আমি কিছু জানি না......
বাংলাদেশে জাতীয় ক্রিকেট দলের নতুন বোলিং কোচের নাম ইংল্যান্ডের ইয়ান পোন্ট। যার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ইংল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামার কোন রেকর্ডই নেই। অথচ এই পেস বোলারই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিচারে সেরা! বৃটিশ ফাস্ট বোলার ইয়ান পোন্ট ১৯৮২ থেকে ৮৮ পর্যন্ত ২৮টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন আর ‘এ’ দলের হয়ে ১৯৮১ থেকে ৯০
সাল পর্যন্ত মোট ২৬টি ম্যাচ খেলেছেন। অথচ এই বোলারই বিসিবি’র কর্মকর্তাদের কাছে অভিজ্ঞ ও সেরা। তাহলে কি বিসিবি যে সিদ্ধান্ত নেয় তাই সঠিক? এ প্রশ্ন করা যেতেই পারে।
বিসিবি’র কর্মকর্তারা যে সব সময়ই সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে তা তো নয়। বিসিবি’র মিডিয়া কমিটির প্রধান ও বোর্ড পরিচালক জালাল ইউনুসকে প্রশ্ন করা হয়, একজন বিদেশী ক্রিকেটার নিজ দেশের জাতীয় দলের হয়ে কখনোই মাঠে নামেননি, তিনি বাংলাদেশের জাতীয় দলের বোলারদের কোচিং করাবেন, মন্তব্য করুন। ’ প্রশ্ন শুনেই বেশ ক্ষেপে যান জালাল ইউনুস, তিনি জবাবে বলেন, কে বলেছে জাতীয় দলে খেললেই ভাল কোচ হওয়া যায়। বিশ্বের অনেক সেরা কোচ আছে যারা কখনোই জাতীয় দলে খেলেনি। ’ কিন্তু একটি জাতীয় দলের কোচের কমপক্ষে একটি লেভেলের যোগ্যতা তো থাকতে হবে? জালাল ইউনুস, কমপক্ষে বলতে কি বোঝাতে চাইছেন? কমপক্ষে বলতে জাতীয় দলের খেলার যোগ্যতাকেই বোঝাচ্ছি।
জালাল ইউনুস, না জাতীয় দলে খেলাটাই একজন ক্রিকেটারের মূল যোগ্যতা নয়। এই কোচের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে অনেক বড় বড় সাফল্য ও অভিজ্ঞতা আছে। সেসব দেখেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ইংল্যান্ড আর দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলে খেলেই সেরা হয়ে যাবে, এটা কে বলেছে? ইয়ান পোন্টের ক্রিকেট ক্যারিয়ার দেখুন। ’ একই কথা বলেন বিসিবি হেড অব ক্রিকেট অপারেশন, টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ও বোর্ড পরিচালক এনায়েত হোসেন সিরাজ। জাতীয় দলের হয়ে যে ক্রিকেটার একটি ম্যাচেও খেলেননি তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান বোলিং কোচ? এ প্রশ্নের জবাবে এনায়েত হোসেন সিরাজ বলেন, বিসিবি ভাল করে যাচাই করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ওনার অভিজ্ঞতা সেই কে বলেছে। ইয়ান অনেক বছর বোলিং কোচের দায়িত্বপালন করছে, জাতীয় দলে খেলেই ভাল কোচ হওয়া যায়, না খেললে হওয়া যায় না এটা কে বলেছে। আপনি কি ইয়ান পোন্টের ক্রিকেট ক্যারিয়ার দেখেছেন? দেখে তারপর কথা বলুন। ’ ইয়ান পোন্টের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে যা পাওয়া যায় তা হলো- ১৯৯০ সালে ইয়ান পোন্ট ইংল্যান্ডের এসেক্সে, নাটালে এবং নটিংহামসিরি ক্লাবের হয়ে পেস বোলার হিসাবে খেলেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই পেসার পরবর্তীতে কোচের দায়িত্বে ছিলেন, এছাড়াও আরও অনেকগুলো ক্লাবের কোচের দায়িত্ব পালন সম্পর্কে বিসিবি তাদের মিডিয়া রিলিজে উল্লেখ করে।
এই বৃটিশ পেসাররা এসেক্সে বোলিং কোচেরও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের আগে ২ বছর ইয়ান নেদারল্যান্ডের ক্রিকেট দলের বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপরই ইয়ান দক্ষিণ আফ্রিকায় ইন্টারন্যাশনাল প্রো ক্যাম্পে কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ১৯৮৭ সালে এই ক্রিকেটার দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে বেসবল লীগে খেলেছেন, তখন এই পেসারের বোলিং গতি ছিল ঘণ্টায় ১শ’। একমাত্র নেদারল্যান্ডের জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হওয়া ছাড়া আর কোন উল্লেখ করার মতো তথ্য ইয়ান পোন্টের ক্যারিয়ারে পাওয়া যায়নি।
অথচ বিসিবি বড়াই করেই বলছে প্রোফাইল দেখুন। নতুন বোলিং কোচ ইয়ান পোন্ট ১৬ই সেপ্টেম্বর জাতীয় দলের অনুশীলনে যোগ দেবেন। নিউজিল্যান্ড সফর থেকে শুরু করে ২০১১ বিশ্বকাপ ক্রিকেট আসর পর্যন্ত এই বোলিং কোচের সঙ্গে বিসিবি’র চুক্তি হয়েছে। এরপর উভয় পক্ষ চাইলেই চুক্তি নবায়ন হতে পারে বলে বিসিবি জানিয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।