আপনার স্বা¯’্য
সম্পাদনায় মিজান রহমান
হাড় কেন ভেঙ্গে যায়
হাড ফোঁপরা হওয়ার কারণ সম্বন্ধে ইদানী অনেক কিছু জানা গেছে। মানব কংকালের গঠন বজায় রাখার জন্য দেহের অন্ত:ক্ষ বা গ্রšি’র রস হরমোনের নানান খেলার খবর জানা গেছে। এখন বোঝা যা”েছ হাড ভাঙ্গে কেন-এর প্রধান কারণ হাড় ফোঁপরা হওয়া। চিকিৎসার ভাষায় ‘অস্টিওপরোসিস’। হাড়গুলো দুর্বল হয়ে ফোঁপরা ও ভঙ্গুর হয়ে গেলে এর প্রতিটি ধরনের জন্য আছে নির্দিষ্ট চিকিৎসা।
অস্টিওপরোসিসকে বার্ধক্যের একটি স্বাভাবিক অংশ বলেই ধরি আমরা, বেশির ভাগ মহিলার দৈহিক উ”চতাও এজন্য কমে, পিঠ একটু কুজোও হয়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখন বুঝতে পেরেছেন, এটি আসলে ঘটে দুর্বলের আ¯ি’কোষের সমতা নষ্ট হওয়ার জন্য- এক ধরনের অ¯ি’কোষ হলো অস্টিওক্লাস্টস্ যা ভেঙ্গে ফেলে পুরোনো হাড়, এবং অস্টিওব্লাস্ট যা গড়েতোলো নতুন হাড়। এই দু’ধরনের কোষ সমন্বিত ভাবে কাজ করে, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হাড়গুলো মজবুত ও সু¯’ থাকে সারাজীবন। এই সমতা যখন চূর্ন হয় তখন ঘটে ‘অস্টিওপরোসিস। ’
গত ১৫ বছর, বিজ্ঞানীরা সেসব ওষুধ নজরে রেখেছেন যেগুলো হাড়ের ক্ষয় ধীর করে।
বিসফসকোনেট ধরনের ওষুধ। এমনকি ফোসাসেন্সের মত ওষুধ। আবার নতুন ওষুধও আছে যেগুলো হাড় গঠনে সহায়ক। এসব ওষুধ, বিসফসকোনেট বা অন্য ওষুধ যা অ¯ি’ক্ষয় ধীর করে, এদের সঙ্গে কাজ করে একত্রে এবং সু¯’ সতেজ হাড়ের বাড়বাড়নের জন্য প্রয়োজনীয় সমতা পুনরায় সৃষ্টি করে।
অন্যান্য গবেষকরা নতুন হাড় সৃজনের জন্য স্টেমকোষ প্রযুক্তি ব্যবহারের উপায় খুঁজে দেখছেন।
অস্টিওপরোসিস চিকিৎসা বড় জরুরী। পৃথিবী জুড়ে অসংখ্য মানুষ অস্টিওপরোসিসের কারণে ফ্রাকচার হয়ে ভর্তি হ”েছ হাসপাতালে। এদের মধ্যে অনেকেই আগে থেকে জানতে পারেন না যে, তাদের এমন হতে যা”েছ, কারণ বেশিরভাগ সময় অস্টিওপরোসিসের কোন উপসর্গ থাকে না। যখন জানান দেয় তখন হয়ত বা কব্জি ভেঙ্গেছে। বুড়োদের জন্য হাড় এভাবে আহত হলে তা মারাত্মক হতে পারে।
ন্যাশনাল অস্টিওপরোসিস ফাউন্ডেশনের মতে, বয়স্ক লোক যাদের কোমরের হাড় ভেঙ্গেছে এদের ২০% মৃত্যু হয় এক বছরের মধ্যে। আর যারা বাঁচেন এদের বেশিরভাগ জীবন কাটান নার্সিং হোমে। তবে তরুণদের ও অ¯ি’ফোপরা হলে অক্ষম করে দেয় জীবন।
গত ২০ বছরে বিজ্ঞানীরা সনাক্ত করেছেন যাদের ঝুঁকি আছে, হাড় ফোঁপরা হওয়ার- ৬৫ বছর উর্দ্ব মহিলা, ৭০ উর্দ্ধ পুরুষ, তরুণ যাদের ওজন ১২৭ পাউন্ডের নিচে, পাঁড় মাতাল ও ধূমপায়ী, আর এমন যারা গ্রহণ করেন কিছু ওষুধ যেমন স্টেরয়েড, স্তন ক্যান্সারের ওষুধ ও খিচুনির ওষুধ।
হাড়ের ভাঙ্গন ও গড়ার কাজ শুর“ হয় শৈশব থেকে, যখন অ¯ি’র গঠন থাকে তুঙ্গে।
বয়স ২০ হতে হতে, দুটোই চলে সমানতালে। ইতিমধ্যে হাড় যা গঠিত হবার হয়ে যায়। যারা খুব ব্যায়াম করেন, শৈশব থেকে ঠিকমত ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম পান, এদের হাড় হয় সগঠিত, বুড়ো হলে হাড়ের কষ্ট থাকে না।
পুরুষদের হাড় গঠন ধীর হয়ে যাওয়া ঘটে ক্রমে ক্রমে, কিš‘ নারীদের ক্ষেত্রে, ঋতুবন্ধের পর এ প্রক্রিয়া ঘটে হঠাৎ, নারীদের তখন ইস্টোজেন নেই, যা অ¯ি’ক্ষয় রাখতো ঠেকিয়ে। এমন ক্ষতি-ক্ষয় প্রতিরোধ করতে হলে, যেসব রোগীর ঝুকি, এরা বোন্ মাস্ পরীক্ষা করানো উচিত।
২০০৭ সালে ফেব্রুয়ারী মাসে জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশনে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে ঋতুবন্ধ উত্তর নারীদের মধ্যে কোমরের অ¯ি’ ভঙ্গের ঝুঁকি নির্ণয়ে নতুন এক স্কোরিং ব্যব¯’ার কথা বলা হয়েছে। ছোটখাট অ¯ি’ক্ষয় ক্যালসিয়াম (৫০ উর্দ্ধ লোকের জন্য ১২০০ মিলি গ্রাম দৈনিক) ও ভিটামিন ডি (বয়স্কদের জন্য ৮০০-১০০০ আন্তর্জাতিক একক) দিয়ে চিকিৎসা করা যায়। ওয়েট-বেয়ারিং ব্যায়ামও হতে পারে। বুডোদের হাড় গঠনের জন্য। এসবে কাজ না হলে ওষুধ।
বিস্ফসকোনেট অ¯ি’ক্ষয় রোধের জন্য। আছে নতুন ওষুধ টেরিপেরিটাইড, অ¯ি’গঠনের, তবে অবশ্য ডাক্তারের পরামর্শে, সতর্কতার সঙ্গে।
অন্যান্য বিজ্ঞানীরা অ¯ি’কোষগুলো খুটিয়ে দেখছেন যাদের গঠন, সংযুতি এবং গুনাগুণ ভালো ভাবে জেনে অস্টিওপরোসিস নিমূর্লই করা যাবে। জর্জিয়ায় বায়োমেডিকেল ইনজিনিয়ারি এর অধ্যাপক বাবরারা বয়ান বলেন, “এমন ধরনের গবেষণার শুরুতে রয়েছে আমরা। ” চিকিৎসার ব্যাপারে জেন্ডার পার্থক্য একটি বিষয় হতে পারে ভবির্ষতে।
সূত্র-অধ্যাপক ডা: শুভাগত চৌধুরী
কেনা কাটা বাতিক এটা কোন রোগ?
এক বাবা-মা তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়-য়া মেয়েকে নিয়ে আসলেন। সমস্যা প্রায়শই মার্কেটে যায় এবং প্রচুর কেনাকাটা করে। প্রয়োজন নেই এমন কেনা কাটাই বেশী। বিদেশে গেলে এক্সট্টা লাগেজ আনতে হয় ইত্যাদি। আমি বললাম আমিতো স্কিন স্পেশালিস্ট, এ ধরনের সমস্যার চিকিৎসা কখনও করতে হয়নি।
মেয়েটির বাবা-মার বিশ্বাস জšে§ছে আমি যেহেতু তরুণ-তরুণীদের বিশেষ ধরনের মানসিক সমস্যায় (সাইকো-সেক্সুয়াল ডিজঅর্ডার) কাউসিলিং করে থাকি, সে কারণে তাদের মেয়ের কেনাকাটার বাতিক সমস্যাটির সমাধানও করতে পারবো। আসলে মানুষের শরীরে সেরোটিনিন নামক এক ধরনের হরমোন নি:সরণ ঘটে। রক্তে এই হরমোনের তারতম্যের জন্য নানা মানসিক সমস্যার মত কেনাকাটার প্রতি আগ্রহ বাড়তে পারে। তবে এটা কোন বড় ধরনের মানসিক সমস্যা নয়। সামান্য চিকিৎসায় এটা ভালো হয়।
যেকোন সাইক্লিয়াট্রিস্ট বা মেডিসিন বিশেষজ্ঞগণও এধরনের সমস্যার চিকিৎসা দেন। এ ধরনের হরমোনের তারতম্যের জন্য নারী-পুরুষের সাইকো-সেক্সুয়াল সমস্যাও দেখা দেয়। ওষুধের পরিবর্তে যথাযথ কাউসিলিং- এ ধরনের সমস্যার নিরাময় সম্ভব। তবে অব¯’ার কোন পরিবর্তন না হলে সংশ্লিষ্ট কোন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। সূত্র-ডা: মোড়ল নজরুল ইসলাম
স্ট্রোকের কারণ
আপনার স্ট্রোক ঝুঁকি কমানোর জন্যই স্বা¯’্যকর জীবন পদ্ধতি আজই শুরু করুন।
ধূমপান বা তামাক সেবনের অভ্যাস পরিহার করুন।
০০ ব্রেইন বা মগজের রক্ত চলাচল ব্যহত হয়ে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহে বিঘœ ঘটে ফলে ব্রেইন বা মগজের কোষ নষ্ট হয়ে যায়, যাকে স্ট্রোক বলে। ব্রেইনে রক্তক্ষরণ বা রক্ত সরবরাহকারী শিরায় রক্ত জমাট বাঁধার ফলে স্ট্রোক হতে পারে। ব্রেইনে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালীর অভ্যন্তরে চর্বি জাতীয় পদার্থ জমার ফলে মূলত রক্তসরবরাহ ব্যহত হয়। ফলে রক্তনালি সরু হয়ে যায় ও নমনীয় হওয়ার ক্ষমতা কমে যায়।
ফলে সহজে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তনালি, বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে ব্রেইনের রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়। রক্তনালিতে চর্বি জাতীয় পদার্থ জমার মূল কারণ হল ধূমপান কিংবা অন্য মাতাক সেবন; অস্বা¯’্যকর খাবার গ্রহণ; কর্মশীল না থাকা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে রক্তনালীতে চর্বি জমার প্রবণতা বেড়ে যায়। ব্রেইনের রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়ে ব্রেইন এর কোষ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
যাকে রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোক বলে। উ”চ রক্তচাপ এ ধরনের রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোকের ঝুঁকিপূর্ণ গুণক। হƒদকম্পন দুর্বল কিংবা অসামাঞ্জস্যপূর্ণ হলে হƒদপিণ্ডে রক্তজমাট বেঁধে যেতে পারে, যা রক্তনালির মাধ্যমে ব্রেইনে চলে যেতে পারে। ব্রেইনের সরু রক্তনালিতে যা আটকে গিয়ে ব্রেইনের রক্ত সরবরাহ ব্যাহত করে।
০০ স্ট্রোকের ফলে অনেক রোগী হয় মৃত্যুবরণ করেন কিংবা অক্ষম হয়ে পড়েন।
কাজেই স্ট্রোক না হওয়ার জন্য ব্যব¯’া নেওয়াই উত্তম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ গুণক প্রতিরোধ করে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। দৈনন্দিন জীবনে উপরে বর্ণিত গুণকগুলো হ”েছ স্ট্রোকের মূল কারণ (ধূমপান কিংবা তামাক সেবন; অস্বা¯’্যকর খাবার গ্রহণ; কর্মশীল না থাকা)। এ ধরনের খারাপ জীবন যাপনের গুণকগুলো মূলত তিন ধরনের মারাত্মক শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে- উ”চ রক্তচাপ; ডায়াবেটিস (বহুমূত্র); রক্তের চর্বি বেড়ে যাওয়া। বিশ্বের বেশিরভাগ অংশে ধূমপানের প্রবণতা বেড়েই চলেছে।
এছাড়া কম কর্মশীল থাকার কারণে বেশি পরিমাণে চর্বি ও চিনি গ্রহণের ফলে অতিরিক্ত ওজনসম্পন্ন জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে। ফলে অধিক সংখ্যক লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হ”েছন।
০০ তামাকের খারাপ জিনিসগুলোর কারণে ধূমপানের ফলে ফুসফুস, রক্তনালি ও হƒদপিণ্ড ক্রমেই ধ্বংস হয়ে যায়। ক্রমে এসব খারাপ সামগ্রী রক্তের অক্সিজেনের ¯’ান নিয়ে নেয়। তামাকসেবনের ফলে স্ট্রোক হওয়ার আশংকা বহুগুণ বেড়ে যায়।
অন্যের ধূমপান গ্রহণ করার কারণে নিজে ধূমপান না করেও এই ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেন।
০০ বেশি পরিমাণে খাবার গ্রহণ, বেশি পরিমাণে চর্বি-চিনি লবণ গ্রহণ, ও পরিমাণ মতো ফল ও সবজি না খাওয়া। বেশি পরিমাণে খাবার খেলে এবং একই সাথে কম কর্মশীল থাকলে ওজন বেড়ে যেতে পারে। ক্রমে ক্রমে আপনি মোটা হয়ে যেতে পারেন। ফলে মোটা হওযার কারণে ডায়াবেটিস, উ”চ রক্তচাপ ও রক্তে চর্বির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
এসব শারীরিক সমস্যার কারণে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মোটা ব্যক্তির কোমরে ও পেটে চর্বি বেশি জমে। এছাড়া বেশি পরিমাণে ফাস্টফুড গ্রহণেও ওজন বাড়তে পারে।
০০ কম কর্মশীল থাকলে স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। শারীরিক কর্মকাণ্ড শরীরের চিনি ও চর্বি ক্ষয় করে ওজন কমাতে সাহায্য করে, রক্তচাপ কমায়, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়ায়, হƒৎপিণ্ড ও হাড়ের সামর্থ্য বাড়ায় এবং রক্ত চলাচলের উন্নতি ঘটায়।
এছাড়া কর্মক্ষম থাকলে অন্যান্য রোগ কম হয়, ভালো ঘুম হয়, আত্মবিশ্বাস বাড়ে, কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি পায় ও আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়ে নিজে ভালো অনুভব করে সুখী থাকা যায়।
কাজেই আপনার স্ট্রোক ঝুঁকি কমানোর জন্যই স্বা¯’্যকর জীবন পদ্ধতি আজই শুরু করুন। ধূমপান বা তামাক সেবনের অভ্যাস পরিহার করুন। অন্যের ধূমপানের ধোঁয়া থেকে নিজেকে রক্ষা করুন। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিট কিছু কাজ করুন (দ্রুত হাঁটা, বাগান করা, গৃহ¯’ালী কাজ কর)।
পরিমাণমত ফল ও সবজি গ্রহণ করুন। লবণ-চর্বি-চিনি অনেক খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। বছরে কমপক্ষে একবার নিজের ওজন, রক্তচাপ, রক্তের চিনি ও চর্বির পরিমাণ মাপুন। নিজের পরিবারের সদস্যদের ও অন্যান্যদের জীবনযাত্রা পরিবর্তনে উৎসাহিত করুন। সূত্র-অধ্যাপক (ডা.) এম এ ফায়েজ
বাড়তি ওজন থেকে প্রজনন অক্ষমতা
আমরা সবাই জানি, মোটা হওয়া বা বাড়তি ওজন মানুষের কত রকম অসুবিধা এবং রোগ-শোকের কারণ হয়।
উ”চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হƒৎপিন্ড এবং রক্তনালীর বিভিন্ন ধরণের অসুখ ইত্যাদির অন্যতম কারণ হ”েছ এই মোটা হওয়া বা বাড়তি ওজন। কিন্তু আমরা কি জানি শরীরের বাড়তি ওজন আমাদের সন্তান জš§দানের সক্ষমতার উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলে?
প্রথমেই আসি, বাড়তি ওজন কিভাবে হিসেব করবো? সাধারণত বড়ি মাস ইনডেক্স হিসেব করা হয় আপনার উ”চতা এবং ওজন নিয়ে। ফর্মূলাটি হ”েছ বিএমআই = ওজন (কেজি/উ”চতা২ (মিটার)। যদি আপনি ব্রিটিশ পদ্ধতিতে আপনার উ”চতা ওজন নেন, তাহলে ফর্মূলা হবে- ওজন (পাউন্ড/উ”চতা২ (ইঞ্চিতে) ী ৭০৩। এভাবে ফর্মূলা ব্যবহার করে যে বিএমআই পাবেন সেটা যদি ১৮.৫ এর কম হয় তাহলে আপনার কম ওজন, ১৮.৫-২৪.৯ মধ্যে থাকলে স্বাভাবিক ওজন এবং ২৫.০-২৯.৯৯ হলে ওভার ওয়েট বা আপনার অতিরিক্ত ওজন আছে বলে নির্দেশ করবে।
যদি দেখেন আপনার বিএমআই ৩০ বা এর উপর তাহলে আপনি ¯’ূল ক্যাটাগরিতে পড়বেন।
বাড়তি বা কম ওজন কিভাবে আপনার জš§দানের ক্ষমতা কমায় এবং এর অন্যান্য অসুবিধাগুলো কী কী?
আপনি বলতেই পারেন, অনেক ¯’ূল মহিলাইতো সন্তান জš§ দি”েছ, তাহলে ওজন নিয়ে এত কথা কেন? কিন্তু এটা সত্য যে, যারা সন্তান জš§দানে অসুবিধার সম্মুখীন হ”েছন এবং যাদের মাসিক অনিয়মিত, তাদের মধ্যে বেশী ওজনের মেয়েদের আধিক্য রয়েছে। পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (মেয়েদের এক ধরনের রোগ) থাকুক আর না থাকুক, বেশী ওজনের মেয়েদের মধ্যে অনিয়মিত মাসিক এবং (ডিম্ব পরিস্ফুটন) কম হয়। অনেক বৈজ্ঞানিক সমীক্ষাতেই এটা প্রমাণিত যে, বাড়তি ওজন সন্তান জš§দানে ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাছাড়াও টেস্টটিউব পদ্ধতিসহ অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতেও বিরূপ প্রভাব ফেলে অতিরিক্ত ওজন।
এরপরও যদি একজন ¯’ূলকায় মহিলা গর্ভধারণ করেন, সেক্ষেত্রেও নানা রকম সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে মা এবং অনাগত শিশু দু’জনেরই সমস্যা হবার সম্ভাবনা থাকে। সন্তান-সম্ভাব্য মা’র উ”চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে গর্ভপাত, প্রি-একল্যাম্পসিয়া, থ্রোম্বোএমবোলিজম, উ”চ রক্তচাপ, নিদ্রাহিনতার সমস্যা, ঘা না শুকানো ইত্যাদি হবার সম্ভাবনা বেশী। তাছাড়া এদের ক্ষেত্রে সিজারিয়ান অপারেশন করার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। ওজন বেশী থাকার জন্য যে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে, স্বাভাবিক এবং টেস্টটিউব পদ্ধতিতে সন্তান জš§ ক্ষমতাও যে কমে যেতে পারে তা অনেক সময়ই আমরা কর্তব্যের মধ্যে নিই না।
যেমন মহিলাদের যে সব সমস্যার কারণে সন্তান আসে না তার মধ্যে একটা হল গোনাডোট্রপিন হরমোনগুলো ঠিকই নি:সৃত হ”েছ, কিš‘ ডিম্ব পরিস্ফুটন হ”েছ না। এ অব¯’া সৃষ্টি হয়, যদি নারীর ওজন বেশী থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, ডিম্ব স্ফুটনের সময় ওভারিয়ান ফলিকর-এ যদি ঐঁসধহ ঈযড়ৎরড়হরপ এড়হধফড়ঃৎড়ঢ়যরহ (ঐঈএ) নামক হরমোনের পরিমাণ কম থাকে তাহলে ডিম্ব নিষিক্ত হবার সম্ভাবনা কমে যায়। যারা ¯’ূল তাদের ওভারিয়ান ফলিকল-এ এই হরমোন অনেক কম থাকে এবং এদের ডিম্বের মান ও গর্ভধারণ হারও অনেক কম। ডিম্বের মান ছাড়াও গর্ভধারণের সাথে ওজনের সম্পর্কটা স্পষ্ট হয় যখন দেখা যায়, যে সমস্ত ¯’ূল মহিলা টেস্টটিউব পদ্ধতিতে অন্যের ডিম্ব গ্রহণ করেছেন তাদের ক্ষেত্রেও গর্ভসঞ্চারের হার অনেক অনেক কম।
টেস্ট টিউব পদ্ধতিতে যে ওষুধগুলো ব্যবহƒত হয় তা অত্যন্ত উ”চ মূল্যের। যাদের ওজন বেশী তাদের জন্য ওষুধ পরিমাণে বেশী লাগে। শুধু তাই-ই নয়, তাদের ক্ষেত্রে বেশী এহজঐ ধমড়রহংঃ ব্যবহার করেও তুলনামূলকভাবে কম ডিম্ব পাওয়া যায়। জেনে রাখা ভাল, টেস্টটিউব পদ্ধতিতে অনেকগুলো ডিম্বের প্রয়োজন হয়।
সুতরাং দেখা যা”েছ, টেস্টটিউব পদ্ধতিতেও সাফল্যের হার অনেকংশেই নির্ভর করে নারীর ওজনের উপর।
তারপর দেখা গেল ভ্রুন তৈরী হয়েছে ঠিকই কিš‘ সমস্যা এদের লেগেই আছে। দেখা গেছে, যারা মোটা বা ¯’ূল তাদের ক্ষেত্রে জরায়ুতে ভ্রুনের ওসঢ়ষধহঃধঃরড়হ কম হয়, প্রথম ৬ সপ্তাহে অ্যাবরশনের হারও বেশী এবং তাদের জীবিত সন্তান জš§দানের হারও কম। অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাভাবিক স্বা¯ে’্যর তুলনায় যারা মোটা এবং ¯’ূল, তাদের ক্ষেত্রে গর্ভধারণ হারও কম। এটা যেমন স্বাভাবিক গর্ভধারণে ঘটে তেমনি টেস্টটিউব বেবী পদ্ধতিতেও ঘটে।
এখন দেখা যাক, ওজন কিভাবে প্রজনন ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে: ওজন বেশী থাকলে শরীরে হরমোন এবং মেটাবলিক অনেক পরিবর্তন ঘটে।
যেমন স্টেরয়েড এবং অন্যান্য হরমোন যথা; লেপটিন, রেসিপ্টিন, প্রোলিন, এডিপোনেকটিন ইত্যাদি হরমোনগুলোর নিঃসরণ এবং কার্যকারিতা অনেকাংশে পরিবর্তন ঘটে। এর ফলে নারীর ডিম্ব পরিস্ফুটনে সমস্যা হয়, সমস্যা হয় ভ্রুন বেড়ে ওঠায়। এমনকি জরায়ুতে ভ্রুন ইমপ্লান্ট হতেও সমস্যা হতে পারে। টেস্টটিউব পদ্ধতিতে এ সমস্যাগুলো ছাড়াও উ”চ মূল্যের ওষুধগুলো বেশি পরিমাণে লাগে, তারপরও দেখা যায়, টেষ্টটিউব পদ্ধতিতে যে চিকিৎসা চলে সেটা প্রায়শঃ বাতিল করে দিতে হয় বিভিন্ন সমস্যা উদ্ভব হবার কারণে। এতে রোগীরা একদিকে যেমন আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন, অন্যদিকে মানসিকভাবে অত্যন্ত কষ্টকর এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন।
এত কিছুর পরও যাদের ওজন বেশি তাদের যদি গর্ভসঞ্চার হয় স্বাভাবিক গর্ভধারণে বা আইভিএফ পদ্ধতিতে, তাতেও সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার আগেই মিসক্যারেজ হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে।
সুতরাং যারা স্বাভাবিক বা টেস্টটিউব পদ্ধতিতে সন্তান নিতে ই”ছুক, তাদের প্রতি পরামর্শ হল-আপনার ওজন কমিয়ে আনুন, আদর্শ সীমার মধ্যে ওজন রাখুন, তাহলে সন্তান হবার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে এমনিতেই। এমনকি টেস্টটিউব পদ্ধতিতে ও সাফল্যের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। জীবনযাপন ধারার পরিবর্তন, নিয়মিত ব্যায়াম, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই বাড়তি ওজন কমাতে সাহায্য করে। তারপরও ওজন কমাতে ব্যর্থ হলে, নিউট্রিশনিষ্ট এবং ডাক্তারের পরামর্শ কাজে আসবে অবশ্যই।
ওজন কমাতে পারলে যে পজিটিভ ফলাফল পাওয়া যায় তা অনেক গবেষণায় প্রমাণিত। যেমন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১০ কেজি ওজন কমানোর ফলে যাদের ডিম্ব পরিস্ফুটন হতো না তাদের মধ্যে ৮৯.৬% এ আবার ডিম্ব পরিস্ফুটন হ”েছ নিয়মিতভাবে, ৭৭.৬% এর ক্ষেত্রে গর্ভসঞ্চার হয়েছে, ৬৭% এর ক্ষেত্রে ফুটফুটে সন্তান কোলে এসেছ। এদের ক্ষেত্রে মিসক্যারেজ পূর্বের ৭৫% থেকে কমে ১৮% এ, এবং প্রতি বা”চার জন্য খরচ পূর্বের তুলনায় ৫৫% কম হয়েছে। বেশী ওজনের নিঃসন্তান নারীদের মধ্যে গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ায়। শুধু বেশী ওজন নয়, আদর্শ ওজনের তুলনায় কম ওজন (বিএমআই>১৮.৫) থাকলেও সমস্যা হয়।
এদের ক্ষেত্রেও ওভোলেশন কম হয়, ভ্রুন জরায়ুতে ইমপ্লেন্ট কম হয় এবং গর্ভসঞ্চারের হারও কম। উভয় ক্ষেত্রে সমস্যার ধরণ এক হলেও বেশী ওজন হলে সমস্যাগুলো প্রকট হয়। তাই বেশী ওজন নিয়ে এত বেশী কথা, এত বেশী চিন্তা এবং গবেষণা।
মানুষের জীবন-যাপন, রোগ-শোক এবং প্রজনণ ক্ষমতার উপর শরীরের ওজন বিরাট প্রভাব ফেলে। এ সম্পর্কে সচেতনতা, সুশৃংখল জীবন-যাপন, সুনিয়ন্ত্রিত আহার আমাদের জীবনকে অনেক সুন্দর করে দিতে পারে।
সূত্র-ডাঃ এম এম মোরতায়েজ আমিন
শিশুর কানব্যাথা ওয়াক্স বা কানের খোল
রাত তখন ১২টার কম হবে না। হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে উঠলো আপনার শিশু। একটি হাতে কান চেপে ধরে কেঁদে কেঁদে বললো, কানব্যথা। আপনি কি করবেন বুঝে উঠতে পারলেন না। কানে টর্চলাইটের আলো ফেললেন।
এতে কানের মধ্যে আপনি যা দেখলেন তা থেকে ব্যথা হওয়ার কারণ সম্পর্কে কোন ধারণা পেলেন না। অগত্যা ব্যথা কমানোর ওষুধ প্যারাসিটামল দিয়ে শিশুকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করলেন। একসময় কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেল শিশু। সকালে যখন ঘুম খেকে উঠলো তখন আর ব্যথা নেই।
প্রথমদৃশ্যের ঘটনার কারণ হল- ওয়াক্স বা কানের খোল।
কানে খোল জমে অনেক সময় কানেব্যথা হয়। অনেক মা-বাবা আছেন যারা কানে ময়লা পরিষ্কার করার জন্য কটনবাড ব্যবহার করেন এবং ময়লা কান থেকে বের করে আনার চেষ্টা করেন। যারা এই কাজটি করছেন তারা ঠিক করছেন না। প্রকৃত পক্ষে কান পরিষ্কার করার দরকার নেই। প্রকৃতিগতভাবেই কান নিজে নিজে পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার ব্যব¯’া আছে।
অধিকাংশের কানই নিজ থেকে পরিষ্কার হয়ে যায়। হঠাৎ কারো কারো কান পরিষ্কার করার দরকার পড়ে। আর যদি কান পরিষ্কার করার দরকার পড়ে তাহলে সেই কাজটি নাক কান গলা ক্ষিশেষজ্ঞকেই করতে দেয়া উচিত। তা না হলে সমস্যা হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কান পরিষ্কার করতে যেয়ে কানের ময়লা কিছুটা বের করে আনার সময় কিছু ময়লা ধাক্কা খেয়ে ভিতরে চলে যায়।
এই ময়লাটুকু আর স্বাভাবিকভাবে বের হতে পারে না। এভাবে বারবার কান পরিষ্কার করার কারণে একটু একটু করে ময়লার বাড়তে থাকে এবং তা কানের পথকে রুদ্ধ করে দিলে ব্যথার উদ্রেক করে। এছাড়া কান পরিষ্কার করতে যেয়ে কানে খোচা খাওয়া কিংবা কানে যে কোন ধরণের ইনজুরি প্লাস কানের মধ্যে ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এবং তৃতীয় দৃশের অবতারণা হয়। একজন নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ খুব সহজেই কান দেখে বুঝে নিতে পারেন কানের ভিতরকার অব¯’া।
কানের ভিরে ময়লা থাকলে তা বের করে দেয়ারও ব্যব¯’া করবেন তিনি। যদি ময়লা খুব শক্ত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ময়লা বের করে আনা একটু কঠিন, এতে শিশু কিছুটা ব্যথা পেতে পারে। অনেক সময় শিশু ভয়েই অ¯ি’র থাকে তখন শিশুর কান পরিষ্কার করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এসব ক্ষেত্রে শিশুর কান পরিষ্কার করতে না যেয়ে কানে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে ময়লাটি বের করে আনার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। সাধারণত সোডিবাইকার্ব এর দ্রবণ দিয়ে কান পরিষ্কার করার কাজটি করা হয়।
এই দ্রবণ কানের ময়লাকে গলিয়ে কান থেকে বের করে দেয়। এই ওষুধে কান পরিষ্কার হতে ৪/৫ দিন সময় লাগে। কান পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পর আর কখানো শিশুর কান পরিষ্কার করতে যাওয়া ঠিক হবে না। তাতে ঘটনার পুনরাবৃত্তিই ঘটবে। তবে শিশুর কানে ময়লা জমেছে মনে করলে অলিভ অয়েল ৪/৫ ফোঁটা করে দৈনিক ৩ বার একাধারে ১০ দিন দিতে পারেন।
এতে কান পরিষ্কার থাকবে। সূত্র-ডা. সজল আশফাক
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।