আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশে ২০১০ সালে স্বাভাবিক এর চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হবার অন্যতম কারন



"আবহাওয়া বিজ্ঞান" (Atmospheric Science) এর মতে এই বছর বাংলাদেশ এ কম বৃষ্টিপাত হবার সমূহ সম্ভবনা আছে । কারন টা হচ্ছে ২০০৯ বছরটি ছিল "এল-নিনো" বছর (ক্লাস নাইন -টেন এর ভূগোল বইতে পরে থাকবেন হয়ত )। "এল-নিনো" এবং "লা-নিনা" বছর গুলোর একটা সারনী নিম্নে যোগ করা হল পাঠকদের সুবিধার্থে। ছবি-১: উল্লেখযোগ্য "এল-নিনো" এবং "লা-নিনা" বছরগুলো। উপরোক্ত সারনী হতে দেখা যাচ্ছে যে ২০০৯ বছরটি ছিল (লাল দাগ নির্দেশ কারি বছরগুলো) "এল-নিনো" বছর ( নীল দাগ নির্দেশ কারি বছরগুলো হচ্ছে "লা-নিনা" বছর)।

"এল-নিনো সাউর্দান ওছিলেসন " (El-Nino Southern Oscillation) হচ্ছে "মধ্য ও পূর্ব বিষুবীয় প্রশান্ত-মহাসাগর" (Central & Eastern Tropical Pacific) এর সমুদ্র পৃষ্ঠের পর্যায়ক্রমিক উত্তপ্ত ও ঠান্ডা হওয়া" । অন্যভাবে সমুদ্র পৃষ্ঠের পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক তাপমাত্রর চেয়ে বেড়ে যায় (এল-নিলো) বা কমে যায় (লা-নিনা)। ছবি-২: যে দুটি স্হানে সমুদ্রের তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি হয় (পশ্চিম আস্ট্রেলিয়া এবং পেরু, ইকুয়েডর ও চিলি সংলগ্ন সমুদ্র এলাকা)। তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে বালা হয় "এল-নিনো" (El-Nino) এবং কমলে বলা হয় "লা-নিনা" (La-Nina). (নিচে কিছু ছবি দেওয়া হলো যেগুলো "এলনিনো" , "সাধারন" এবং "লা-নিনা" অনস্হা নির্দেশ করে) ছবি-৩: এল-নিনো অবস্হা ছবি-৪: সাধারন অবস্হা ছবি-৫: "লা-নিনা" অবস্হা আবহাওয়া বিজ্ঞানে "এল-নিনো" একটি খুবই গুরুত্বপূর্ন প্রক্রিয়া। এটি পৃথিবী জুড়ে অতি-বৃষ্টি ও অনাবৃষ্টি এর সাথে সম্পর্ক যুক্ত।

বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষনায় এটা প্রমানিত হয়েছে যে এই "এলনিনো" এর সাথে "ইন্ডিয়ান মুনসুন বৃষ্টিপাত" [ Indian Monsoon Rain fall] (আবহাওয়া বিজ্ঞানে ইন্ডিয়ান জলবায়ু বলতে বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, নেপাল তৎসংলগ্ন অন্চল কে বুঝায়) বিপরীত সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ, যে বছর "এলনিনো" খুব সক্রিয় থকবে তার পরের বর্ষা মৌসুমে এতদ: অন্চলে বৃষ্টি কম হবে এবং এই বছরের বৃষ্টি পাতের ধরন সেই রকমই আচরন করতেছে। এখানে উল্লেখ্য যে ঐতিহাসিক ভাবে দেখা গেছে যে "এল-নিনো" এবং "লা-নিনা" সাধারনত ৩/৪ বছর পর পর আবর্তিত হয়। কিন্তু জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে এই আবর্তন প্রক্রিয়া সাম্প্রতিক কালে অনিয়মিত হয়েগেছে। "এল-নিনো" এবং "লা-নিনা" অবস্হা বর্তমানে "Climate Model" "Observation Station" দ্বারা খুব সহজে নির্নয় করা যায়।

যেমন আমি আজকের NOAA (National Oceanic & Atmospheric Administration) এর আবহাওয়া পূর্বাভাষ এ দেখলাম "মধ্য ও পূর্ব বিষুবীয় প্রশান্ত-মহাসাগর (Central & Eastern Tropical Pacific) এর সমুদ্র পৃষ্ঠের পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিক তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি কমতে শুরু করেছে। তার অর্থ হচ্ছে এই বছর "লা-নিনা" অবস্হার সৃষ্টি হচ্ছে এবং এটা এখন হতেই পূর্বাভাষ করা যায় যে ২০১১ সালে বাংলাদেশ এ স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি বৃষ্টি হবে (প্রথম ছবিতে ২০১০ সালে নীল দাগ এর আবির্ভাব )। উন্নত দেশ বিশেষ করে "আমেরিকা" এবং "অস্ট্রেলিয়া" এর "কৃষি অর্থনিতী" এই "এল-নিনো" এবং "লা-নিনা" অবস্হার পূর্বাভাষ এর উপর বহুলাংশে নির্ভরশীল। বি:দ্র: এই লিখাটি যদি ব্লগে উপস্হিত কোনো সাংবাদিক বন্ধু কোন পত্রিকা্য় প্রকাশে ইচ্ছুক হন তবে আমার নিম্নোক্ত ই-মেইল ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন । আমি লিখাটি আর ও বিস্তারিত করতে পারব উপযুক্ত রেফারেন্স সহকারে।

(লেখক কানাডার "ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়" এ "জলবায়ু পরিবর্তন" বিষয়ে Ph.D. গবেষনারত) E-mail: কৃতজ্ঞতা: উপরোক্ত ছবিগুলো ইন্টারনেট হতে সংগৃহিত।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.