আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সংবিধানঃ রাষ্ট্রের রক্ষাকবচ না শাসকের???

তুমি জেনেছিলে মানুষে মানুষে হাত ছুঁয়ে বলে বন্ধু; তুমি জেনেছিলে মানুষে মানুষে মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়, হাসি বিনিময় করে চলে যায় উত্তরে দক্ষিণে; তুমি যেই এসে দাঁড়ালে - কেউ চিনলো না, কেউ দেখলো না; সবাই সবার অচেনা।

ইদানীং সংবিধান সংশোধন কাহিনী নিয়ে মোটামুটি জলকেলি শুরু হয়েছে। তাই অচিরেই সংবিধানজনিত অধ্যয়নটা শেষ করলাম। মজা লাগলো, আমাদের দেশের দলগুলোর উপর ভবিষ্যতে মানুষের আস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটা কল্পনা করে। আশা রাখি, বাংলাদেশ অবশ্যই অচিরেই পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়াবে।

’৭২-এর মূল সংবিধানে ফিরে যাওয়া বা ’৭২-এর সংবিধান পুনঃস্থাপন একটি আলোচিত দাবি। আওয়ামী লীগ নানা সময়ে এ দাবি তুলেছে। ’৭২-এর সংবিধানে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক চেতনাকে শাসকশ্রেণী অস্বীকার করতে পারেনি। তারপরও বহু অসম্পূর্ণতা নিয়ে জারি করা ওই সংবিধান গত ৩৯ বছর ধরে নানা কায়দায় বিকৃত এবং নস্যাৎ করা হয়েছে। ৫ম সংশোধনী বাতিলের রায় ঘোষিত হওয়ার পর ’৭২-এর মূল সংবিধান কীভাবে পুনঃস্থাপিত হবে, ওই সংবিধানের অসম্পূর্ণতাগুলো দূর করা হবে কিনা তা নিয়েও জোর বিতর্ক চলছে।

সংবিধানের ইংরেজি প্রতিশব্দ কনস্টিটিউশন (constitution) যার আভিধানিক অর্থ হল গঠনতন্ত্র। অর্থাৎ রাষ্ট্রটি কিভাবে গঠিত এবং পরিচালিত হবে তা এখানে বিবৃত থাকে। সংবিধান রচিত হয় জনগণের আকাক্সক্ষার ভিত্তিতে। জনগণের আকাঙ্ক্ষা, অভিপ্রায় এবং অধিকারকে আইন রূপে হাজির করা হয় সংবিধানে। এটিই দেশের সর্বোচ্চ আইন, শাসকরা এর ভিত্তিতেই দেশ চালাবে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। এরও পেছনে আছে পাকিস্তানী স্বৈরশাসকদের ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২৩ বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রামের ধারাবাহিকতা। ফলে আমাদের সংবিধানে কিছু অসম্পূর্ণতা সত্ত্বেও আপেক্ষিক অর্থে জনগণের গণতান্ত্রিক আশা-আকাক্সক্ষা প্রতিফলিত হয়েছিল এবং তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকারও ঘোষিত হয়েছিল। বলা হয়েছিল যে শাসকগোষ্ঠি এর প্রতি অনুগত থাকবে। কিন্তু গত ৩৯ বছরে তা হয়নি।

দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর ‘জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা’কে রাষ্ট্রীয় ৪ মূলনীতি ঘোষণা করে প্রণীত এবং ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয় আমাদের সংবিধান। এরপর গত ৩৯ বছরে সংবিধানে ১৪ বার সংশোধনী আনা হয়েছে যায় প্রায় সবকটিই শাসকদের ইচ্ছা ও অভিলাষ পূরণ করা এবং তাদের ক্ষমতা নিরঙ্কুশ করার স্বার্থে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত, যার হাতে সংবিধান অক্ষুন্ন রাখার দায়িত্ব (অতীতে এ ভূমিকা আদালত কতটুকু পালন করেছে সেটা ভিন্ন বিতর্ক), সংবিধানের ৫ম সংশোধনী বাতিল করে দেয়া রায়ের মাধ্যমে একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। ৫ম সংশোধনীঃ- জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯৭৯ সালের ৫ ও ৬ এপ্রিল প্রণীত হয়েছিল সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী। এই সংশোধনী দ্বারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল তারিখের মধ্যে প্রণীত সকল সামরিক ফরমান, আইন ও বিধান সংবিধানের অঙ্গীভূত করা হয়।

এর মধ্যে শেখ মুজিবর রহমানসহ তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যদের হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার থেকে রেহাই দিয়ে খন্দকার মোশতাকের সময় জারিকৃত ইন্ডেমনিটি অর্ডিনেন্সও রয়েছে। পঞ্চম সংশোধনী দ্বারা একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা বাতিল করে বহুদলীয় ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করা হলেও দ্বিতীয় ও চতুর্থ সংশোধনী দ্বারা যেসব কালাকানুন প্রবর্তন করা হয়েছিল তা’ অক্ষত রয়ে যায়। বরং পূর্ববর্তী কালাকানুনের সঙ্গে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে সংযুক্ত সাম্প্রদায়িকতা মিলে সংবিধান আরও ভয়ঙ্কর মূর্তি ধারণ করে। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান ‘জয় বাংলা’ মুছে ফেলা হয়! প্রথমত, পঞ্চম সংশোধনী দ্বারা সংবিধানের প্রস্তাবনার শীর্ষে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজিত হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনার একটি মূলনীতি ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ পরিবর্তন করে তদস্থলে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহের উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ স্থাপন করা হয়েছে।

মূল সংবিধানে বলা হয়েছিল, “আমরা, বাংলাদেশের জনগণ, ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি; আমরা অঙ্গীকার করিতেছি যে, যে সকল মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহীদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল - জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ এই সংবিধানে মূলনীতি হইবে। ” সংশোধনীতে ‘জাতীয় মুক্তির’ স্থলে ‘জাতীয় স্বাধীনতা’ এবং ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বাতিল করে জাতীয়তাবাদের পূর্বে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ সংযোজন করা হয়েছে। এটা এমনভাবে যুক্ত করা হয়েছে যার অর্থ দাঁড়ায় ’৭১-এর যুদ্ধটা মুক্তিযুদ্ধ নয়, এক ধরনের ধর্মযুদ্ধ ছিল। একইসাথে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সম্পর্কে বলা হল যে, “সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসই হইবে যাবতীয় কার্যাবলীর ভিত্তি। ” মূল সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল যে, “ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি বাস্তবায়নের জন্য সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা, রাষ্ট্র কর্তৃক কোন ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার এবং কোন বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন বিলোপ করা হবে।

” এই অনুচ্ছেদটি বাতিল করা হয়। মূল সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদের শর্তাংশে বলা হয়েছিল, “তবে শর্ত থাকে যে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যসম্পন্ন বা লক্ষানুসারী কোন সাম্প্রদায়িক সমিতি বা সংঘ কিংবা অনুরূপ উদ্দেশ্য সম্পন্ন বা লক্ষানুসারী ধর্মীয় নামযুক্ত বা ধর্মভিত্তিক অন্য কোন সমিতি বা সংঘ গঠন করিবার বা তাহার সদস্য হইবার বা অন্য কোন প্রকারে তাহার তৎপরতায় অংশগ্রহণ করিবার অধিকার কোন ব্যক্তির থাকিবে না। ” এই অনুচ্ছেদটিও বাতিল করা হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর সহযোগীরা মূল সংবিধান অনুসারে সংসদ সদস্য হতে পারতো না। পঞ্চম সংশোধনী দ্বারা ওই বিধানটি রদ করা হয়! যেন বাংলাদেশ স্বাধীন হলো বর্বর যুদ্ধাপরাধীদের দ্বারা আর একবার শোষিত হতে! এছাড়া বিচার বিভাগ সম্পর্কিত দুটো সংশোধনী আনা হয়েছিল।

ওই সংশোধনীতে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে বাতিল করে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ স্থাপন করা হয় এবং বাংলাদেশের জনগণের নাগরিকত্ব বাংলাদেশী হিসাবে উল্লেখ করা হয়। ৫ম সংশোধনী বাতিল হলেই কি সংবিধান গণতান্ত্রিক হয়ে যাবে?- সংবিধানের ২য়, ৫ম, ৮ম সংশোধনী বহাল থাকলে এ সংবিধানের কোনো গণতান্ত্রিক চরিত্র থাকবে না, এর সাহায্যে গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠাও সম্ভব হবে না। সংক্ষেপে কিছু বিষয় উল্লেখ করা হল। ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে যে সংবিধান বাংলাদেশে বলবৎ হয়েছিল, তা অক্ষত অবস্থায় এক বছরও অতিক্রম করতে পারে নি। সংবিধান জারির সাত মাসের মাথায় ১৯৭৩ সালের ১৫ জুলাই থেকে সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী কার্যকর হয়।

এই দ্বিতীয় সংশোধনী দিয়ে সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকারের রক্ষাকবচ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। মূল সংবিধানের তৃতীয়ভাগে ২৬ থেকে ৪৭ (ক)অনুচ্ছেদ পর্যন্ত মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত বিষয়গুলি লিপিবদ্ধ আছে। এখানে বলা আছে, রাষ্ট্র নাগরিকদের কোন কোন অধিকারের নিশ্চয়তা দেবে। যদিও ওই অনুচ্ছেদসমূহে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও কাজ-কে মৌলিক অধিকার হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি। এটা আমাদের সংবিধানের একটা বড় দুর্বলতা।

যা হোক, মূল সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, ওই সমস্ত মৌলিক অধিকার অলঙ্ঘনীয়। অর্থাৎ দেশে এমন কোনো আইন থাকতে পারবে না বা ভবিষ্যতেও প্রণয়ন করা যাবে না যা ‘মৌলিক অধিকারে’র পরিপন্থী। এই বিধানের বদৌলতে ইংরেজ ও পাকিস্তানী আমলে প্রণীত সকল অগণতান্ত্রিক কালাকানুন আপনাআপনি বাতিল হয়ে যাবে। সেই সাথে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মতলব খারাপ হলেই তারা তাদের ইচ্ছামত এমন কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারবে না যা সংবিধানের তৃতীয় ভাগে বর্ণিত কোনো মৌলিক অধিকার খর্ব করতে পারে। তাই মূল সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদ মৌলিক অধিকার সুরক্ষার এমন এক দুর্ভেদ্য প্রাচীর গড়ে তুলেছিল যে, ৩৩০ জন সাংসদ একত্রে মিলেও মৌলিক অধিকারের বুকে একটা আঁচড়ও কাটতে পারতেন না।

কিন্তু এহেন দুর্ভেদ্য প্রাচীরের স্থায়ীত্ব ছিল মাত্র সাত মাস। দ্বিতীয় সংশোধনী ওই প্রাচীরের গায়ে একটা বিরাট ফাটল ধরিয়ে দেয়, কালাকানুন জারির সিংহদ্বার খুলে দেয়। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ২৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে বলা হলো, “সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের অধীনে প্রণীত সংশোধনের এই অনুচ্ছেদের কোন কিছুই প্রযোজ্য হবে না। ” এর মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করে মৌলিক অধিকার পরিপন্থী আইন প্রণয়ন করার ক্ষমতা সংসদকে দেয়া হল। অর্থাৎ সংবিধানের অন্যান্য অনুচ্ছেদ যেমন সংশোধন করা যায় তেমনি মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলিও সংশোধন করা যাবে।

এই সংশোধনের ফলে সংশ্লিষ্ট মৌলিক অধিকারটি যদি কার্যত নাকচ হয়েও যায়, তাতেও কিছু মাত্র অশুদ্ধ হবে না। ফলে আগে যেখানে আঁচড় কাটার পর্যন্ত ক্ষমতা ছিল না, সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনী সেখানে মৌলিক অধিকারের বুকে ছুরি চালাবার ক্ষমতা দিয়ে দিল। এই দ্বিতীয় সংশোধনীর ফলেই ১৯৭৪ সালে নিবর্তনমূলক আটকের বিধান সম্বলিত বিশেষ ক্ষমতা আইন প্রণীত হয়। এই আইনে যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার ও বিনাবিচারে বছরের পর বছর আটক রাখা যায়। ফলে মূল সংবিধানে ৩৩ অনুচ্ছেদে বর্ণিত গ্রেফতার ও আটক সম্পর্কে রক্ষাকবচ বাস্তবে নাকচ হয়ে গেল।

ওই একই (দ্বিতীয়) সংশোধনীর দ্বারা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিধান সন্নিবেশ করা হয়। রাষ্ট্রপতি যদি মনে করেন দেশ বহিঃশত্রু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে বা দেশে গোলযোগ সংঘটিত হবার সম্ভাবনা আছে তবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন এবং বাংলাদেশের মানুষের মৌলিক অধিকার বলবৎ করার অধিকার স্থগিত করতে পারবেন। জরুরি অবস্থার সময় মানুষের চলাফেরা, সমাবেশ, সংগঠন, ভাব প্রকাশ, পেশা গ্রহণ এবং সম্পত্তি অর্জনের মৌলিক অধিকার খর্ব করে আইন করা যাবে। ওই সময় আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের সাথে ২৫ বছরের অনাক্রমণ চুক্তি কার্যকর ছিল। ফলে বহিঃশত্রুর আক্রমণ ছিল একটা ফাঁকা কথা।

বাস্তবে দেশের অভ্যন্তরে গণআন্দোলন দমন করার উদ্দেশ্য ছাড়া জরুরি অবস্থার বিধান যুক্ত করার আর কোনো কারণ ছিল না। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি প্রণীত হয়েছিল সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭২ সালের সংবিধানের চেহারা আমূল পাল্টে দেয়া হয়েছিল। সংসদীয় পদ্ধতির পরিবর্তে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার পদ্ধতির প্রবর্তন করা হয়। রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ - শাসন বিভাগ, আইনসভা ও বিচার বিভাগের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে কেন্দ্রীভূত করে একটা ফ্যাসিবাদী শাসন সেদিন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।

বিশিষ্ট আইনজ্ঞ প্রয়াত গাজী শামছুর রহমান চতুর্থ সংশোধনীতে দেয়া রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সম্পর্কে মন্তব্য করে লিখেছেন, “মানুষের ক্ষমতার মধ্যে যা কিছু পড়ে, তার সবই তিনি করতে পারেন। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ক্ষমতার ব্যাপারে একটি প্রবাদ আছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট একমাত্র পুরুষকে নারী এবং নারীকে পুরুষ বানানো ছাড়া, আর সবকিছু করতে পারে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা প্রায় এই রকম। ” এই চতুর্থ সংশোধনীর দ্বারা রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমে দেশে একটা মাত্র রাজনৈতিক দল হিসাবে একটা জাতীয় দল গঠন ও পরিচালনার ক্ষমতাও দেয়া হয়েছিল।

যার ভিত্তিতে মুজিব সরকার সব দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠন করেছিল। ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর প্রণীত হয় সংবিধানের সপ্তম সংশোধনী। এর দ্বারা ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ থেকে এই সংশোধনী জারির দিনের মধ্যে সকল সামরিক ফরমান, আদেশ, প্রবিধান, নির্দেশ, অধ্যাদেশ অনুমোদন ও সমর্থন করা হয়। অর্থাৎ এই সংশোধনীর দ্বারা সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের সকল বর্বরতা ও জালিয়াতিকে সংবিধান-সম্মত করে নেওয়া হয়। অষ্টম সংশোধনী ১৯৮৮ সালের ৯ জুন বলবৎ হয়।

এই সংশোধনী দ্বারা দু ’টি পরিবর্তন করা হয়। প্রথমত, সংবিধানে একটা নতুন অনুচ্ছেদ সংযোজন করে বলা হয় যে, ইসলাম প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে। দ্বিতীয়ত, সংশোধনীর সাহায্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছয়টি হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থাপন করা হয়। এই দ্বিতীয় পরিবর্তন সুপ্রীম কোর্ট অনেক আগেই নাকচ করে দিয়েছে। রায় কার্যকর ও সংশোধনী নিয়ে বিতর্ক : আপিল বিভাগ তার রায়ে সংবিধানের প্রস্তাবনাকে বলছেন ‘ধ্রুবতারা’।

প্রস্তাবনা হল সংবিধানের অন্যতম মৌলিক কাঠামো, এটা রাষ্ট্র ও জনগণকে পথ দেখায়। রায়ে বলা হয়েছে, ‘প্রস্তাবনা সংবিধানের নিছক শোভা নয়। জনগণ কী আকাক্সক্ষা ও উদ্দেশ্য নিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির পত্তন করেছিল সেটাই সংবিধানের প্রস্তাবনা বিধায় সেটা পরিবর্তন যোগ্য নয়। ’ সংবিধান সংশোধন নিয়েও একটি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। রায়ে বলা হয়েছে, ‘সংশোধন’ শব্দটিতে এটাই বোঝায় যে আদি দলিলের বৈশিষ্ট্যের অনুসরণে সংযোজন অথবা পরিবর্তন, যার ফলাফল হবে উৎকর্ষসাধন অথবা যে উদ্দেশ্যে প্রণীত সেটা অধিক কার্যকর করা।

এর ভিত্তিতে এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, ’৭২-এর সংবিধানে ঘোষিত মূল চার নীতি- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাই হবে বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতি বা রাষ্ট্রীয় মূলনীতি। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে বিষয়গুলো সম্পর্কে এ ধরনের স্পষ্ট বক্তব্য থাকার পরও সংবিধান সংশোধন নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কিন্তু এসব বিতর্কের প্রায় সবটাই সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে, জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ও চেতনার প্রশ্নে নয়। যেমন শেখ হাসিনা আগ বাড়িয়ে বলছেন যে তার সরকার ‘বিসমিল্লাহ’ বাতিল করবেন না, এমনকি রাষ্ট্রধর্মও বাতিল করবেন না। ‘বিসমিল্লাহ’ বা ‘রাষ্ট্রধর্ম’ কি আমদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা? সংবিধান কি কোনো ধর্মগ্রন্থ? নাকি শুধু ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের জন্য রচিত হয়েছে? বাংলাদেশের মানুষ কি একটি ধর্মরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিল? এসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর শেখ হাসিনা বা তার কথায় যারা পোঁ ধরেন তাদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে না।

এমনকি বিরোধীদলগুলোও এব্যাপারে মুখ খুলবে না! কারণ ধর্মকে ব্যবহার করেই তারা ক্ষমতায় আরোহণের পথ সুপ্রশস্ত করে। অন্যদিকে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধের বিষয়ে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন বাতিল করবে। এ বিষয়ে সরকারের কোনো কিছু করার নেই। অন্যদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা জানিয়েছেন, কমিশন কোনো দলের নিবন্ধন বাতিল করবে না। সরকার যেসব দল নিষিদ্ধ করবে কমিশন শুধু তাদের নিবন্ধন বাতিল করবে।

বোঝাই যাচ্ছে, সরকার এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো অবস্থান নিতে নারাজ। এছাড়াও, ৫ম সংশোধনীর বাইরে সংবিধানের আরো যেসব অগণতান্ত্রিক সংশোধনী আছে (সংক্ষেপে হলেও সেগুলো উল্লেখ করেছি), সংবিধানের মৌলচেতনার সাথে পরিপন্থী যেসব ধারা-উপধারা আছে সেগুলোর কি হবে? ভবিষ্যতে যাতে সামরিক শাসন জারি করতে না পারে সেজন্য আদালত সামরিক শাসন জারিকে অবৈধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে উল্লেখ করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, অতীতে যারা সামরিক শাসন জারি করেছিল, যেমন ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি এবং জেনারেল এরশাদ, তাদের কি বিচার হবে? বিভিন্ন সময় যারা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে (নির্বাচিত হোক কিংবা অনির্বাচিত) তাদের বিষয়ে কি হবে, এ নিয়ে কারো কোনো কথা নেই। সংবিধান লঙ্ঘন ও শাসকদের জবাবদিহি - আমাদের সংবিধানে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও কাজ ইত্যাদি মৌলিক অধিকারকে অঙ্গীকারের পর্যায়ে রাখা হয়েছে, সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। এটা একটা বড় দুর্বলতা।

কিন্তু বিশ্বের বহু দেশে এ নজির রয়েছে যে রাষ্ট্র শুরুতে সংবিধানে ঘোষিত মৌলনীতিগুলোকে ধীরে ধীরে মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেয় এবং সংবিধানে তাকে অন্তর্ভুক্ত করে। আমাদের শাসকরা তো করেই নি উপরন্তু বিভিন্ন অঙ্গীকারকে পায়ে দলে চলেছে। সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদের ‘ক’ ধারায় বলা আছে, রাষ্ট্র আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সর্বজনীন বৈষম্যহীন একমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করবে। অথচ দেশে চলছে তিন ধারার শিক্ষাব্যবস্থা। সংবিধানের ২০ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্র এমন অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করবে, যেখানে সাধারণ নীতি হিসাবে কোনো ব্যক্তি অনুপার্জিত আয় ভোগ করতে সমর্থ হবে না।

অথচ স্বাধীনতার পর থেকেই অনুপার্জিত আয় তথা কালো টাকাকে সাদা করার বিধান প্রতি বাজেটেই করা হচ্ছে। এই নিয়ে বিএনপি, ধর্মপ্রাণ জামায়াত বা আওয়ামী লীগ কোনো সরকারেরই মাথা ব্যাথা নাই। কারণ, তাদের জন্য কালো টাকা সাদা করার সুযোগের দরকার আছে বইকি! এসময় সবই হালাল! ১৫ নং অনুচ্ছেদে পরিকল্পিত অর্থনীতির মাধ্যমে জনগণের আর্থিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতি বিধান, জীবনের মৌলিক চাহিদা খাদ্য, পোষাক, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা এবং কাজের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং যুক্তিসঙ্গত মজুরি প্রতিষ্ঠার কথা বলা আছে। অথচ শাসকরা চালু করেছে মুক্তবাজার অর্থনীতি! কাজের অধিকার দেয়া দূরে থাক, শিল্প-কারখানা-ব্যাংক-বীমা বন্ধ করে বা বিরাষ্ট্রীয়করণ (বেসরকারিকরণ) করে চলছে শ্রমিক ছাঁটাই। বেকারদের ভাতা দেয়া এবং অসুস্থ, পঙ্গু , বিধবা, এতিম, বৃদ্ধ ইত্যাদি অসহায় মানুষকে রাষ্ট্রীয় ভাতা ও বিবিধ সাহায্য প্রদানের কথা বলা আছে যার কোনো বাস্তবায়ন নেই।

সংবিধানের ১৮ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্র পতিতালয় ও জুয়া বন্ধের কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। অথচ বাংলাদেশে পতিতাবৃত্তিকে আইনসঙ্গত করে রাখা হয়েছে। জুয়াকেও আইনি বৈধতা দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ২৫ নং অনুচ্ছেদে বলা আছে যে রাষ্ট্র সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ বা বর্ণবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সর্বত্র নিপীড়িত জনগণের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামকে সমর্থন দেবে। অথচ ইঙ্গ-মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ইরাক আগ্রাসন ও দখল করার পরও সরকারি প্রতিবাদ বা পার্লামেন্টে কোনো নিন্দা প্রস্তাব পর্যন্ত উত্থাপিত হয়নি।

সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদের ‘ক’ ধারায় বলা আছে, প্রত্যেক ব্যক্তির অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রকাশ্য আদালতে দ্রুত বিচারের অধিকার থাকবে। অথচ র‌্যাব-চিতা-কোবরা বাহিনী ‘ক্রসফায়ারে’র নামে চালাচ্ছে বিচারবহির্ভূত খুন। পুলিশও এই ‘ক্রসফায়ার’ ‘এনকাউন্টার’ নাম দিয়ে নির্বিচারে খুন চালিয়ে যাচ্ছে। এইভাবে ১১, ১৩(ক), ২৯(২)-সহ অসংখ্য ধারা লঙ্ঘন করেই অতীত ও বর্তমান সরকার দেশ চালিয়েছে এবং চালাচ্ছে। এর বাইরে বিশেষ ক্ষমতা আইন ’৭৪, বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৫০৫ (ক) ধারা, ফৌজদারি কার্যবিধির ৯৯ (ক) ধারা, ৫৪ ধারা, ডিএমপি ৮৬ ধারা, সন্ত্রাস দমন অধ্যাদেশ, অর্পিত (শত্রু) সম্পত্তি আইন ইত্যাদি কালাকানুন বহাল রয়েছে।

যেমন, ফৌজদারী কার্যবিধির ৯৯(ক) ধারা এবং দন্ডবিধির ৫০৫(ক) ধারার সাহায্যে কোনো আদালতে প্রমাণিত হওয়ার আগেই সরকার যে কারো কণ্ঠরোধ করতে পারে, মতপ্রকাশের অধিকার হরণ করতে পারে। ৫ম সংশোধনী বাতিলের রায়ে উচ্চ আদালত যখন অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় ‘সব ধরনের সংবিধান বহির্ভূত কর্মকাণ্ডকে চিরকালের জন্য বিদায়’ জানানোর কথা বলছে তখন স্বাভাবিকভাবেই এ দাবিও ওঠে যে সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে অতীতের প্রতিটি সরকারকেই আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে, একই সাথে বর্তমানে ও ভবিষ্যতে যারাই সংবিধান লঙ্ঘন করছে এবং করবে তাদেরকেও বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। সংবিধানের গণতন্ত্রায়ন হবে কিনা?- গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর পক্ষ থেকে যখন ’৭২-এর মূল সংবিধান পুনঃস্থাপন করার কথা বলা হয় তার অর্থ হল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মৌলচেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংবিধানের ২য়, ৪র্থ, ৫ম, ৭ম এবং ৮ম সংশোধনী বাতিল করা। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সংবিধানের ‘প্রস্তাবনা’ এবং ‘সংশোধন’ সম্পর্কে যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তার ভিত্তিতে একথা বলা যায় যে, সংবিধানে এমন কোনো বিধান থাকতে পারে না বা যুক্ত হতে পারে না যা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতির সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ। ফলে দ্বিতীয় সংশোধনী যার মাধ্যমে মৌলিক অধিকার পরিপন্থী আইন প্রণয়ন করা যাবে, বা জরুরি অবস্থা জারি করা যাবে - এসব সংশোধনী কিছুতেই বহাল থাকতে পারে না।

কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো শুধু মঞ্চেই গণতান্ত্রিক এবং মানবতাবাদী! নিজদলীয় স্বার্থে এবং অবশ্যই একে অপরের স্বার্থ রক্ষায় তারা গণতান্ত্রিক অধিকারসহ সংবিধানকেও বারবার পদদলিত করতে কুন্ঠাবোধ করে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে গণতন্ত্র সম্পর্কে যাই বলা থাকুক না কেন, সেদেশে সামরিক শাসন জারির ঘটনা না ঘটলেও মার্কিন দেশের মানুষ এবং দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে মার্কিন আগ্রাসনের শিকার দেশগুলোর মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন মার্কিন গণতন্ত্রের স্বাদ! বাংলাদেশেও আমরা এর লক্ষণই দেখছি। একদিকে সংবিধানের অলঙ্ঘ্যনীয়তার কথা বলা হচ্ছে, আরেক দিকে শ্রমিকের মনুষ্যোচিত মজুরির সাংবিধানিক অধিকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মালিকগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে গার্মেন্টস শ্রমিকরা যখন রাস্তায় নামছে তখন তাদের ওপর র‌্যাব-পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে, হুলিয়া জারি করে, গ্রেফতার করে আন্দোলন দমন করা হচ্ছে। এমন অবস্থা তো সমস্ত ক্ষেত্রেই।

কিন্তু এরা মনে হয় ভুলে গেছে, গণআন্দোলন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের একমাত্র রক্ষাকবচ। গণআন্দোলন দমিয়ে রাখা যায় না, ১৯৭১ ই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।