আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মায়ানমারে (গুধহসধৎ/ ইঁৎসধ র্বামা) মুসলমান নির্যাতনের ঐতিহাসিক চিত্র

......সতয যে কঠিন,কঠিনেরে ভালবাসিলাম (আমার স্ত্রীর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি,আমার এ লেখালেখির নেশাকে প্রশয় দেয়ার জনয) মায়ানমারে (গুধহসধৎ/ ইঁৎসধ র্বামা) মুসলমান নির্যাতনের ঐতিহাসিক চিত্র মায়ানমারের অধিকাংশ জনগণই বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। মায়ানমারের মুসলমান সংখ্যালঘুরা হচ্ছে মূলত রোহিঙ্গা স¤প্রদায়,ভারত-বাংলাদেশ,চীন(প্রধানত ইউয়ান প্রদেশের),এবং আরব থেকে আগত মুসলমানদের উত্তরসূরিরা। ভারতীয় মুসলমানেরা র্বামায়এসেছিল ব্রিটিশ শাসনামলে চাকুরি ও ব্যবসার জন্য। স্বাধীনতার পর অনেক মুসলমানইএখানে ব্যবসা ও রাজনীতিতে প্রভাব অর্জন করে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রইট ওয়াচের মতে,বার্মার সরকার সে সকল রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষটি অস্বীকার করে যারা ১৮২৩ সালের পূর্বে অর্থাৎ আরাকান রাজ্যে ইংরেজদের দখলদারিত্বে পূর্বে এখানে তাদের পূর্ব পুরুষদের বসতিস্থাপনের বিষটিকে প্রমাণিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।

বার্মার ইতিহাসে মুসলমানদের স্থান বার্মার ইতিহাসে প্রথম মুসলমান হিসেবে যার নাম পাওয়া যায় সে হল বাইআট উই,মং রাজার শাসনামলে(সিরকার একজন থাটন রাজা,১০৫০ খ্রিষ্টাব্দে গড়হ, ধ ঞযধঃড়হ করহম, পরৎপধ ১০৫০ অউ )। শউই বাইন ভাতৃদ্বয়ের (ঝযবি ইুরহ ) মৃত্যু বাইআট উই-এর ইুধঃ ডর'ং ভাই বাইআট তা-এর ইুধঃ ঞধ দু’ছেলে,যারা শউই বাইন ভাতৃদ্বয় নামে পরিচিত ছিল;এদের শিশু অবস্থায় হত্যা করা হয় কেননাএরা তাদের ধর্মবিশ্বাসের জন্য রাজারহুকুম অমান্য করেছিল। গ্লাস প্যালেস ক্রনিক্যালে উল্লেখ রয়েছে যে, মুসলমানগণ তৎকালীন রাজাকে বিশ্বাস করত না। নাগা ইয়ামান কান/খান-এর (ঘমধ ণধসধহ কধহ )গুপ্তহত্যা রহমান খান ওরফে নাগা ইয়ামান কানকে রাজদ্রোহের অভিযোগে এবং ধর্মীয় কারণে গুপ্তঘাতকের মাধ্যমে রাজা কিয়ানসিথা কুধহংরঃঃযধ হত্যা করে। আরাকানের নরহত্যা আরাকানে মুসলিম হত্যার আর একটি কারণ সম্ভবত লোভের রাজনীতি যা কোন ধর্মীয় ও সা¤প্রদায়িক বিষয় নয়।

মুঘল সম্রাট শাহজাহানের দ্বিতীয় পুত্র শাহ সুজা তার ভ্রাতা আওরঙ্গজেবের কাছে পরাজিত হয়ে তার পরিবার ও যোদ্ধাদের নিয়ে আরাকানে পালিয়ে যায়। আরাকান রাজ্যের জলদস্যু রাজা সানদাথুদামা ঝধহফধঃযঁফধসধ (১৬৫২-১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দে), যিনি চট্টগ্রাম ও আরাকান রাজ্যে জলদস্যুবৃত্তি করত, তাকে তার রাজ্যে থাকতে অনুমতি দেয়। শাহ সুজা তার কাছে স্বর্ণ ও রৌপ্র্য মুদ্রার বিনিময়ে জাহাজ কিনে পবিএ মক্কায় যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আরাকান রাজ লোভাতুর হয়ে ওঠেন ও তার কন্যার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। অবশেষে এক ব্যর্থ বিদ্রোহের মাধ্যমে সুলতান ও তার অধিকাংশ সঙগীগন মারা যান।

কোন কোন সূত্র মতে শাহ সুজা এই হত্যযজ্ঞ থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। বাইনটানাউঙ্গ রাজার(১৫৫০-১৫৮৯) ইধুরহঃহধঁহম অধীনস্ত মুসলিমগণ ১৫৫৯ সালে ব্যাগো(পিগু) ইধমড় (চবমঁ) জয় করার পর বাইনটানাউঙ্গ রাজা মুসলমানদের ছাগল ও মুরগী যা আল্লাহর নামে জবেহ করা হয় তা খাওয়ার উপর নিষেধজ্ঞা আরোপ করে। তিনি তার রাজ্যে ঈদুল আযহা ও গবাদি পশু কুরবানি নিষিদ্ধ করেন। আলুঙ্গপায়া রাজার (১৭৫২-১৭৬০) অষধঁহমঢ়ধুধ কর্তৃতাধীন মুসলমানগণ আলুঙ্গপায়া রাজা মুসলমানদের গবাদি পশুর হালাল খাদ্য গ্রহণে বিরত রাখেন। বোদাওপায়া(১৭৪২-১৮১৯ সাল) ইড়ফধঢ়িধুধ রাজা ইনি চারজন র্শীষস্থানীয় মুসলিম ইমামকে মাইদু গুবফঁ থেকে গেপ্তার ও পরে তার রাজধানী আভা-তে আধ হত্যা করেন।

কারণ তারা শুকরের মাংস খেতে অস্বীকার করেছিল। মাইদর মুসলিম ও বার্মীয় মুসলমানদের বর্ণনা মতে, উনাদেরকে হত্যা করার পর সাত দিন পর্যন্ত সারাদিন অন্ধকারাছন্ন অবস্থা বিরাজমান ছিল। পরে রাজাএ ঘটনার জন্য ক্ষমা প্রর্থনা করেন এবং তাদেরকে সাধু/সাধক হিসাবে ¯ী^কৃতি দেন। বার্মায় ব্রিটিশ শাসনকালে মুসলিম ও ভারতীয় বিরোধী দাঙ্গা ইংরেজদের সরকারি নথিপত্রে একজন প্রত্যক্ষদর্শী সরকারি বিচারপতির বরাত দিয়ে এ ধরনের দাঙ্গার কথা উল্লেখ রয়েছে (সাইমন কমিশন ১৯১৯)। র্বামায় মুসলমান ও ভারতীয়বিরোধী অনুভূতির শুরু হয় প্রথম মহাযুদ্ধের পর,ব্রিটিশ শাসনকালে।

১৯২১ সাল পযর্ন্ত সেখানে প্রায় ৫ লক্ষ মুসলমান বাস করত,এদের অর্ধেকেরও বেশি ছিল ভারতীয়। যদিও বর্মীয় মুসলমানগণ ভারতীয় মুসলমান ও ভারতীয়-বর্মীয় মুসলমানদের থেকে আলাদা ছিল,কিন্তু সেখানকার বৌদ্ধরা এদের একইরকমভাবে বিবেচনা করেছিল, এমনকি ভারত থেকে আগত হিন্দু জনগোষ্ঠীকেওএরা শত্র“ ভেবেছিল এবংএদেরকে তার কালা কধষধ নামে ডাকত। এই দাঙ্গার শুরুর কারণগুলো ছিল: ১.মুঘলদের সাম্রাজ্য জয়ের সময় বৌদ্ধ ও হিন্দুদের উপর র্নিযাতন ও জোর করে ধর্মাšতরিতকরণ। ২.স্থানান্তরিত জনগোষ্ঠীর নিম্ন জীবনযাত্রার মান। ৩. স¤প্রতি স্থানান্তরিত জনগোষ্ঠীর কঠিন, ঝুঁিকপূর্ণ ও নিচু স্তরের কাজ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠা।

৪. ভারতীয়দের কর্তৃক বার্মার ভূমি দখল বিশেষত: চিট্টিয়ারস ঈযরঃঃরবৎং । ৫. ভারতীয়দের কর্তৃক বার্মার অধিকাংশ সরকারি চাকুরির কোটা পূরণ ও তাদের একচেটিয়া আধিপত্য,যেখানে বর্মীয়দের অংশগ্রহণ ছিল নগণ্য। ৬.উভয় শ্রেণীর পেশাগত প্রতিদ্বন্দীতা। ৭. ১৯৩০এর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এ অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জনের প্রতিযোগিতাকে আরো বেগবান করে তোলে। ১৯৩০এর ব্রিটিশ শাসনাধীন র্বামায় ভারতীয় বিরোধী দাঙ্গা সমস্যাটির সূত্রপাত হয়েছিল ইয়াঙ্গুন বন্দরে যেখানে স্টেভেডোরস নামক একটি ব্রিটিশ কোম্পানি শতাধিক ভারতীয় শ্রমিককে কাজে নিয়োজিত করেছিল।

কোন একটি কারণে ভারতীয় শ্রমিকরা ধর্মঘট শুরু করে যার প্রেক্ষিতে তাদের ধর্মঘট বানচাল করার জন্য কোম্পানিটি বর্মীয় শ্রমিকদের কাজে নিয়োগ দেয়। ফলশ্র“তিতে ভারতীয়রা ধর্মঘট প্র্যতাহার করতে বাধ্য হয়। পরদিন সকালে বর্মীয় শ্রমিকরা কাজে গেলে তাদেরকে জানানো হয় যে, কোম্পানির তাদের কোন প্রয়োজন নেই। এতে করে বর্মীয় শ্রমিকেরা বিক্ষুদ্ধ ও মারমুখী হয়ে ভারতীয়দের প্রতি আক্রমণ শুরু করে ; ভারতীয়রাও পাল্টা জবাব দেয়। দ্রুতই এটা ভারতীয়বিরোধী এবং ক্রমেই মুসলমানবিরোধী দাঙ্গায় রূপ নেয়।

দাঙ্গার প্রথম অর্ধ ঘন্টার মধ্যেই কমপক্ষে দুইশত ভারতীয়কে হত্যা করে নদীতে নিক্ষেপ করা হয়। সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে ও ৫ জনের অধিক লোক একত্রে চলাচলের উপর নিষেধজ্ঞা আরোপ করে। এটা ছিল ২৬ মে এর কালো দিবস। দু’দিনের মধ্যে দাঙ্গাটি সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রকৃত হত্যা ও ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতার পরিমাণ এখনও কেউ বলতে পারে না। ১৯৩৮-এর মুসলমানবিরোধী দাঙ্গা এটিও ইংরেজ শাসনামলেই হয়েছিল।

প্রকৃতপক্ষে ব্রিটিশবিরোধী হলেও বর্মীয়রা প্রকাশ্যে মুসলমান হত্যায় দ্বিধা করেনি। স্থানীয় মিডিয়া ও পএ-পএিকাগুলোয় জাতীয়তাবাদী ভাবধারা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ও জাতীয়তাবাদী চেতনার ছদ্মাবরণে তা মুসলিম উচ্ছেদের কর্মকান্ডে পর্যবসিত হয়। ব্রিট্রিশরা পূর্ণ শক্তি দিয়েএটি প্রতিহত করার চেষ্টা চালিয়েছিল। “র্বামা কেবল বর্মীয়দের” আন্দোলন র্বামা কেবল বর্মীয়দের নামক নতুন আন্দোলন ও প্রচরণা শুরু হয় এবং বর্মীয়রা মুসলমানদের এলাকা র্সাতি/সুরতি ঝঁৎঃর বাজার অভিমুখে যাএাশুরু করে। ভারতীয় পুলিশেরা যখন এই সহিংস আন্দোলনকে ভেঙ্গে দেয় তখন তিনজন বৌদ্ধ ভিক্ষু আহত হয়।

র্বামার সংবাদপত্রগুলো এইসব ছবিকে নানা ভাবে ফলাও করে প্রচার করে যা নতুন করে দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটায়। মুসলমানদের সম্পদ,দোকানপাট,ঘর-বাড়ি এবং মসজিদগুলেতে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুন্ঠন চালানো হয়। তারা মুসলমানদের মারধর ও হত্যা করে। এটা সমগ্র র্বামায় ছড়িয়ে পড়ে এবং ১১৩টি মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানা যায়। ব্রিটিশ তদন্ত কমিটি ১৯৩৮ তদন্ত কমিটির রির্পোটে এ ঘটনার জন্য সরকারের প্রতি বর্মীয়দের অসন্তুষ্টি,ও তাদের সামাজিক-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক খারাপ অবস্থাকে দায়ী করা হয়।

পাশাপাশি সংবাদপত্রের দায়িত্বহীনতাকে চিহ্নিত করা হয়। ১৯১৯ সালের সাইমন কমিশন প্রণীত র্বামায় দ্বৈত শাসনের প্রভাব অনুন্ধানের রির্পোটে, এখানে মুসলমানদের জন্য আইনসভায় সংরক্ষিত আসনের সুপারিশ করা হয়। এ রির্পোটে সংখ্যালঘু সকল স¤প্রদায়ের জন্য সমান অধিকারের বিষয়টিকে গুরুত্ব প্রদান করা হয়। এ রির্পোটে র্বামায় ভারত থেকে আলাদা তথা স্বতন্ত্র শাসনের বা সরকারের জন্য প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার ১৯৩০ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত গোল টেবিল বৈঠকে ভারত থেকে বিছিন্ন হওয়ার বিষয়টিকে ছাড়া অন্য কোন প্রস্তাবই মেনে নেয়নি।

ইউ নু ট ঘঁ শাসন আমলে মুসলমানেরা এএফপিএফএল কর্তৃক র্বামা মুসলিম কংগ্রেস বিতাড়ন বিএমসি(র্বামা মুসলিম কংগ্রেস) ইগঈ ও জেনারেল অং সানএবং ইউ নু ট ঘঁ এর দল অ্যান্টি-ফ্যাসিষ্ট পিপলস ফ্রিডম র্পাটি বা এএফপিএফএল অঋচঋখ মোটামুটি সমসাময়িকালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে গঠিত হয়। ১৯৪৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাইনমানায় চুরহসধহধ ইউ রাজাক ট জধুধশ বিএমসির প্রেসিডেন্ট র্নিবাচিত হনএবং তিনি এএফপিএফএল-এ যোগদান করার সিদ্ধান্ত নেন। ইউ রাজাক এএফপিএফএল-এর মানডালায় ডিসট্রিক্ট- এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে সরকার তাকে সংবিধানিক কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে গ্রহণ করেন। তার বৌদ্ধদের সাথে ভাল সর্ম্পক ছিল ও তিনি পালি ভাষা ,যা বৌদ্ধ ধর্ম গ্রন্থের আদি ভাষা,ভাল জানতেন।

তিনি জেনারেল অং সান এবহবৎধষ অঁহম ঝধহ এর সরকারএর শিক্ষা ও পরিকল্পনা মšী¿ ছিলেন এবং তার সাথেই গুপ্তঘাকত কর্তৃক নিহত হন। তিনি এএফপিএফএল এর ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি বিরোধী নীতির সর্মথক ছিলেন। ইউ রাজাকএবং তার অল্প কয়েকজন সংগী মুসলিম সংখ্যালঘুদের আলাদা কিছু নির্দিষ্ট সাংবিধানিক অধিকার ও নিশ্চয়তার জন্য যে সংগ্রাম তার বিরোধিতা করেছিলেন। যদিও তিনি একজন খ্যাতনামা নেতা হিেিসবে বর্মীয় মুসলমানদের সংগঠিত করেছিলেন তবুও তাকে র্বামার স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনাকালের ইতিহাসে স্থান দেওয়া হয়। ইউ রাশিদএবং খ্যাতনামা ইউ খিন মং লাত ট জধংপযরফ ধহফ ট কযরহ গধঁহম খধঃ দেশ ও পার্টির জন্য মুসলমানদের অধিকার ও স্বার্থ বির্সজনে নীতি অনুসরণ করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী ইউ নু স্বাধীনতার কিছুকাল পরেই বিএমসিকে এএফপিএফএল থেকে পদত্যাগের আহবান জানান। এর প্রেক্ষিতে ইউ খিন মং লাত যিনি বিএমসির নতুন প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি ইসলাম ধর্মীয় কর্মকান্ড থেকে দলকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নেন ও এএফপিএফএলএ পুনরায় যোগদান করেন। পরে তিনি আইন ওবিচারমšী¿ হন কিন্তু মুসলমান স¤প্রদায়ের আশা-আকাক্ষা তুলে ধরতে ব্যর্থ হন। নব গঠিত বর্মীয় মুসলিম লীগ সরকারের কাছে মুসলমানদের জন্য আলাদা একটি সরকারি দপ্তরের দাবি করে যেমনটি অন্যান্য স¤প্রদায়ের জন্যও ছিল। অন্যান্য স¤প্রদায়ের জন্য ইয়াঙ্গুনে আলাদা মন্ত্রনালয় ও তাদের রাজ্যে আলাদা সরকার ছিল।

ইউ নু এএফপিএফএল থেকে বিএমসিকে ১৯৫৬ সালের ৩০ সেপ্টম্বর সরিয়ে দেন। ১৯৫৫ সালেই বিএমসিকে বিলুপ্ত হতে বলা হয়েছিল। পরে ইউ নু অন্যান্য সংখ্যালঘু ও মুসলমানদের মতের প্রতি তোয়াক্কা না করে বৌদ্ধ ধর্মকে র্বামার রাষ্ট্র ধর্ম হিসেবে আদেশ জারি করেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ইউ নু ধনী ও প্রভাবশালী হিন্দু ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গবাদি পশু জবাই করা নিষিদ্ধ করেন। যদিও কুরবানী ঈদের জন্যএটি কিছুটা শিথিল ছিল,তবুও পুলিশ প্রহরায় তা করতে হত।

পরে জেনারেল নি উইন ঘব ডরহ পরে এ গো-হত্যা নিষিদ্ধের এ আদেশটি বাতিল করেন যা বর্তমানে বহাল আছে। কিছু মুসলমানগন অভিযোগ করেন যে,ইউ নু সরকার মুসলমান হজ র্তীথযাত্রীদের যাত্রার নিয়মকানুনকে কঠিন করে তোলেন যা বৌদ্ধ র্তীথ যত্রীদের শ্রীলংকা ও নেপাল যাওয়ার ক্ষেত্রে ছিলনা। জেনারেল নি উইন ঘব ডরহ এর শাসনকালে মুসলমানদের অবস্থা ইনি ১৯৬২ সালে ক্ষমতায় আসারপর মুসলমানদের অবস্থা আরও খারাপ হয়। মুসলমানদেরকে সেনাবাহিনী থেকে বিতাড়ন করা হয়। অধিক ধার্মিক মুসলমান, যারা বৌদ্ধদের থেকে দূরে থাকত, তাদের বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়; তাদের তুলনায়, যারা বৌদ্ধদের সাথে মিলেমিশে গিয়েছিল ও ব্যক্তিগত গন্ডিতেই ধর্মকর্ম করত।

অন্যান্য দেশের মত র্বামাতেও ইসলামী চরমপন্থীদের কর্মকান্ড শুুরু হতে দেখা যায়। ইন্দোনেশিয়ার ইসলামপন্থীরা র্বামায় মুসলমানদেরে নির্যাতনের দোহাই দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায়। তালেবান কর্তৃক আফগানিস্থানের বামিয়ানের বুদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় র্বামার বৌদ্ধরা মুসলমানদের উপর সহিংস উৎপীড়ন করে। হিউম্যান রাইট ওয়াচের রির্পোটে দেখা যায়, ২০০১ সালের মে মাসে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পূর্বে টাংগোর বৌদ্ধ ও মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে তিন সপ্তাহ ধরে তীব্র উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় । বৌদ্ধ ভিক্ষুরা দাবি করে যে, হানথা মসজিদকে বামিানের বুদ্ধ মূতি ধ্বংসের প্রতিশোধ হিসেবে ধ্বংস করা হোক।

বৌদ্ধ ভিক্ষুদের নেতৃত্বে উত্তেজিত উশৃঙ্খল বৌদ্ধরা মুসলমানদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুন্ঠন করে,তাদের সম্পদ বিনষ্ট করে ও অনেককে হত্যা করে। এসব কিছু বুদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের প্রতিশোধ হিসেবে করা হয়। ধর্মীয় স্বাধীনতাকে খর্ব করা হয়। ইসলাম ধর্মকে পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে ধর্মীয় কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্ত করা হয়। বিভিন্ন মুসলমান সংস্থাকে, যেমন অল বার্মা মুসলিম ইউনিয়নকে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলে আখ্যা দেওয়া হয়।

আশংকা করা হয় যে,মুসলমানদের প্রতি এই নির্যাতন সমগ্র বার্মায় ইসলামী চরমপন্থাকে উসকে দেবে। অনেক মুসলমানই স্বাধীনতার লক্ষ্যে সশস্ত্র সংগ্রামী দলগুলোতে যোগ দেয় । ১৯৯৭ সালের মানডালে গধহফধষধু দাঙ্গা ১৯৯৭ সালের মার্চ মাসে বুদ্ধ মূর্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠাকে কে ন্দ্র করে মুসলমান ও বৌদ্ধ জনগোষ্ঠীর মধ্যে পুনরায়উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়এবং মুসলমানদের সম্পদহানি ঘটে। মহা মায়ামুনি প্যাগোডার গধযধ গুধঃসঁহর ব্রোঞ্জের তৈরি বুদ্ধ মূর্তি আরাকান থেকে ১৭৮৪ সালে রাজা বোদাওপায়া মানডালেতে নিয়ে আসেন, যা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পুনপ্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। মহামায়া মুনি মূর্তিটি উদ্বোধনের সময় এটিকে ভাঙ্গা পাওয়া যায়,যেটিতে একটি গর্ত ছিল।

ধারণা করা হয় ঐ গর্তে একটি কিংবদন্তীতুল্য রতœ (পদ্মমায়া মাইশিন চধফধসুধ গুবঃংযরহ) ছিল যেটিকে ছিল যুদ্ধ জয়ের কারণরূপে বিশ্বাস করা হত, সেটি খোয়া যাওয়াই এ দাঙ্গার কারণ। ১৬ মার্চ,১৯৯৭ সালে বিকেল ৩টার দিকে ১০০০-১৫০০ জনের মত বৌদ্ধ ভিক্ষু ও অন্যরা মুসলমানবিরোধী চিৎকার করতে করতেএগিয়ে চলে। তারা প্রথমে মসজিদ আক্রমণ করে,এবং ক্রমশঃ মসজিদ সংলগ্ন মুসলমানদের দোকানপাট,যানবাহন লুট করে ও পুড়িয়ে দেয়। তারা ধর্মগ্রন্থে অগুন দেয় ও ধর্মীয় অবমাননাকর কার্যকলাপে অংশ নেয়। এসকল লুন্ঠন,ও ধ্বংসযজ্ঞ চালান হয় মানডালের কাইনডালে কধরহমফধহ, গধহফধষধু অঞ্চলে।

আসলে এ দাঙ্গাটি শুরু হয়েছিলএকদল মুসলমান কর্তৃক একটি মেয়েকে ধর্ষণে চেষ্টার সংবাদকে কেন্দ্র করে। কিন্তু পরে স্থানীয় শাসকগন মূর্তির রতœ চুরির বিষয়টিকে সুকৌশলে কাজে লাগিয়ে মুসলিম জনগেষ্ঠীর উপর তাদের বিদ্যমান রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। এ ঘটনায় তিনজন মারা যায় ও ১০০ জন বৌদ্ধ ভিক্ষুকে গ্রেফতার করা হয়। ২০০১ সালের টাংগূর ঞধঁহমড়ড় দাঙ্গা ২০০১ সালে বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ কর্তৃক মুসলমানবিরোধী বিভিন্ন প্রচারপএ বিলি করা হয়। অনেক মুসলমান্ই ধারণা করেন ১৫ মে,২০০১ সালে আফগানিস্থানে বুদ্ধ মূর্তি ধ্বংসের ঘটনায় প্ররোচিত হয়ে বৌদ্ধরা এসব করছে যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।

অবশেষে ১৫ মে,২০০১ এ টাংগূতে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। এ দঙ্গায় প্রায় ২০০ মুসলমান প্রাণ হারায়,১১টি মসজিদে অগুন দেয়া হয়,এবং ৪০০ ও অধিক মুসলমানদের বসতি পুড়িয়ে ফেলা হয়। সেদিন প্রার্থনারত অবস্থায় হান থা ঐধহ ঞযধ মসজিদে ২০জনকে হত্যা করা হয়এবং কয়েকজনকে সামরিক জান্তার সহায়ক বাহিনীরা পিটিয়ে হত্যা করে। ১৭মে,২০০১সালে লেফটেনেন্ট জেনারেল উইন মিন্ট খঃ. এবহবৎধষ ডরহ গুরহঃ , এসপিডিসির ঝচউঈ সেক্রটারি ও ডেপুটি সরাষ্ট্র ও ধর্মমন্ত্রী টাংগূতে পৌছাঁন এবং ১২ জুলই পর্যন্ত কারফিউ জারি রাখা হয়। বৌদ্ধ ভিক্ষুরা প্রাচীন হানথা মসজিদকে বামিয়ানের বুদ্ধ মূর্তি ভেঙ্গে ফেলার প্রতিশোধ সরূপ ধ্বংসের দাবি জানায়।

১৭ মে,২০০১ সালে এসপিডিসি জান্তা সরকার হান থা মসজিদ ও টাংগূ রেলওয়ে মসজিদ বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়। টাংগুর মসজিদসমূহকে মে,২০০২ সাল পযর্ন্ত সরকার বন্ধ করে রাখে। মুসলমানদের নিজ বাড়ীতে ধর্ম-কর্ম করতে বাধ্য করা হয়। স্থানীয় মুসলমান নেতাগন অভিযোগ করেন যে, তারা এখনও নির্যাতিত হচ্ছেন। এ সন্ত্রাসের পর অনেক মুসলমানই টাংগূ থেকে কাছাকাছি অবস্থিত অন্য শহগুলোতে চলে যায় এবং সেখান থেকে অনেক দূরে অবস্থিত ইয়াঙ্গুনেও চলে যায়।

ঘটনার দু’দিন পর মিলিটারী হস্তক্ষেপ করলে সহিংসতার অবসান ঘটে। ২০১২ সালের রাখাইন রাজ্যের দাঙ্গা এ রাজ্যে২০১২ সালে কমপক্ষে১৬৬ জন মুসলমান ও রাখাইন সা¤প্রদায়িক গোলযোগে প্রাণ হারায়। ২০১৩ সালে র্বার্মার কেন্দ্রস্থলে মুসলমানবিরোধী দাঙ্গা মিকটিলায় গবরশঃরষধ মাচের্র ২০ তারিখ থেকে ২২ তারিখ পর্যন্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী ও সংখ্যালঘু মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৪০ জন লোক নিহত ও ৬১ জন আহত হয়। ২৫ র্মাচের সা¤প্রদায়িক দাঙ্গায় ওথিকোণ,তাকোণ ও ইয়ামেনথিন ঙঃযবশড়হব, ঞধঃশড়হব ধহফ ণধসবহঃযরহ শহরের মুসলমানদের বাড়িঘর ও মসজিগুলো হামলার লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়।

এপ্রিলে বিবিসিতে প্রকাশিতএকটি ভিডিওচিত্রে দেখা যায় মিকটিলায় দাঙ্গাকারীদের সাথে পুলিশ অফিসারগণও ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রষ্ঠিান পোড়ানোয় অংশ নিচ্ছে। এই ভিডিওতে আরও দেখা যায় যে, বৌদ্ধ ভিক্ষু সহ দাঙ্গাকারীরা দ’জনকে অত্যন্ত র্ববরভাবে হত্যা করছে। ৩০এপ্রিল,২০১৩এ ওক্কানে ঙশশধহ ৪০০জন বৌদ্ধদের একটি দলইট-পাটকিল ও লাঠিসোটা নিয়ে মুসলমানদের মসজিদে আক্রমণ চালায় ও ১০০ অধিক ঘর-বাড়ী পুড়িয়ে দেয়। এ সময় অন্তঃত ৯ জন আহত হয়। ঘটনাটির সূত্রপাত হয় এ কারণে যে,একটি মুসলমান মেয়ে বাই-সাইকেল চালানোর সময় একজন বৌদ্ধ ভিক্ষুর সাথে ধাক্কা লাগে।

রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লংঘন অ্যামনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে,র্বামার সামরিক শাসন অধীন¯ — মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ১৯৭৮ সাল থেকে মানবধিকার লংঘন জনিত সংকটে নিপতিত হচ্ছে । এদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পার্শ্ববতী রাষ্ট্র বাংলদেশে উদ্বাস্তু জীবনযাপন করছে। ২০০৫ সাল পর্যন্ত উদ্বাস্তু বিষয়ক জাতিসংঘের হাই কমিশন রোহিঙ্গদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও পূর্নবাসনের বিষটি তদারকি করে আসছিল। কিন্তু উদ্বাস্তু শিবিরের মানবধিকারের অপব্যবহারের ও লংঘনের অভিযোগে প্রচেষ্টাটি হুমকির মুখে পড়েছে। জাতিসংঘের এসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুরা তাদের নিজ দেশে ফিরতে অনিচ্ছুক।

কারণ হচ্ছে সেখানকার শাসন পরিস্থিতি। এখন তারা অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে,কেননা বাংলাদেশী সরকারের তরফ থেকে তারা কোন ধরনের সহায়তা পাচ্ছে না। ২০০৯ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে মাল্লাকা প্রণালীর নিকট থেকে ২১ দিন সমুদ্রে থাকার পর স্থানীয় নাবিকেরা অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে উদ্ধার করে। গত কয়েক বছর ধরে রোহিঙ্গারা থাইল্যান্ডের দিকেও পালিয়ে যাচ্ছে। খসড়াভাবে ১১১,০০০ শরনার্থী থাই-মায়ানমার সীমান্তে ৯টি আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছে।

সেখানে অভিযোগ রয়েছে যে, তাদের বিভিন্ন দলকে জাহাজে করে জোরপূর্বক নিয়ে সমুদ্রে ফেলে দেয়া হয়েছে। ২০০৯ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে ১৯০ জন রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু স ম্বলিত একটি নৌকাকে থাই আর্মি কর্তৃক সমুদ্রে পাঠানোর প্রমাণ পাওয়া যায়। ২০০৯ সালের ফেব্র“য়ারিতে ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ দ্বারা উদ্ধারকৃত একদল উদ্বাস্তুর দলের রোমর্হষক বর্ণনায় দেখা যায়যে,কীবাবে তারা থাই আর্মি তারা ধৃর্ত ও নিগৃহীত হয়ে খোলা সমুদ্রে নিক্ষেপিত হয়েছে। ফেব্র“য়ারির শেষের দিকে প্রাপ্ত রির্পোটে দেখা যায়,এমনি ৫টি নৌকাকে সমুদ্রে জোর পূর্বক ছেড়ে দেওয়া হয় যার মধ্যে ৪টি ঝড়ে ডুবে যায় ওএকটি উপকুলের দিকে ভেসে আসে। ১২ ফেব্র“য়ারি,২০০৯ সালে থাইল্যান্ডর প্রধান মন্ত্রী অভিজিৎ ভিজাজিভা অনযরংরঃ ঠবললধলরাধ এধরনের কিছু ঘটনা ঘটেছে যাদের সমুদ্রে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেন।

তথ্যসূএ: উইকিপিডিয়া (ডরশরঢ়বফরধ) । ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৪৮ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.