আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শিক্ষক যখন ধর্ষক

স্বাধীনভাবে কথা বলতে চাই।

সিরিয়াল ধর্ষক পরিমল , কুষ্টিয়ার হেলাল উদ্দিন পান্নার পর এবার দিনাজপুরে গ্রেপ্তার হয়েছেন শিক্ষক তসলিম উদ্দিন। প্রাইভেট ও কোচিং করানোর সুযোগে প্রলোভন ও ভয় ভীতি দেখিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক তৈরির অভিযোগ আছে উপরে উল্লেখিত এই সকল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, গোপন ভিডিও ক্যামেরায় অশ্লীল চিত্র ধারন করে তা ইন্টারনেট এ ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে দিনের পর দিন বাধ্য করা হয়েছে যৌন সম্পর্ক চালিয়ে যেতে। কতটা নিচে নেমে গেছি আমরা ভাবতেই খুব খারাপ লাগে।

আরও খারাপ লাগে যখন দেখি যে, এইসব পরিমলদের দৃষ্টান্তমূলক কোন শাস্তি হচ্ছেনা। এই অভিযুক্তদের প্রত্যেকেই যাদেরকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে তারা ক্লাস ৮, ৯, ১০ এর ছাত্রী এবং অভিযুক্তদের প্রত্যেকেই একাধিক সংখ্যক ছাত্রী কে ধর্ষণ করেছে। এতগুলো মেয়ের জীবন কে তারা যৌবনে উন্নীত হবার আগেই তারা নষ্ট করে দিয়েছে। ছিঃ কতটা লজ্জার ব্যাপার এই মেয়েগুলোর নষ্ট হয়ে যাওয়া জীবন তো আমরা ফিরিয়ে দিতে পারিইনি, পারিনি তাদের কে অন্তত ন্যায় বিচার টুকু দিতে। এই শিক্ষক নামধারী শয়তানগুলো ধরা পড়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি, খুঁজলে এরকম আরও অনেক হয়ত বের হবে।

তবে আমি মন থেকে চাই এরকম যেন না ঘটে। আমার এক কলিগ সেইদিন অফিসে এই ব্যাপারটা নিয়ে আলাপের সময় হঠাৎ বলল “ আরে ভাই, আজকালকার মেয়েরা ক্লাস ৫ থেকেই পাকনা হয়ে যায়, over smart হয়ে যায়, এই জন্যই এই ধরনের ঘটনা হচ্ছে। ” আমি তার কথা শুনে খুবই অবাক হয়েছিলাম কিছু বলব ভাষাই খুঁজে পাচ্ছিলামনা। এই যদি হয় আমাদের so called শিক্ষিত মানুষের ধারনা তাহলে কি আর কিছু বলার থাকে?? অনেক বাক্য হাতড়ে শুধু এটুকুই বলেছিলাম, ভাই যত over smart ই হোক না কেন কোন ক্লাস ৫ অথবা ৮,৯,১০ এর মেয়ে কখনই একজন ৪০(চল্লিশ) বছর বয়সী লোক তাও যে কিনা তার শিক্ষক তার সাথে দিনের পর দিন স্বেচ্ছায় কখনো এইসব করবেনা। আপনারা কি বলেন?? আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে যেটা মনে হয়েছে যে আমার ঐ কলিগ এর এমনটা ভাবার পিছনেও কারন আছে।

কারণটা হল আজকাল আমরা যে কোন কিছু ঘটতে দেখলে বা শুনলে ঐ ধরনের সব কিছুকেই আমরা একই পাল্লায় ফেলে দেই এবং একই রকম ভাবে বিচার করি। যেমনঃ সে হয়ত কোন ক্লাস ৫ অথবা ৮,৯,১০ এর মেয়েকে oversmart দেখেছে এতেই সে ভেবে নিয়েছে যে আজকাল এই বয়সী মেয়েরা খারাপ হয়ে গেছে এবং কম বেশি সবাই এরকম। নারে ভাই ব্যাপার তা নয়। এই বয়সী ছেলে মেয়েরা অনেক উচ্ছল থাকে, অনেক চঞ্চল থাকে, তাদের সেই ম্যাচুরিটি নেই যে তারা খুব ধীর স্থির হয়ে খুব বিজ্ঞ্যের মত সিদ্ধান্ত নিবে। তাদের এটাকে যদি আমরা মনে করে নেই যে “ আরে এই মেয়ে তো খুব চালু, এ বোধহয় don’t mind type, এর সাথে একটু মজা করে নেয়া যায়।

” এটা না ভাই। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ এমনটা ভেবেননা। আর বাবা মা দের প্রতি আমার অনুরোধ আপনার সন্তান সে ছেলেই হোক আর মেয়েই হোক তার দিকে খেয়াল রাখুন, তার প্রবলেমগুলো মন দিয়ে শুনুন, তাকে insecure feel করতে দিয়েননা, বিশেষ করে লক্ষ্য রাখুন তার বন্ধু এবং তার কোচিং অথবা প্রাইভেট টিচার এর প্রতি তবে অবশ্যই তাকে তা না বুঝতে দিয়ে। আরেকটা জিনিস আমরা আমাদের বাচ্চাদের শেখাবো সেটা হল, বড়দের আমরা সম্মান করব কিন্তু তাদের খারাপ আচরন কে আমরা সম্মানের নামে প্রশ্রয় কনভাবেই দিবনা। সেদিন “সময়” টিভিতে একজন মনোবিজ্ঞানীর সাক্ষাৎকার শুনছিলাম, ওনার একটা কথা আমার খুব ভাল লেগেছে, উনি বলেছিলেন “ আমরা বাচ্চা হওয়ার আগে অনেক প্রস্তুতি নিই, কিন্তু আমরা কি কখনো একজন ভাল বাবা মা হওয়ার প্রস্তুতি নিই??” আর সবশেষে বলতে চাই, এখনও সময় আছে আমাদের হাতে, আর যেন কোন মেয়েকে এভাবে তার শিক্ষকের কাছে এভাবে নষ্ট হতে না হয়।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.