লোভ লালসার জন্য নয় বরং লোভ লালসার বিপরিতে নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই
রাজধানীর পুরান ঢাকার বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম থেকে বিপজ্জনক ২০ ধরনের দাহ্য পদার্থ সরানোর জন্য সরকারের বেঁধে দেওয়া দ্বিতীয় দফার সময়সীমাও শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, জায়গার অভাবে সরকারের নির্দেশ মানতে পারেননি তাদের অনেকে।
ওদিকে সরকার বলছে, এজন্য আর সময় বাড়ানো হবে না। ৩০ সেপ্টেম্বরের (বৃহস্পতিবার) পর থেকে নির্দেশ আমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওই ২০ ধরনের দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ হলো- অ্যাসিটোন, বিউটাইল অ্যাসিটেট, আইসো-বিউটানল, ডিএল-২৫৭৫, ইথাইল অ্যাসিটেট, ইথানল, হেভী অ্যারোমেটিক, আইসো-প্রোপাইল অ্যালকোহল, মিথানল, বিউটানোন, মিথাইল আইসো বিউটাইল কিটোন, এন-প্রোপাইল অ্যাসিটেট, প্রোপাইল অ্যালকোহল, প্রোপাইলিন গ্লাইকল, ফ্লেক্সো গ্রাভিওর, টলুইন, থিনার-বি, রিডিউসার, জাইলিন এবং ডাই অ্যাসিটোন অ্যালকোহল।
এসব রাসায়নিক পদার্থ গামেন্ট, টেক্সটাইল, উড পলিশ, ডায়িং এবং প্লাস্টিক শিল্পে ব্যবহার করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুরান ঢাকার নিমতলীর বি কে গাঙ্গুলী সড়ক, আগামাসি লেন, আগাসাদেক সড়কসহ অন্য কয়েকটি সড়কে অবস্থিত গুদাম ও দোকান থেকে ব্যবসায়ীরা এসব রাসায়নিক পদার্থ সরিয়ে নেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "নিমতলীর অগ্নিকাণ্ডের পর ব্যবসায়ীরা নানা সমস্যায় পড়েছেন। সরকার বলছে, রাসায়নিক পদার্থ সরিয়ে নিয়ে অন্যত্র ব্যবসা করতে। কিন্তু সব ব্যবসায়ীর তো অন্যত্র জায়গা নেই।
"তাই সরকার ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিলেও অনেক ব্যবাসায়ী দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ সরিয়ে নিতে পারেননি"
গত ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে আগুনে পুড়ে শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়। স্মরণকালের ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডের পর ওই এলাকা থেকে রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম থেকে দাহ্য পদার্থ সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নেয় সরকার।
এরপর ১৭ জুন শিল্প মন্ত্রণালয় ওইসব বিপজ্জনক দাহ্য পদার্থ সরিয়ে নিতে ব্যবসায়ীদের দুই মাস সময় বেঁধে দেয়।
ওই সময় শেষ হওয়ার পর গত ১৭ অগাস্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পুরান ঢাকার রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম থেকে ওইসব দাহ্য পদার্থ সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন শিল্পমন্ত্রী দীলিপ বড়?য়া।
শিল্পমন্ত্রী বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "ঢাকা জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া আছে ৩০ সেপ্টেম্বরের পর ২০ ধরনের দাহ্য পদার্থ কোনো ব্যবসায়ী রাখলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে।
"ব্যবসায়ীদের আর কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। সময়ও বাড়ানো হবে না। "
তিনি জানান, জেলা প্রশাসক তাকে জানিয়েছেন, কয়েকজন ব্যবসায়ী কিছু পদার্থ সরিয়ে নিলেও অন্যরা সরকারের নির্দেশ মানেননি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পেইন্টস ডাইস অ্যান্ড কেমিক্যাল মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুস সালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "প্রায় ৮০ শতাংশ ব্যবসায়ী ২০ ধরনের রাসায়নিক পদার্থ সরিয়ে নিয়েছে। যারা এখনো সরাতে পারেনি তারা দ্রুত সরিয়ে নেবে।
"
ওই সব পদার্থ সরিয়ে কোথায় রাখা হয়েছেѠজানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
আব্দুস সালাম বলেন, "এ শিল্পকে রক্ষা করতে হলে অন্যত্র জায়গা প্রয়োজন। সরকার ট্যানারি শিল্পের মতো এ শিল্পের জন্যও ঢাকার আশপাশে জায়গা ব্যবস্থা করে দিলে ব্যবসায়ীরা নিরাপদে ব্যবসা করতে পারবে। "
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আবু নাসের খান বুধবার বলেন, "তিন-চারদিন আগেও নিমতলী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ব্যবসায়ীরা গুদাম ও দোকান থেকে রাসায়নিক পদার্থ সরিয়ে নেয়নি। "
তিনি বলেন, "এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আতঙ্কের কারণে ওই এলাকা থেকে অনেকে বাসা পরিবর্তন করে চলে যাচ্ছে।
"
এ পরিস্থিতিতে সরকারের কঠোর তদারকির ওপর গুরুত্বারোপ করেন আবু নাসের খান।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।