পিচ্চি পাচ্চারা যে কি ভয়ংকর বস্তু এটা এদের সংস্পর্শে না এলে বোঝা কঠিন। যখন মামা হই তখন প্রথমবারের মতো বাচ্চাদের ক্লোজ সংস্পর্শে আসি । ভাগ্নের তিন মাস বয়সে অবাক হয়ে লক্ষ্য করি আমার সারাদিনের প্রায় পঁচিশ ভাগ সময়ই সে দখল করে আছে।
(১)
ভাগ্নে কেবল হাটতে শিখেছে। সারাবাড়ি টুকটুক করে হেটে বেড়ায়।
আমি রুমের দরজা খুলেই ঘুমাতাম। একদিন ঘুম ভাংলো চুলে টান পড়ায়। দেখি ভাগ্নে আমার খাটের পাশে (মাথার দিকে) দাড়িয়ে মহানন্দে আমার চুল টানছে। এরপর এটা তার নিত্যকার রূটিন হয়ে গেলো। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেই আমার মাথার চুল একটু টানাটানি করে তারপরে তার অন্যকাজ।
আবার আমি যখন ঘূম থেকে উঠতাম তখন তার ঘুমের দ্বিতীয় পর্ব চলছে।
(২)
একদিন ঘুম থেকে উঠে হাতমুখ ধুয়ে এসে মোবাইলটা খুজে পাচ্ছি না। মোবাইল মাথার কাছে রেখে ঘুমানোর অভ্যাস। কেমন যেন সন্দেহ হলো পিচ্চিটার উপর। সারা বাড়ি খুঁজে পেলাম এক কোনায় এক বালতির ভিতরে শুয়ে আছে আমার সাধের মোবাইল।
বালতিতে পানি বেশী ছিলো না। কিন্তু তাতেই মোবাইলটা ডুবুডুবু হয়ে আছে। আবার নতুন করে মোবাইল কিনতে হয়েছিলো। )
(৩)
বয়স বাড়ার সাথে সাথে ভাগ্নে আমার ভক্ত হতে লাগলো। মামা ছাড়া কোনো কথা নাই।
এক রাতে বেশী দুষ্টুমি করায় হালকা একটা থাপ্পড় আর ধমক দিলাম। বেশ, শুরু হলো কান্নাকাটি। কান্না আর থামে না। কান্না করতে করতেই মায়ের কাছে ঘুমিয়ে পড়লো। আমি আর খোঁজ-খবর রাখিনি, নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলাম।
গভীর রাতে আমার ঘুম ভাঙ্গালো আম্মু আর বোন। সাথে ভাগ্নেকে নিয়ে এসেছে। সে রাতে ঘুমের ভিতরেই সে একটু পরপর বড় বড় দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছিলো। আর মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে আবার কান্নাকাটি - "মামা যাবো! মামা যাবো!" সে রাতে বাকী সময়টা আমার পাশেই শান্তিতে ঘুমিয়ে কাটালো ভাগ্নে (জীবনে প্রথম বারের মতো)।
বাচ্চারা যে কত ভয়ংকর - এর পরেও কি কোনো সন্দেহ থাকতে পারে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।