বিনা মূল্যে শিক্ষামূলক অনলাইন ভিডিও টিউটোরিয়াল। এই অনলাইন ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষার্থী বিনা মূল্যে শিক্ষামূলক বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ভিডিও চিত্র দেখে জানতে পারবে, শিখতে পারবে। ২০০৪ সালের দিকে সালমান বিয়ের পর মামাতো বোন নাদিয়াকে অনলাইনে অঙ্ক শেখাতে গিয়ে গণিতের সমস্যাগুলোর সমাধান নিয়ে ভিডিও তৈরি করে এগুলো দিয়ে দিতেন ইউটিউবে। আর এরই মধ্য দিয়ে সালমান তৈরি করে ফেলেন শিক্ষামূলক বিষয় সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার এক অভিনব পদ্ধতি।
আর তাই সালমানের এ সৃষ্টিশীল কাজে মুগ্ধ হয়েছেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী বিল গেটস। খুব আগ্রহ নিয়ে তিনি ও তাঁর এগারো বছরের সন্তান রবি নিয়ম করে নিয়মিত ইউটিউবে বসে যান গণিত শিখতে।
গত এক মাসে খান একাডেমির পোর্টালে পাঁচ লাখ ব্যবহারকারী নিবন্ধন করেছে এবং এখানে প্রায় দুই কোটি ৪০ লাখ বার ভিডিও দেখা হয়েছে। এই ভিডিওগুলো বিভিন্ন ভাষাভাষি গোষ্ঠীর মানুষদের কাছে সহজভাবে ও বোধগম্য করে পৌছে দেয়ার জন্য এগুলো বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করার কাজ চলছে। আর অনুবাদের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা অগ্রাধিকার পাবে।
প্রথম ধাপে অন্তত এক হাজার ভিডিও বাংলায় অনুবাদ করা হবে। এতে প্রায দুই বছর সময় লাগতে পারে। এই ভিডিওগুলো বাংরাদেশ ও পশ্চিবঙ্গের ৩০ কোটিরও বেশি বাঙালি অনলাইন ও অফলাইন দুই মাধ্যমে কাজে লাগাতে পারবে। এগুলো মধ্যম পর্যায়ের স্কুল শিক্ষার্থীদের বাড়তি শিক্ষা উপকরণ হিসেবে যেমন কাজে আসবে তেমনি স্কুলে না যাওয়া শিশুদের প্রথম পাঠ হিসেবেও ব্যাপকভাবে কাজে আসবে।
সালমান খানের দাদাবাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে।
বাবা ডা. ফখরুল আমিন খান পেশায় ছিলেন ডাক্তার এবং দাদা আব্দুল ওয়াহাব ছিলেন ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার। তারপর সালমানের বাবা পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানেই ১৯৭৭ সালে লুইজিয়ানার নিউ অর্লিয়ন্স শহরে সালমান জন্মগ্রহণ করেন, সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। মেধাবী সালমান ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব আইটি (এম আইটি) থেকে গণিত,তড়িৎকৌশল ও কম্পিউটার- এ তিন বিষয়ের ওপর স্নাতক করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তড়িৎকৌশলের ওপর স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন সালমান।
একনজরে গুগল
প্রতিটি মানুষেরই রয়েছে কোনো না কোনো স্বপ্ন, আশা। আর তাই মানুষের মন হাজারো স্বপ্ন নিয়ে আশায় বুক বাঁধে। অতঃপর আশার ভেলায় ভাসতে থাকে এ মন। আর ভাসতে ভাসতেই খোঁজ পায় সাফল্যের তীর। এভাবেই বিখ্যাত আর গুণী মানুষের কল্যাণে, তাঁদের সাফল্যে এগিয়ে যায় বিশ্ব, এগিয়ে যায় পৃথিবী।
সৃষ্টিশীল ও গুণী মানুষদের অমর কীর্তি আর চিন্তাভাবনাগু্লো খুঁজে বের করে বিশ্বের মানুষের সামনে তুলে আনার প্রয়াসেই এগিয়ে যাচ্ছে গুগল। আর এজন্যই প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা করে 'প্রজেক্ট টেন টু দ্য হানড্রেড' নামে ১০ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার। ২০০৮ সালে গুগল- এর দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া হয় এ ঘোষণা। এতে ১৭০টির বেশি দেশ থেকে জমা পড়ে এক লাখ চুয়ান্ন হাজার আবেদন। দুই বছরের যাচাই-বাছাই শেষে প্রথমে ১৬টি পরিকল্পনা নির্বাচন ও তার তালিকা প্রস্তুত করে এ প্রতিষ্ঠানটি।
পরে চূড়ান্তভাবে বেছে নেয়া হয় পাঁচটিকে। নির্বাচিত প্রকল্পগুলোকে আরও বিস্তৃত ও সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থসহায়তা। আর এরই অংশ হিসেবে শিক্ষা বিভাগে সেরা প্রকল্প নির্বাচিত হয়েছে সালমানের খান একাডেমির বিনামূল্যে শিক্ষামূলক অনলাইন ভিডিও টিউটোরিয়াল। এজন্যই খান একাডেমিকে আর সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ২০ লাখ ডলার পুরস্কার দিয়েছে গুগল।
তথ্যসূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ৬ অক্টোবর ২০১০ ইং
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।