আমি আমার পৃথিবীর রাজা
আজ বিকাল ৩টা থেকে শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের তিন তলায় ছিল অনুপ আইচ এর স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র "কানামাছি ভো ভো" এর প্রিমিয়ার শো। প্রতি এক ঘন্টা পর পর হওয়া বেশ কয়েকটি শো হয়েছে। লোকজন মোটামোটি ভালই হলো। 'আইচ' শব্দটি নির্মাতা অনিমেষ আইচ এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। অনিমেষ আইচের ভালো কাজের একটা সুখ্যাতি মিডিয়ায় আছে।
তার কাজ আমারও অসম্ভব রকম ভালো লাগে। এক ধরনের মাতাল করা ভাব থাকে তার কাজে। আমি অবশ্য এই লোভে সেখানে যাই নি। শর্টফিল্মের প্রতি দুর্বলতা থেকেই আমার এই শো তে যাওয়া। আরও একটা বিষয় রয়েছে, সেটা হলো আমি এই প্রথম কোন প্রডাকশনের প্রিমিয়ারে যাচ্ছি।
অতপর সন্ধ্যা ৬টার শোতে গিয়ে বসলাম। শুরু হলো মুভি। প্রথমেই সেই অনিমেষোচিত আলো আধারীর খেলা। ভাল লাগতে শুরু করলো। ছবির মূল চরিত্র একজন বয়সন্ধিকালর স্কুল পড়ুয়া যুবক।
যা কিনা তার জীবনের ভবিষ্যতের একটা বড় সময়। এই সময় সে অধিকাংশ সময়ই কাটায় টিভি দেখে। যার ভেতর রয়েছে বেশির ভাগই রগরগে দৃশ্য। টিভি খুললেই কি এসব দেখা যায়? ভালো কিছু দেখা যায় না? দেখা যায়। তবে ছেলেটার এক ধরনের বিকারগ্রস্থতার কারণেই হয়তো তা দেখানো।
যার বাস্তব জীবনটা পুরোপুরি ধূষর। এও কি সম্ভব! একটা কিশোরের বয়সন্ধিকালের সবটুকু বাস্তবই ধূষর? কিন্তু তার কল্পনার জীবনটা অসম্ভব রঙিন। এই রঙিন জীবনই তাকে বাঁচিয়ে তোলে। সে শুধু তার কল্পনার জগতেই। কিন্তু তার মাতাল বাবা সন্তানের প্রতি কোনও প্রকার দায়িত্বই নেয় না কি?
গল্পের এই জায়গাগুলো খটকা লেগেছে।
সবচেয়ে খটকা লেগেছে ঘরের দরজা বন্ধ না করেই বয়সন্ধিকালের ছেলের আশে পাশেই আমাদের দেশের একটা মানুষ কিভাবে সঙ্গমে লিপ্ত হয়?
তার স্বপ্নের জায়গাগুলোতে তার মাতাল বাবা দেবতা হয়ে আসেন। এই মিথগুলো কেমন যেন প্রকৃত চরিত্রগুলোকে ছাড়া স্বপ্নের ভেতর অন্য রূপ নিয়ে এলেন। স্বপ্নের ভেতর স্কুল বালক নিজের যে পৃথিবী নির্মাণ করছে তার কোনও শেষ নেই যেনো! তবে এই ক্ষেত্রে সবচেয় যে অসঙ্গতিগুলো চোখে লেগেছে তা হলো কস্টিউম। এই ছবির প্রত্যেকটা কস্টিউমই মনে হলো একেবারে আনইউজ! মানে ছবির জন্যই পড়া। এগুলো এমন হবে কেন? এগুলো তো কিছুদিনের ব্যবহার্য হতে পারতো।
আর কল্পনার কিশোরী চরিত্রটির অধিকাংশ ক্ষেত্রে অ-অভিনয়। তবে সিনেমাটোগ্রাফি, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউিজক, এডিটিং বেশ ভালো লেগেছে। যে ছেলেটি কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছে তাকে বোধ হয় আমি চিনতে পেরেছি, হতে পারে সে ফ্যাশন হাউজ নিত্য উপহারে একজন কর্মচারী। তবে পরিচালক বোধ হয় তার থেকে আরও একটু ভালো অভিনয় বের করে আনতে পারতো। তবে আশার কথা হলো যে, আমরা আরও একজন ভালো মানের ভবিষ্যত নির্মাতা পাচ্ছি।
এর চেয়ে সু-সংবাদ বোধহয় আর কোনও হতে পারে না। তার জন্য একটা ধন্যবাদ দিলে তাকে ছোটই করা হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।