"আপনি যদি একটা কিংবা দুটি খুন করেন তাহলে আপনার জন্য অপেক্ষা করছে জল্লাদের লোমশ হাত । আর যদি খুন করেন কয়েক হাজার, গ্যারান্টি দিচ্ছে বিশ্ব মানবতা আপনাকে ডাকা হবে জেনেভায় শান্তি আলোচনায়। " কথাটা কোথাও পড়েছিলাম বেশ আগে । কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এই কথাটাও আর টিকে থাকছেনা । এবার আপনার জন্য অপেক্ষা করছে খুনের লাইসেন্স ।
যে কোন মাত্রার খুন করে আপনি হয়ে উঠবেন মানবতার মুক্তিকামী নেতা !!!
"রাস্ট্র যদি পরিচালনা করেন কোন স্বৈরশাসক তাহলে তিনি সকল ধরনের খুনের লাইসেন্স প্রাপ্ত হন" এই রঙ্গে ভরা বঙ্গ দেশে এ আর এমন কি ? জিয়া, এরশাদ, মইন উ'রা তা প্রয়োগ করে গেছেন । আমরা তা মেনে নিয়েছি । আইন যেন কেবলি দুর্বলের মানার বিষয়। সবলের কাজ শুধু আইন তৈরি করা এবং তা লংঘন করা।
স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে রাস্ট্রের নামে কত হাজার মুক্তিযোদ্ধা, অমুক্তিযোদ্ধা খুন হয়েছে তার সঠিক হিসাব ইতিহাস কোনদিনই করতে পারবেনা।
কারণ হয়তো ইতিহাসবিদরা ভাল হিসাবরক্ষক নন । আমরা জানি সেই সব হত্যাকান্ড ঘটানো হয়েছে গণতন্ত্রের নামে । আরো পরে বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে তো মূলত খুনটাকে সাংবিধানিক স্বীকৃতিই দেয়া হল ।
৯০ এর অভ্যুত্থানে গণতন্ত্র ফিরে এল। মানুষ ফিরে পেল আরেক স্বৈরী ।
এক স্বৈরাচারের পরিবর্তে আরেক স্বৈরাচার। এজন্য আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে দায়ী করেন রাস্ট্রতাত্বিক এবং রাজনীতি বিশ্লষকগণ। যেন পাপীকে বাঁচানোর জন্য সব দোষ পাপের উপর চাপিয়ে দেয়া । গণতন্ত্র চর্চায় ধীরে ধীরে তার উন্নতি র্ঘটলো। শাসকগণ স্বৈরী থেকে ধীরে ধীরে আরো উন্নত মাত্রার স্বৈরী হয়ে উঠল।
বিরোধী দলন, দুর্ণীতিতে রেকর্ড সংখ্যকবার চ্যাম্পিয়ন,ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সংবিধান সংশোধন, জঙ্গীবাদের উত্থান, রাজনৈতিক নেতাদের হত্যার জন্য জনসভায় গ্রেনেড হামলা, রাজাকার এবং স্বৈরাচার নিয়ে গণতন্ত্রীদের গণতন্ত্র ধ্বংসের মহড়া পেরিয়ে রাস্তায় সাপের মত পিটিয়ে মানুষ মারা-সবই প্রত্যক্ষ করলাম আমরা।
তবু আমাদের দেখার বাকী ছিল অনেক কিছু । বর্তমান সরকার তা দেখানোর দায়িত্ব নিয়েছে। প্রথমেই রাজনৈতিক বিবেচনায় খুনের মামলাসহ কয়েক হাজার মামলা প্রত্যাহার, বিচারালয় দলীয়করণে সকল রেকর্ড অতিক্রম, হরতালের সময় প্রকাশ্য দিবালোকে মানুষ হত্যার পরও দলীয় ক্যাডারদের মামলা থেকে অব্যাহতি, খুনের মামলায় দন্ডপ্রাপ্তদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা-অনেক কিছুই দেখলাম । বাকী আছে আরো অনেক কিছু দেখার।
এবার কি সরকার সে দিকেই এগুবে ? খুনের লাইসেন্স দেয়া ?? আওয়ামিলীগ যারা করবে তাদেরকে পদমর্যাদা অনুযায়ী বিভিন্ন সংখ্যার খুন করার লাইসেন্স প্রদান??? যাতে পুলিশের উপর ক্রশফায়ারের চাপ একটু কমে !! কেন অযথা বুড়ো লোকটাকে সমালোচনার পাত্র করা । তার চেয়ে বরং এটাই নিরাপদ এবং ত্বড়িৎ ফলদায়ক !! সতরাং যারা খুনের লাইসেন্স চান আসুন তাড়াতাড়ি আওয়ামীলীগের পতাকাতলে সমবেত হোন ।
আমরাও এক জীবনে অনেক কিছু দেখার খুশিতে বগল বাজাতে থাকি । আর বলতে থাকি, হে রাজনীতি ! তুমি কত মহান !! তোমার বদৌলতে কত কী দেখলাম !!! এবার আসো তোমায় প্রণাম করি। তোমার মুখ গহ্বরে আমাদের শরীর নিসৃত নোনা পানি কিছুটা হলেও প্রবেশ করাও ।
এটাই তো কেবল বাকী আছে !!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।