শাশ্বতিকীর অনুবাদ সংখ্যা থেকে
আর্নেস্ট হেমিংওয়ে
আ ক্লীন, ওয়েল লাইটেড প্লেইস
ভূমিকা ও অনুবাদ : মীর ওয়ালীউজ্জামান
জগদ্বিখ্যাত আমেরিকান গদ্যকার আর্নেস্ট হেমিংওয়ের (১৮৯৯-১৯৬১) ‘আ ক্লীন, ওয়েল লাইটেড প্লেইস’ ছোট গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২৬ সালে। জেমস্ জয়েস গল্পটি পড়ে মন্তব্য করেছিলেন, হেমিংওয়ে সাহিত্য ও জীবনের মাঝে যে পর্দা, সেটা সরিয়ে দিয়েছেন, পৌঁছে গেছেন সেখানে, প্রতিটি লেখক যেখানে পৌঁছতে চান কখনো না কখনো। হতাশার চিত্রকল্পে গল্পটি ঠাসা, শ্বাসরোধী প্রায়। আলো-অন্ধকার, যৌবন-বার্দ্ধক্য ইত্যাদির বৈপরীত্য অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও কঠোরভাবে নির্দেশিত ও চিত্রিত। গল্প পড়া শেষ করে পাঠক ভাববেন : জীবনের শীতকাল অনিবার্য, অবধারিত - তার থেকে নিস্তার নেই।
তাই কি হেমিংওয়ে গল্পের বৃদ্ধের মতো বধির হয়ে গিয়ে, প্রতি সন্ধ্যায় গ্লাসের পর গ্লাস মদ্যপান করে অচেতন হয়ে পড়বার মতো বার্ধক্যের অকার্যকর জীবন যাপন এড়িয়ে যাবার জন্যই আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিলেন - দুঃসাহসী যেহেতু তিনি ছিলেন বরাবর!
রাত বেশ হয়েছে। ক্যাফেতে যারা ছিল, প্রায় সবাই বেরিয়ে গেছে। কেবল এক বৃদ্ধ টেরাসের যেখানে এখনো গাছের ছায়া, গাছের ডালপালা আর পাতার কারণে যেখানে বিদ্যুতের আলো সরাসরি পড়ছে না, সেখানে বসে আছেন। দিবাভাগে রাস্তায় ধূলো উড়ছিল। রাতে শিশির পড়ায় ধূলো আর দৃশ্যমান নয়।
বৃদ্ধ বেশ রাত পর্যন্ত ওখানে বসে থাকতে পছন্দ করেন। যদিও উনি বধির, রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জায়গাটা যে নির্জন ও শান্ত হয়ে আসে ক্রমশ:, সেটা তিনি উপলব্ধি করেন, পরিবেশের পরিবর্তনটা টের পান।
ক্যাফের ভেতরে অপেক্ষমান ওয়েটার দু’জন বুঝতে পারছিল, বৃদ্ধটি এতক্ষণে কিছুটা নেশা- গ্রস্ত। যদিও বৃদ্ধ একজন নিয়মিত ও ভাল খদ্দের, নেশার ঘোর অতিরিক্ত হয়ে গেলে যদি উনি বিল না মিটিয়ে চলে যান - এরকম আশংকায় ওরা তার ওপর নজর রেখেছিল।
‘‘গেল হপ্তায় বুড়ো আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল,’’ ওয়েটারদের একজন বলল।
‘‘কেন ?’’
‘‘কেন আর, হতাশায়। ’’
‘‘হতাশা কেন ?’’
‘‘কোন কারণ-ই নেই বুড়োর হতাশ হবার মতো। ’’
‘‘তুমি কিভাবে জানলে ওটা অকারণ হতাশা?’’
‘‘আরে ওর তো অঢেল টাকা-পয়সা!’’
ওরা ক্যাফের প্রবেশ দরজার কাছে দেয়ালের লাগোয়া একটি টেবিলে বসেছিল। আর তাকিয়েছিল বাইরে, টেরাসের সবগুলি টেবিল তখন শূন্য, গাছটির শাখাপত্র বাতাসে অল্প অল্প দুলছে। ঐ গাছের ছায়ায় বৃদ্ধজনটি বসেছিল।
উর্দিপরা এক সৈনিক আর একটি মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে রাস্তায়। ফৌজির শার্টের কলারে পেতলে তৈরি পার্সোনেল নমবর আলো পড়ে ঝিকিয়ে উঠল। মেয়েটির মাথায় কোন আবরণ নেই। সে ফৌজির সঙ্গে তাল মেলাতে পাশাপাশি দ্রুত হাঁটছে।
‘‘পাহারাদার ওকে তুলে নিয়ে যাবে,’’ ওয়েটারদের একজন বলল।
‘‘তাতে ক্ষতি কী, যদি ও যা চাইছে, তা পেয়ে যায় ?’’
‘‘তুমি যাই বল, ওর এখন রাস্তায় থাকা আর ঠিক নয়। পাহারাওয়ালা ঠিকই ওকে ধরবে। মিনিট পাঁচেক আগেই তারা একবার ঘুরে গেছে। ’’
ছায়ায় বসে থাকা বৃদ্ধজন তার শূন্য পানপাত্র পিরিচে ঠুকে ওদের মনোযোগ কাড়ার চেষ্টা করলেন। তরুণ ওয়েটারটি উঠে তার কাছে গেল।
‘‘আপনার কী চাই বলুন ?’’
বুড়ো ওর দিকে তাকালেন। ‘‘আরেকটা ব্র্যান্ডি,’’ উনি উচ্চারণ করলেন।
‘‘আপনার নেশা হয়ে যাবে,’’ ওয়েটার জানায়। বৃদ্ধ আবার ওর পানে তাকালেন। ওয়েটার সরে এল সেখান থেকে।
‘‘সারারাত এখানেই কাটিয়ে দেবার মতলব বুড়োর,’’ তরুণ ওয়েটার তার সঙ্গীকে জানায়। ‘‘আমার ঘুম পাচ্ছে। তিনটের আগে আমি কখনো বিছানায় শরীর ফেলতে পারি না। গেল হপ্তায় ওর আত্মহত্যা করাই উচিত ছিল। ’’
ব্র্যান্ডির বোতল আর একটি পিরিচ কাউন্টার থেকে তুলে নিয়ে ওয়েটার বৃদ্ধের টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়াল।
পিরিচ নামিয়ে রেখে বৃদ্ধের শূন্য পানপাত্র পূর্ণ করল।
‘‘গত হপ্তায় আপনার আত্মহত্যা করাই উচিত ছিল,’’ সে বধির বৃদ্ধকে বলল। বৃদ্ধজন আঙুল দিয়ে পূর্ণ গ্লাস দেখিয়ে বললেন, ‘‘আর একটু দাও,’’। ওয়েটার নিঃশব্দে বোতল থেকে আরো ব্র্যান্ডি ঢালল, ফলে অতিরিক্ত পানীয় গ্লাসের কানা উপ্চে সূতপীকৃত পিরিচের সবচেয়ে ওপরেরটিতে পড়ল। ‘‘ধন্যবাদ,’’ বুড়ো মানুষটি বললেন।
তরুণ ওয়েটার পানীয়ের বোতল নিয়ে ভেতরে এল। আবার তার সহকর্মীর সঙ্গে বসল।
‘‘এখন বুড়ো পুরোপুরি মাতাল,’’ সে বলে।
‘‘কিন্তু প্রতি রাতেই তো ইনি ভরপেট মদ্যপান করেন। ’’
‘‘আচ্ছা, ও মরতে গিয়েছিল কেন ?’’
‘‘তা আমি কি করে জানব, বল।
’’
‘‘আচ্ছা, লোকটি কিভাবে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল ?’’
‘‘গলায় দড়ি দিয়েছিল নাকি। ’’
‘‘সেই দড়ি কেটে ওকে বাঁচাল কে?’’
‘‘ওর ভাইঝি। ’’
‘‘ওকে বাঁচাল কেন ?’’
‘‘অপঘাতে মরলে ওর আত্মার সদ্গতি হবে না-সেই শংকা থেকে। ’’
‘‘আচ্ছা, ওর কিরকম টাকাকড়ি আছে, বল তো ?’’
‘‘শুনেছি, ওর অঢেল অর্থসম্পদ। ’’
‘‘বয়স তো আশি হবেই।
’’
‘‘তা, আমার মনে হয়, ওর আশি বছর বয়স হয়েছে। ’’
‘‘ইস্, লোকটা যদি এখন বাড়ি ফিরে যেত। কোন রাতেই তিনটের আগে আমি ঘুমোতে যেতে পারি না। ওটা কি কোন ঘুমের সময় হল? তুমি বল ?’’
‘‘লোকটা জেগে থাকতে চায়, ঘুমোতে চায় না। ’’
‘‘লোকটা একাকিত্ববোধে ভোগে।
আমার কেসটা তো তা নয়, বল ? আমার বউ আমার জন্য বিছানায় অপেক্ষা করে। ’’
‘‘ওই মানুষটারও তো একসময় স্ত্রী ছিলেন কেউ। ’’
‘‘এ-বয়সে ওর আর বউ-টউ থাকা-না-থাকা সমান। ’’
‘‘তা কি বলা যায় ? স্ত্রী থাকলে হয়তো ওর জন্য সেটা মঙ্গলদায়ক হত। ’’
‘‘ওর ভাইঝি ওকে দেখে-শুনে রাখে।
তুমি তো বললে, সেই ওর গলার দড়ি কেটে নামিয়েছিল। ’’
‘‘হ্যাঁ, তাই তো। ’’
‘‘ওরকম বুড়ো হয়ে বাচঁবার ইচ্ছে আমার মোটেও নেই। বুড়ো হওয়া খুব বিচ্ছিরি ব্যাপার। ’’
‘‘সবক্ষেত্রে সেরকম নাও হতে পারে।
এই বৃদ্ধজনটি কিন্তু খুবই পরিচ্ছন্ন। উনি মদ্যপান করেন ঠিকই, কিন্তু কখনো ওর গ্লাস ছল্কে পানীয় বাইরে পড়েনা। মাতাল হলেও ওর হাত টলে না, তুমি দেখ। ’’
‘‘ওর দিকে তাকাতে আমার একটুও ইচ্ছে করছে না। আমি চাই, ও বাড়ি চলে যাক।
খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য ওর বিন্দুমাত্র বিবেচনা নেই। ’’
বৃদ্ধ মানুষটির দৃষ্টি তার শূন্য গ্লাস অতিক্রম করে, সামনের চত্বর পরিক্রমা শেষে ওয়েটার যুগলের ওপর স্থির হল।
‘‘আবার ভরে দাও,’’ তার গ্লাসের প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করে বললেন তিনি। যে ওয়েটারটি বাড়ি যাবার জন্য তাড়াহুড়ো করছিল, সে এগিয়ে গেল।
‘‘শেষ,’’ সে নিতান্ত রসকষহীনভাবে জবাব দিল।
ওরকম ব্যাকরণ বহির্ভূত বাচনভঙ্গি লোকে বিদেশি অথবা মোদো মাতালের সঙ্গে কথাবার্তা সারতে গেলেই কেবল ব্যবহার করে থাকে। ‘‘আজ আর হবে না। বার বন্ধ হয়ে গেছে। ’’
‘‘আরেকটা চাই,’’ বুড়ো মানুষটি বললেন।
‘‘না।
শেষ। ’’ তোয়ালে দিয়ে টেবিলের প্রান্ত মুছতে মুছতে ওয়েটারটি কেজো ভঙ্গিতে মাথা নাড়ে।
বৃদ্ধ উঠে দাঁড়ান, স্তূপীকৃত পিরিচগুলো গুনে কতবার পানীয় নিয়েছেন তার হিসেব করেন, পকেট থেকে চামড়ার তৈরি মুদ্রার থলি বের করে পয়সা দেন। বকশিশ হিসেবেও আধ পেসেতা ধরে দেন।
ওয়েটারটি তাকিয়ে দেখল, মানুষটি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন, একজন বৃদ্ধের মতোই অশক্ত ভঙ্গিতে, কিন্তু একজন মর্যাদাবান মানুষের মতোও বটে।
‘‘তুমি ওকে আরও খানিকক্ষণ বসতে দিলে না কেন ? উনি আরো পান করতে চাইছিলেন না?’’ যে ওয়েটারটির বাড়ি যাবার তাড়া নেই, সে বলল। দু’জনে তখন ক্যাফের ঝাঁপ বন্ধ করতে লেগেছে। ‘‘এখনও আড়াইটে বাজেনি। ’’
‘‘আমি বাড়ি গিয়ে কেবল বিছানা নিতে চাই। ’’
‘‘আর এক ঘন্টা দেরি করলে কী এমন হত?’’
‘‘ওর জন্য কিছু ফারাক না হলেও আমার জন্য হত অবশ্যই।
’’
‘‘আরে, এক ঘন্টা সময়েরই তো ব্যাপার!’’
‘‘তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে, তুমিও আরেক বুড়ো বনে গেছ। তেমন ইচ্ছে হলে ও এক বোতল পানীয় কিনে বাড়িতে বসেও পান করতে পারে!’’
‘‘দু’টো অভিজ্ঞতা এক নয় যে রে!’’
‘‘না, তা অবশ্য নয়। ’’ বউ-পাগল ওয়েটারটি এ ব্যাপারে ঐকমত্য প্রকাশ করে। সে অন্যায় কোন বক্তব্য চাপিয়ে দিতে চায় না কারো ওপর। ওর কেবল একটু খানি আগে-ভাগে বাড়ি যাবার বাসনা।
‘‘আর তোমার কী ব্যাপার ? সময়ের আগে বাড়ি ফিরতে তোমার কি ভয় করছে ?’’
‘‘তুমি কি আমাকে অপমান করতে চাইছ ?’’
‘‘না হে, একটু তামাশা করলাম কেবল। ’’
‘‘না,’’ ক্যাফের ধাতব শাটারগুলি টেনে নামানোর কাজ শেষ করে উঠে দাঁড়িয়ে তরুণ ওয়েটারটি বলল, ‘‘আমার আত্মবিশ্বাসের অভাব নেই। আমি আত্মবিশ্বাসে ভরপুর যে!’’
‘‘তোমার রয়েছে অঢেল আত্মবিশ্বাস, যৌবনের প্রাচুর্য আর এই চাকরি,’’ অপেক্ষাকৃত বয়সী ওয়েটার বলে। ‘‘তোমার তো সবই আছে হে। ’’
‘‘আর তোমার ? তোমার কী নেই ?’’
‘‘কিছুই নেই।
কেবল কাজ ছাড়া আর কিছু নেই আমার। ’’
‘‘আমার যা আছে, তার সবই তোমার রয়েছে তো!’’
‘‘না। আত্মবিশ্বাস আমার কখনো ছিল না। আর, আমি তোমার মতো যুবকও নই। ’’
‘‘বাজে কথা।
ওসব বাদ দিয়ে এবার সব তালাবন্ধ কর। ’’
‘‘যারা এই ক্যাফেতে অনেক সময় কাটাতে চায়, আমি আসলে ওদের মতোই আরেকজন,’’ বয়স্ক ওয়েটার বলে।
‘‘যারা বিছানায় যেতে চায় না, আমি তাদেরই দলের। আমিও ওদের মতো আঁধারে আলো খুঁজে ফিরি। ’’
‘‘আর আমি বাড়ি গিয়ে কখন বিছানায় যাব, তারই অপেক্ষায় থাকি।
’’
‘‘আমরা দু’জনের ধরণ আসলে দু’রকমের,’’ বয়স্ক ওয়েটার বলে। সেও ইতোমধ্যে বাড়ি যাবার জন্য তৈরি হয়েছে, পোশাক বদলেছে।
‘‘এই পার্থক্য কেবল যৌবন আর আস্থাশীলতায় নয়- যদিও এই দু’টি প্রসঙ্গও সুন্দর আলোচনার বিষয়। প্রতি রাতেই যখন ক্যাফে বন্ধ করি, আমার ইচ্ছে করে, আরও একটুক্ষণ খোলা রাখি না কেন- কেউ না কেউ, কারো না কারো যদি এখানে কোন প্রয়োজন থেকে থাকে !’’
‘‘ওহে, সেজন্য তো হিস্পানি বোদেগাগুলি সারারাতই খোলা রয়েছে- মদ আর যাবতীয় মুদিয়ালি জিনিসপত্তর বিকোচ্ছে দেদার। ’’
‘‘তুমি ব্যাপারটা বুঝতে পারছ না।
আমাদের এটা অত্যন্ত পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর ক্যাফে। এটা সুন্দরভাবে আলোকিতও বটে। এখানে যেমন প্রচুর আলো, আবার গাছের পত্রাবলীর ছায়াও মিলছে তেমনি। ’’
‘‘শুভ রাত্রি,’’ তরুণ ওয়েটার বিদায় সম্ভাষণ জানাল।
‘‘শুভ রাত্রি, ’’ অন্যজন বলে।
বৈদ্যুতিক আলো নিভিয়ে সে আপনমনে আলাপ চালিয়ে যায়। হ্যাঁ, আলো দরকার, এরকম জায়গায় পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে আলো থাকাও জরুরি। তবে গান বাজনা চলবে না। এরকম জায়গায় অবশ্যই সঙ্গীত থাকবে না। এরকম সময়ে কোন পানশালায় বেশ মর্যাদাবান ব্যক্তির মতো গিয়ে দাঁড়ানোর উপায় নেই, যদিও এসময়ে করার মতো একটা কাজই হত বটে।
সে কিসের ভয়ে ভীত? না, কোন ভয় বা ভীতির ব্যাপার সেটা নয়। এ হচ্ছে এক অর্থহীনতা কেবল-সেটা সে ভালভাবেই জেনেছে। কোন কিছুরই কোন অর্থ নেই - যেমন, একজন মানুষও শুধুই আরেক অনস্তিত্ব কেবল। এই অর্থহীনতাই সকল কথার সার - দরকার কেবল আলো আর এক ধরনের নিয়মবদ্ধতা ও পরিচ্ছন্নতা। কেউ কেউ এরকম পরিবেশে জীবনযাপন করেও এর কিছুই উপলব্ধি করতে অক্ষম।
কিন্তু সে এটা ভাল করেই বুঝেছে যে, এর সব কিছুই অর্থহীন এবং আরো অর্থহীন ও আরো, আরো নঞর্থক। হে অর্থহীনতা, আমাদের দৈনন্দিন এই অর্থহীনতা থেকে মুক্তি দাও, যাতে আরো, আরো অর্থহীনতায় আমাদের অর্থহীন উত্তরণ ঘটে। সে স্মিতমুখে বার এর ঝক্ঝকে স্টীম প্রেশার কফি ম্যাশিনের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
‘‘তোমাকে কী দেব ?’’ বারম্যান জিজ্ঞেস করে।
‘‘কিছু নয়।
’’
‘‘এই আরেক পাগল,’’ বলে বারম্যান ঘুরে দাঁড়ায়।
‘‘দাও ছোট কাপের এককাপ,’’ ওয়েটার অগত্যা বলে ওঠে। বারম্যান কফি ঢেলে এগিয়ে দেয় তাকে।
‘‘এখানে আলোর ব্যবস্থা উজ্জল ও মনোরম বটে। কিন্তু তোমার বার-এ পালিশের অভাব প্রকট,’’ ওয়েটার বলল।
বারম্যান ওর দিকে তাকাল মাত্র, কোন উত্তর দিল না। এতরাতে আর তার কথাবার্তা বলতে ইচ্ছে করছে না।
‘‘তোমাকে আরেক কাপ কফি দেব?’’ বারম্যান ওয়েটারকে জিজ্ঞেস করে।
‘‘না, ধন্যবাদ,’’ বলে ওয়েটার বেরিয়ে যায়।
বার এবং বোদেগা তার অপছন্দের জায়গা।
হ্যাঁ, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দরভাবে আলোকিত ক্যাফে হলে অন্য কথা। না, আর কোন ভাবনা নয় এখন। সোজা বাড়িতে যাবে সে। ঘরে বিছানায় শুয়ে অপেক্ষা করবে ভোরের-আলো ফুটলেই সে ঘুমিয়ে পড়বে। যে যাই বলুক, সে আপনমনে উচ্চারণ করে, এসমস্তই হয়তো নিদ্রাহীনতার কারণে।
অনেকেই তো নিদ্রাহীনতায় ভোগে।
প্রকাশিত হয়েছে শাশ্বতিকীর অনুবাদ সংখ্যা
পাওয়া যাচ্ছে
লিটল ম্যাগ কর্নার, প্রথমা, তক্ষশিলা, জনান্তিক
আজিজ সুপার মার্কেট, শাহবাগ, ঢাকা।
বাতিঘর
মোমিন রোড, চেরাগীর মোড়
চট্টগ্রাম।
বিশদ বাঙলা
মেহেদিবাগ (বড় মসজিদ সংলগ্ন)
চট্টগ্রাম
বইপত্র
৯০ রাজা ম্যানশন (দোতলা)
জিন্দাবাজার, সিলেট।
রাইয়ান রাজী
মেলাঘর, প্রান্তিক গেট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
একুশে নিউজ কর্নার
খুলনা।
যশোর :
জেনারেল বুক ডিপো
সদর হাসপাতাল রোড, যশোর।
মিতালী লাইব্রেরী
কলেজ গেট, কোর্ট রোড
মৌলবীবাজার।
০১৭১৬-৭৬৭২৮৬
পড়ুয়া
থানা রোড, বগুড়া।
বুক পয়েন্ট
সোনাদিঘী মোড়, রাজশাহী
বই মেলা
এন এস রোড, কুষ্টিয়া
দোয়েল বুক হাউজ
মেহেরপুর।
টাউন লাইব্রেরি
ব্রিজের মোড়, নওগাঁ।
এছাড়াও পেতে পারেন কুরিয়ার/ডাক/ফ্লেক্সি যোগে ৫০/= টাকা পাঠিয়ে (আপনার ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। )
যোগাযোগ :
পাভেল ০১৭২৩ ২১০৩৭৩
রাতুল ০১৭১৭ ১২৫২৮৩
মোজাফফর হোসেন ০১৭১৭ ৫১৩০২৩
০১৭২৯ ০৯৩৭৭৮
shashwatiki.mywibes.com
সম্পাদক
মোল্লাভবন, রুম নং ৫২২/১৩২
সাহেব বাজার, রাজশাহী
বিস্তারিত
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।