আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফেলানীর ঘাতককে চিনতে পেরেছি

বিএসএফের গুলিতে নিহত বহুল আলোচিত ফেলানী হত্যা মামলায় ভারতে বিএসএফের বিশেষ আদালতে সাক্ষ্যদান শেষে দেশে ফিরে ফেলানীর বাবা বলেছেন, ফেলানীর ঘাতক বিএসএফ সদস্য অমীয় ঘোষকে আমি চিনতে পেরেছি।

আজ বিকেল ৫টায় কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি সদর দফতরের সামনে অনানুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় সড়কপথে ভারতের কুচবিহার থেকে যাত্রা করে বিকেলে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থল বন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন ফেলানীর বাবা-মামাসহ চার সদস্যের প্রতিনিধি দল।

ফেলানীর বাবা আরো বলেন, ভারতের আদালতে নির্ভয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি। অনেক প্রশ্ন করেছে সব উত্তর দিয়েছি।

আমার চোখের সামনে ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে তাও বলেছি। এ সময় আদালতে উপস্থিত ঘাতক বিএসএফ সদস্য অমীয় ঘোষকে আমি চিনতে পেরেছি।

কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক খালেদ জানান, আসাম ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি (কমিউনিকেশনস) সিপি ত্রিবেদীর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বিচারকের বিশেষ আদালতে কঠোর গোপনীয়তায় এ বিচার কাজ চলছে। কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে সাক্ষ্য নেওয়া হয়। আদালতে প্রত্যক্ষ সাক্ষী ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা আব্দুল হানিফ প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরেন।

তিনি জানান, মঙ্গলবারও ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মামা আব্দুল হানিফের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা থাকলেও তাদের সাক্ষ্য না নিয়েই কঠোর নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সীমান্ত পৌঁছে দেওয়া হয়। পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন জানান, সোমবার ফেলানীর বাবা ও মামা সেখানে সাক্ষ্য দিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে আদালতের কার্যক্রম চলাকালীন ভারতীয় সীমান্তবর্তী দুইনাগরিক সাক্ষ্য দেয়। আমরা আশা করছি ন্যায় বিচার পাব। অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে।

তিনি আরো জানান, বিচারের প্রথমদিন গত ১৩ আগস্ট মামলার নথিপত্র জমাসহ মূল আসামি বিএসএফ সদস্য অমীয় ঘোষের জবানবন্দী নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় (অনিচ্ছাকৃত খুন) এবং বিএসএফ আইনের ৪৬ ও ৪৭ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।

ফেলানীর মামা আব্দুল হানিফ বলেন, ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম। ভগ্নিপতির কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি ফেলানীর লাশ কাঁটাতারে ঝুলে আছে।

এরপর বিএসএফ মই ব্যবহার না করে উপর থেকে লাশ মাটিতে ফেলে দেয়। এরপর বিএসএফ গরু-ছাগলের মত ফেলানীর লাশ হাত-পা বেঁধে বাঁশে ঝুলিয়ে নিয়ে যায়।  

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী ভারত থেকে বাবার সঙ্গে কুড়িগ্রামে আসার পথে অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়। পরে কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ঝুলে থাকার ছবি সংবলিত সংবাদটি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে  প্রকাশিত হলে সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় ওঠে।

এই হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি ওঠে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে বিএসএফ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করে ভারত সরকার।

দীর্ঘ আড়াই বছর পর ভারতের কুচবিহারে গত ১৩ আগস্ট বিএসএফের বিশেষ আদালতে শুরু হয় বিচার কার্যক্রম।

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.