সামু কি ছিল, আর কি হয়ে গেল !
ইউরোপীয়ান ফুটবলের ট্রান্সফার সামার শেষ হচ্ছে আজ, ক্লাবগুলোর শেষ মুহুর্তের দৌড়াদৌড়ি দেখে বেশ মজাই লাগছে। কত প্ল্যান, শেষ বেলায় প্লেয়ার ধরার চেস্টা, না হলে হয়ত যা আছে তাই দিয়েই বছর শেষ করতে হবে।
অনেকখন ধরেই গোল ডট কমের লাইভ ট্রান্সভার নিউজ পেজ খুলে বসে আছি, দেখি না আর বড় কোন বেচাকেনা হয় কি না।
এই সামারে সব ক্লাবের প্লেয়ার কেনাবেচা দেখে আর আমার ক্লাব এসি মিলানের ঘুম দেখে মুডটাই অফ ছিল কয়দিন, গত ২-৩ দিন মিলান যা দেখালো আমি এবার ডিস্টিং ডিস্টিং করতে করতে উঠে গিয়েছি। সামনে ফিফা ১১ আর ফুটবল ম্যানেজার ১১ গেমদুইটা আসতেছে, আমি তো আজ রাত থেকেই প্ল্যান করা শুরু করলাম কি করব আর না করব।
যাই হোক, মনের খুশীতে লেখা পোস্ট, লাফাতে লাফাতে যা মনে হয় তাই লিখে গেলাম। এখানেই শেষ করে দিলে হয়, তবে এসি মিলান ২০১০-২০১১ কে সবার সাথে একটু পরিচয় করিয়ে দেয়ার সুযোগ মিস করা ঠিক না।
এটাকিং সাইডে মিলানকে এবার বলা হচ্ছে ইউরোপের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দল, একমাত্র বার্সেলোনা বা রিয়াল মাদ্রিদই পারবে কাগজে কলমে পাল্লা দিতে। বরং মিলানের এই অ্যাটাক বেশী কমপ্লিট, স্কিল আছে, পেস আছে, ক্রিয়েটিভিটি আছে, আর কিছু সিউর সাকসেস প্রুভেন পারফর্মার আছে। সাধারনত ৪-৩-৩ এ খেলে মিলান, কিন্তু যখন দেখবেন এই ৩ টা স্ট্রাইকার পজিশনের জন্য আপনার হাতে আছে ইব্রাহিমোভিচ, রবিনহো, রোনাল্ডিনহো আর পাতো, মুখে হাসি না এসে পারে না।
পাতো আর রোনাল্ডিনহো আগে থেকেই আছে মিলানে, এই সিজনের শুরুতেই দেখিয়ে দিয়েছে ফর্ম নিয়ে টেনশন না করতে। রবিনহো আর ইব্রাহিমোভিচ নতুন অ্যাডিশন, বিশ্বকাপের খেলা রবিনহো মিলানে খেললেই কাজ হবে। আর ইব্রা ইজ ব্যাক টু হিজ সিটি এগেইন, খারাপ খেলার কারন তো দেখছি না কোন।
আমার ধারনা ইব্রা সামনে স্পট স্ট্রাইকার হিসেবে থাকবে, সাথে ডান দিকে পাতো আর বামে রোনাল্ডিনহো কিংবা রবিনহো নিচ থেকে বল নেয়া থেকে উইং সাপোর্ট আর সাথে নিজে গোল করা, সবই করতে পারবে। হান্টেলার আর বরিয়েল্লো আজ ক্লাব থেকে চলে গেলেও ব্যাকআপ হিসেবে পিপ্পো ইনজাঘি আছে, তরুন ওডামাডি আর ভার্ডিও একেবারে খারাপ না।
আডিয়াহ এই সিজন লোনে খেলবে রেজিনাতে, নেকস্ট সিজনে আরেকটা এক্সপ্লোসিভ স্ট্রাইকার যোগ হবে তাই মিলানে।
মিডফিল্ডও একেবারে ফেলনা না, যদিও মেইন সমস্যা আছে প্লেয়ারদের বয়স দিয়ে যারা হয়ত সপ্তাহে ২টা ফুল ম্যাচ খেলার লোড নিতে পারবে না। প্লেমেকার হিসেবে পিরলো তো আছে, হোল্ডিং মিডে এবার মনেহয় ফ্ল্যামিনি প্রথম থেকেই স্টার্টিং ইলেভেনে থাকবে, মারাত্বক স্ট্যামিনা ফ্ল্যামিনির। অ্যামব্রোসিনি আর গাত্তুসোর বয়স আর স্ট্যামিনা নিয়ে প্রবলেম আছে, তবে মিলানের নতুন কোচের সিস্টেমটা ভালো লেগেছে আমার - অ্যামব্রোকে ৫০-৬০ মিনিট খেলিয়ে পরে ফ্রেস গাত্তুসোকে নামানো, কাজে লাগলেও লাগতে পারে। আর যারা আছে মিডফিল্ডে তারাও বেশ কাজের, যেমন, ঘানার ওয়ার্ল্ড কাপ হিরো কেভিন প্রিন্স বোয়েটাং (পেস আর স্ট্যামিনা), সিডর্ফ (এক্সপেরিএন্স আর সেন্ট্রাল মিড থেকে অ্যাটাকিং মিড সবজায়গাতেই খেলতে পারে), উইঙ্গার আবাতে, তরুন রডনি স্ট্র্যাসার আর সাথে মার্কেল আছে।
প্রি সিজনে মার্কেল বেশ ঝলক দেখিয়েছে এর মধ্যেই, ২-১ সিজনের মধ্যেই নামকরা প্লেয়ার হতে পারবে।
ডিফেন্সের অবস্থাই সবচেয়ে করুন, আর একমাত্র এই জন্যই মিলানের খবর খারাপ হয়ে যেতে পারে। সেন্ট্রাল ডিফেন্সে পার্টনার হিসেবে নেস্তা আর থিয়াগো সিলভা ওয়ার্ল্ড ক্লাস, কিন্তু নেস্তা প্রতি বছর অর্ধেক থাকে ইনজুরিতে আর তখন থিয়াগো সিলভা একা কাভার করতে পারে না। সেন্ট্রালে আরও আছে ইউএসএর ওনেইউ, এই যা ভরসা কারন বেশ ভালো খেলে। বনেরা এখনো তার পটেনশিয়াল ধরতে পারে নাই, আর বয়স্ক মারিও ইয়েপেস আহামরি কি করতে পারবে সন্দেহ আছে।
উইং ব্যাকের অবস্থা তো আরো খারাপ। ডানে জামব্রোত্তা আর বামে জাঙ্কুলোভস্কির পীক টাইম পার হয়ে গেছে অনেক আগেই, পেসও নাই আর, এখন এদেরকে খেলতে দেখলে অপোনেন্ট স্ট্রাইকাররা বেশ খুশিই হয়। এদের ব্যাকআপ হিসেবে এবার নেয়া হয়েছে পাপাস্তাথোপোলুসকে, এক ম্যাচ ভালো খেলার পর নেক্সট কবে আবার ভালো খেলবে বের করার জন্য গ্রহ-নক্ষত্র দেখানো লাগে। মাসিমো ওডো আছে, খেলতে দেখলেই কমেডী শুরু হয়ে যায় মাঠে। লুকা অ্যান্টোনিনিও আছে, প্রতিভা থাকলেও মিলানের মত ক্লাবে খেলার জন্য যে ম্যাচিওরিটি লাগে তা এখনো আসে নাই।
আগের দুই প্যারাতে খারাপ অবস্থা লেখার পর ভালো কিছু দিয়ে শেষ করি, সেটা হল গোলকীপিং। অ্যামেলিয়া আর আব্বিয়াতি দুজনেই বিশ্বমানের কীপার, প্রবলেম হবে বলে মনে হয় না। বিপদে পড়লেও ব্যাকআপে ফ্লাভিও রোমা আছে, সেও ভালো।
বেশ সময় লাগলো লেখাটা শেষ করতে। জায়ান্ট ক্লাবদের নিয়ে এক এক করে সিজন প্রিভিও লেখার ইচ্ছা আছে, দেখি স্ট্যামিনা থাকে কি না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।