নাজমুল ইসলাম মকবুল
নাজমুল ইসলাম মকবুল, বিশ্বনাথ
মোবাইল নাম্বার তালাশ করে করে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে ম্যাসেজ দিয়েছেন সিংহভাগ চেয়ারম্যান মেম্বার প্রার্থীরা। কেহ কেহ বিতরণ করছেন দামী দামী ঈদ কার্ড। গরিব অসহায়দের সাহায্য সহযোগিতাও বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। রাস্তায় চলাচলের সময় সালাম কালামও বেড়েছে অনেকটা। কুশল বিনিময়ের ধরনও পাল্টে গেছে।
যত বিনয়ী হয়ে কুশল বিনিময় করা যায় ততই যেন মঙ্গল। ঈদ উপলে বাড়ী বাড়ী গিয়ে ঈদের শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন অনেকেই। আর এর পিছনে অনেকেরই উদ্দেশ্য হলো একটি বার যদি চেয়ারম্যান কিংবা মেম্বার হওয়া যায়। নাম কাম পরিচিতিতো হতোই আজীবন চেয়ারম্যান সাব বা মেম্বার সাব বলে সকলে সম্বোধন করতেন।
স্থানীয় সরকারের তৃণমুল পর্যায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রায় আড়াই বছর পুর্বে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলেও নানা কারনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ায় বর্তমান নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা বাড়তি প্রায় আড়াই বছর অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন।
তবে ২০১১ সালের ফেব্র“য়ারীর মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশন প্রস্তুুতি নেয়ায় ও বেশ কয়েকদফা ঘোষনা দেওয়ায় সম্ভাব্য চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদপ্রার্থীরা আগাম প্রতিশ্র“তি আদায় ও নিজের পে জনসমর্থন বাড়াতে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ভোটারদের সাথে আরেকবার পুরণো সম্পর্ক নতুন করে ঝালাই দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যদিও দলীয়ভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়ার সুযোগ নেই কিন্তু পরোভাবে দলীয় ভোট যে কোন প্রার্থীর জয় পরাজয়ে রাখে বিরাট ভুমিকা। তাই প্রধান প্রধান দলের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতারা নিজ নিজ ইউনিয়নে দলীয় ম্যান্ডেট নিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে নিজ নিজ দলের উর্ধ্বতন নেতাকে খুশি করে সমর্থন আদায় করে নিতে অঘোষিতভাবে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তারই অংশ হিসেবে নেতার কাছে নানান অজুহাতে ঘন ঘন যাতায়াত এবং নেতার সবগুলি অনুষ্ঠানে যোগদানের পাশাপাশি নিজ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন হরদম। নির্বাচনী এলাকার পুরনো আত্মীয় স্বজন ও আত্মীয়দের আত্মীয় খুজে খুজে বের করে পুরনো সম্পর্ক ঝালাই করে নিচ্ছেন নতুনভাবে।
বিয়েশাদীতে গিয়ে দিচ্ছেন দামী উপহার সামগ্রী। অনুসন্ধানে জানা গেছে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান মেম্বারদের মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান মেম্বারদের সিংহভাগ প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রতিদ্ধন্ধিতা করার জন্য আটঘাট বেঁধে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
অনেকেই বলে থাকেন নির্বাচন একটি নেশা। যাদেরকে একবার এ নেশায় ধরে তাকে সহজে ছাড়ে না। আমাদের অনুসন্ধানে বিশ্বনাথ উপজেলার ৮ ইউনিয়নে যারা সম্ভাব্য চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে পারেন তারা হলেন ১নং লামাকাজী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া, রঞ্জিত ধর, ধর্ম দাশ।
২নং খাজাঞ্চী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান রজব আলী, পীর লিয়াকত হোসেন, নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী, আব্দুল মালিক ময়ূর, আবুল বশর ফারুক, সমর চন্দ্র দাস।
৩নং অলংকারী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান সামছুজ্জামান সমছু, নাজমুল ইসলাম, ইরন মিয়া, ফয়েজ আলী, তৈয়ব আলী, নজমুল ইসলাম রুহেল, গিয়াস উদ্দিন রানা, সিতার মিয়া, আব্দুল হালিম, মনোয়ার হোসেন, মানিক মিয়া, রাজা মিয়া।
৪নং রামপাশা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, শিল্পপতি আজিজুর রহমান, পীর সিরাজুল ইসলাম, খছরুজ্জামান খছরু।
৫নং দৌলতপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আমির আলী, মোশারফ হোসেন, সাংবাদিক খালেদ মিয়া, বাবুল মিয়া, আছাব উদ্দিন, আবারক আলী, আবদাল মিয়া, মিজানুর রহমান, আবুল হোসেন মামুন, হাফিজ আজমল হোসেন।
৬নং বিশ্বনাথ ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক, জালাল উদ্দিন, মোঃ মধু মিয়া, আজাদুর রহমান আজাদ, লাল মিয়া, নৃপেন্দ্র কুমার পাল, আশিকুর রহমান, মকদ্দুছ আলী, আরমান আলী শাহ।
৭নং দেওকলস ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী ফখরুল আহমদ মতছিন, নজির আহমদ, আখতার ফারুক, মুহিবুর হোসেন জগলু, এম আর. টুনু তালুকদার, সমসিদ খান।
৮নং দশঘর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান হাজী শফিক উদ্দিন, আলহাজ্ব সিরাজ খান, আবুল হোসেন, সাংবাদিক মামুনুর রশীদ মামুন, মকবুল হোসেন, লয়লুছ মিয়া, কিনু মিয়া, আব্দুল তাহিদ।
তবে মুল নির্বাচনে উল্লিখিত প্রার্থীদের মধ্যে অনেকে অংশগ্রহণ করতেও পারেন আবার অনেকে বিরত থাকতেও পারেন। এছাড়া প্রবাসীসহ আরও অনেক নতুন নতুন প্রার্থীও আসতে পারেন নির্বাচনী প্রতিদ্ধন্ধিতায়। অপোকৃত তরুন ও নবীনরাই নির্বাচনে প্রতিদ্ধন্ধিতার জন্য প্রচারনা চালিয়ে যাওয়ায় এবারের নির্বাচনে বয়স্কদের তুলনায় তরুনদের অংশগ্রহণ বেশি হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
অনেকেই আবার পরিচিতি লাভের জন্য নির্বাচনী প্রচারনায় অংশ নেন। সময় বুঝে এবং জনসমর্থনের ভাব সাব বুঝে হয়তো মুল প্রতিদ্ধন্ধিতায় নেমে পড়বেন নতুবা সটকে পড়বেন। অনেকেই আবার নমিনেশন জমা দেওয়ার পর বিভিন্ন কারনে প্রত্যাহারও করে নেন।
অনেকেই ডামি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন অন্য পরে ভোট ভাগাভাগি করে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে। তবে ভোটাররা বলেন এখন আর মিষ্টি কথায় চিড়া ভিজবেনা।
সৎ ও যোগ্য প্রার্থী দেখেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে জানান সচেতন ভোটারেরা।
বার্তা প্রেরকঃ
নাজমুল ইসলাম মকবুল
মোবাঃ ০১৭১৮৫০৮১২২
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।