ঢাকা মহানগর ও দেশের সব মডেল থানাসহ বেশকিছু থানার ওসির বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্তকারীরা সংশ্লিষ্ট ওসিদের সহায়-সম্পত্তি, নামে-বেনামে ব্যবসা, গত ৩ বছরের ব্যাংক হিসাব এবং সন্তানরা কোথায় পড়াশোনা করছে তা খতিয়ে দেখছে। তদন্ত রিপোর্ট চলতি সপ্তাহেই সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এদিকে, এ ধরনের তদন্ত পরিচালনার কথা প্রকাশ পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট ওসিরা আতঙ্কে আছেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র এসব তথ্য জানিয়ে বলেছে, ঢাকা মহানগরের সব থানার ইনচার্জ হিসেবে এএসপিদের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে যেসব ওসি দ্বিমত পোষণ করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হবে সরকার। এ কারণেই সংশ্লিষ্ট ওসিদের ব্যক্তিগত গোপন নথিও (এসিআর) খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ‘থানার ইনচার্জ এএসপি’ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সরকার যে কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত। অপরদিকে, পুলিশের আইজি গতকাল বলেছেন, ঢাকাসহ দেশের সব থানার ইনচার্জ হিসেবে শিগগিরই এএসপিরা দায়িত্ব পাবে।
মন্ত্রণালয়ের সূত্র আরও জানায়, দেশের সব থানায় এএসপিদের ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর থেকে একটি মহল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারায় লিপ্ত হয়।
তারা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদসহ বিভিন্ন দাবিতে বেনামি লিফলেট বিতরণ করে। ওই লিফলেটে একদিন কর্মবিরতিরও ঘোষণা দেয়া হয়। পুলিশ সদর দফতরকে এই লিফলেটের উত্স নিয়ে তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেয়া হয়। এর পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থাও এর তদন্ত করছে। তদন্তে জড়িতরা ধরা পড়বে বলে সূত্র মনে করছে।
সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকাসহ মহানগরের ৪১টি মডেল থানার ওসি পদে ইন্সপেক্টরের স্থলে এএসপিদের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে খুব শিগগিরই। সম্ভব হলে ৫-৭ দিনের মধ্যে ঢাকার থানাগুলোতে এএসপি নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেসব থানায় এএসপিদের ওসির দায়িত্ব দেয়া হবে ওইসব থানায় ইন্সপেক্টর পদে দু’জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। এদের একজন প্রশাসনিক ও অপারেশনের দায়িত্বে থাকবেন। অপর ইন্সপেক্টর মামলার তদন্ত কার্যক্রম তদারকি করবেন।
মন্ত্রণালয়ের অপর একটি সূত্র জানায়, থানার ওসি হিসেবে এএসপি নিয়োগ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয় আশির দশকে। কিন্তু তখন মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের তীব্র বিরোধিতার মুখে ওই প্রস্তাব বাতিল করা হয়। এরপর প্রস্তাবটি দীর্ঘদিন চাপা পড়ে ছিল। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থানার ওসি হিসেবে ইন্সপেক্টরদের পরিবর্তে এএসপিদের দায়িত্ব দেয়ার বিষয়টি সরকারের শীর্ষমহলে আলোচনায় আসে। গত ৫ আগস্ট পুলিশের নীতিনির্ধারণী গ্রুপের (পলিসি গ্রুপ) সভায় প্রাথমিকভাবে মডেল হিসেবে এএসপিদের থানার ওসির দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি সপ্তাহেই ডিএমপির ৬টি মডেল থানাসহ ৪১টি থানায় ওসির দায়িত্ব দেয়া হবে এএসপিদের। চলতি বছরে ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মডেল থানাগুলোতে এএসপিরা ওসির দায়িত্ব পাবেন। আগামী বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে জেলা পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ থানায় এবং পরে দেশের সব থানায় এএসপিদের ওসির দায়িত্ব দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।