আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অসাধারন এক ভয়ের গল্প

অনেক দিন পর আবার ব্লগে ...

কিছুদিন যাবত মনটা খুব উসখুস করতাছিলো এই ইটের খাঁচাটা থেকে বাইর হইয়া দূরে কোথাও উধাও হয়ে যাই । তাই যহন ফেসবুকে আমার ভাইলোগদের স্ট্যাটাস দেখলাম আর থাকতে পারলাম না । গাট্টিবোচকা বাইন্ধা বাইর হয়া পরলাম তাগো লগে । শুরু হইল জীবনের অন্যতম রোমাঞ্ছকর যাত্রা । আমার লগে আসিল আরও আট পাপী ।

পরথমে ভালাই লাগতাসিল । কিন্তু যেই হুনলাম পাহাড়ি নদীতে নৌকা দিয়া যাওন লাগব আমার পরান পাখি আকুপাকু করতে লাগল। হায় হায় আমি তো সাঁতার পারি না । এইন্দা আবার চিন্তা করতাসি বাইর হইলাম এতদিন পর শেষ পর্যন্ত যামুই যামু । ভয় যে খাইসি এইডা কাউরে বুজতে না দিয়া বাপ মার দেয়া নামডা বি ডি আর এর খাতায় এন্ট্রি করাইয়া নৌকায় উইঠা পরলাম।

আমার আবার ভয় পাইলে খিদা বেশি লাগে। কিন্তু আসেপাশের সৌন্দর্য দেইক্ষা খিদাও পলাইসে। অসাধারন সুন্দর একটা নদী। প্রচন্ড স্রোত, কিন্তু তার চেয়েও প্রচন্ড তার দুই ধার। সবুজ আর সবুজ।

ভয় যে পাইসি পাইসিই... ঠিক করলাম নদীর পানির দিকে না তাকাইয়া সবুজ দেখমু । পেটটা ভইরা সবুজ দেখতে দেখতে পউছাইলাম তিন্দুতে...একপ্রস্থ ইন্টারভ্যাল হইল। তিন্দু খুব ছোট একটা গ্রাম। কয়েকটা পাড়া আছে। মারমা উপজাতীদের গ্রাম।

ঘুরে ঘুরে দেখলাম কিছুক্ষন। কয়েকটা ছবিও খিচলাম। তারপর লাফাইতে লাফাইতে গিয়া নৌকায় উঠলাম। তখন ত আর জানতাম না সামনে আর ও ভয়ঙ্কর স্রোত আরও ভয়ঙ্কর সুন্দর পাহাড়। সত্যি কথা কি আগে জানলে আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর কিন্তু ভয়াবহ () জার্নিটা কম্পলিট হইত না।

আবার শুরু হইল যাত্রা...এক এক জায়গায় আইসা নৌকার মাঝি আমাগোরে নামায়া দেয় ডাঙ্গায়। আমরা হাইট্টা কিছুদূর গিয়া আবার নৌকায় উঠি... কারন এত স্রোত যে মাঝিরা নদীতে নেমে নৌকা টেনে নিয়ে যায়। এক জায়গায় আইসা মাঝি কইল গুন টান্তে হইব... আমার এইবার চাপসে জিদ ... আমি শেষ দেইক্ষা ছাড়ুম। একজনের হাতে ব্যাথা, আর একজন বিরক্ত, আর একজন ভীত ... এই তিনজন বাদে সবাই দড়ি টানা শুরু করলাম... ও আর একজন উঁচু জায়গায় দাড়ায়া ইন্সট্রাকশন দিতাসিল কেম্নে গুন টান্তে হইব... কখন লুজ করি কখন টানি ... এই করতে করতে কোনমতে স্রোতের জায়গাটুকু পার করলাম। এইবার শুরু হইল নতুন মুসিবত।

আমার দুই ভাই এক্কেরে বেইক্কা বইল...তারা আর যাইব না। আগরে দেইক্কা অনেকদিন আগে ভোরের কাগজে শিশির স্যার এর একটা কার্টুন এর কথা মনে হইতাসিলো(হাসিনা আর খালেদা। হাসিনার হাতে একটা কলা, সে কান্না কাটি করতাসে আর কইতাসে "কলাটা ছিল্লা দেও"। নেক্সট সিন হাসিনার হাতে ছিলা কলা, কিন্তু সে আরও জোরে কান্তাসে আর কইতাসে "কলা ছিল্লা কেন, এইবার বুজায়া দেও";পাশে খালেদা বেকুব হয়া দাঁড়ায়া আসে)। অগো কান্নাকাটিতে আমরা খালেদা হয়া গেসিলাম।

এর মদ্ধে আমি গেসিলাম একটা ঝিরিতে হাত মুখটা ধুইতে...আমার চশমাটাও ভয় পায়া নদীর স্রোতে লগে দৌড়ানি শুরু করসিল, না দেখলে বোধহয় বঙ্গোপসাগরই তার ঠিকানা অইত। কোনমতে আমার ভাইয়েরা নিমরাজি অবস্থায়ই রওনা দিল রেমাক্রির উদ্দেশ্যে... (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.