টুকলিফাই মারাই আমাদের কাজ, চুরা ছেঁচা দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।
মন্তব্যঃ এই হলো বাংলাদেশের ছাত্র শিক্ষক ও রাজনৈতিক দলের যোগফল।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম আবাসিক হলে গতকাল রোববার দুপুরে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে পেটানোর পর দোতলা থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী সন্ধ্যার দিকে তাঁকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করা হয়।
এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নাসরুল্লাহ নাসিম নামের ছাত্রলীগের ওই কর্মী সদ্য স্থগিত ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলামের সমর্থক। সভাপতি আওয়াল কবিরের সমর্থকেরা নাসিমকে দোতলা থেকে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাসিম ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক মির্জা ওয়াজেদ হোসেন বেগ প্রথম আলোকে বলেন, নাসরুল্লাহ নাসিম মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। এ কারণে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য আবাসিক হলের মতো এসএম হলেও রোববার রাতে বিশেষ খাবারের আয়োজন করার কথা ছিল। এতে অংশ নেওয়ার জন্য হল প্রশাসনের উদ্যোগে সকাল থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশেষ টোকেন বিতরণ শুরু হয়। দুপুর ১২টার দিকে সভাপতি আওয়াল কবিরের সমর্থক জাহিদ, জহুরুল, মশিউর, তৌফিক ও রুহুল আমিন হলের সেকশন অফিসার সিদ্দিকুর রহমানের কাছে ১০-১২টি টোকেন দাবি করেন।
সিদ্দিকুর রহমান হল প্রাধ্যক্ষের অনুমতি নিতে হবে বলে তাঁদের জানিয়ে দেন। এ সময় নাসরুল্লাহ নাসিম ওই কক্ষে ছিলেন। নাসিম সেকশন অফিসারের কথাকে সমর্থন করলে সভাপতি পক্ষের ওই পাঁচজন বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে বাগিবতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তাঁরা নাসিমকে হলের দোতলায় নিয়ে যান। সেখানে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে এবং পেটে ছুরিকাঘাত করে দোতলা থেকে নিচে ফেলে দেন।
এতে নাসিমের মাথা ফেটে যায় এবং বুকে, পেটে ও মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত লাগে। হলের আবাসিক ছাত্ররা অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে নাসিমকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। নাসিমের সহপাঠী জসীম উদ্দিন জানান, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী সন্ধ্যার দিকে তাঁরা নাসিমকে নিয়ে ঢাকায় রওনা হন। তখন পর্যন্ত নাসিমের জ্ঞান ফেরেনি।
এদিকে ক্যাম্পাসে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন আবাসিক হলে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সমর্থকেরা এসএম হলের দিকে যেতে থাকেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসএম হল কর্তৃপক্ষ হলের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ সময় হলের সামনে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরে পুলিশ এসএম হলের বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালায়। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রুহুল আমিন ও সাঈদ আক্তার নামের ছাত্রলীগের দুজন কর্মীকে আটক করা হয়।
তাঁরা দুজনেই রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং সভাপতি আওয়াল কবিরের সমর্থক বলে জানা গেছে।
যোগাযোগ করা হলে আওয়াল কবির দাবি করেন, ‘এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নয়। কেউ যদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে চলে, তবে আমাদের কিছু করার নেই। ’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের জানান, দুজনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।