ব্লগার বন্ধুরা বইমেলাতে আসুন। সুন্দর থাকুন।
সরসিজ আলীম
২য় বর্ষার বইমেলা নিয়ে ৭দিনে ৭টা পোস্ট দিয়েছি। বর্ষার বইমেলাটা ভালোভাবে জমজমাট হ’য়ে উঠুক। কনকর্ড শপিং কমপ্লেক্সে গড়ে ওঠা বইয়ের মার্কেটটা পরিচিত হ’য়ে উঠুক।
বইয়ের একটা নতুন ঠিকানা গ’ড়ে উঠুক। মেলা আয়োজকদের চিন্তার সাথে কাজের সাথে একাত্মতা বোধ করা। হাতে হাত রাখার একটা চেষ্টা থেকে ব্লগে বইমেলা নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করেছি। বইমেলার প্রতিদিনের তথ্যগুলো তুলে ধরার প্রয়োজনে লিখেছি। একটা নিয়মিত উৎসাহ কাজ করেছে ৫ম লেখা পর্যন্ত।
এরপর আর লিখতে ইচ্ছে করে না। বইমেলার আয়োজকদের অনুরোধে ফেসবুকে ’বর্ষার বইমেলা ১৪১৭’ নামে একটা গ্রুপও খুলতে হয়েছে। ওখানেও কিছু তথ্য দিতে হয়। মেলা থেকে আনা ছবিগুলো আপলোডের উপযোগী করতে হয়। ওগুলো লেখার সাথে মিলিয়ে ছবি যুক্ত করতে হয়।
কারো কারো আব্দার রক্ষা করতে কিছু কিছু ছবি মেইল করতে হয়। ব্লগের মন্তব্যের জবাব দিতে হয়। ফেসবুকের বন্ধুদের মেলা নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসার সুরাহা করতে হয়। অধিকাংশ দিনই লেখার জন্য বিদ্যূত বাবাজীর ঠ্যাং ধ’রে ব’সে থাকতে হয়। লেখার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বিদ্যূত গেলো। লিখে চলেছি আর বান্ধবীদের সাথে অনলাইনে ঠোকাঠুকি করছি আবার বিদূত গেলো। এবার লেখা শেষ করলাম, ছবি ঠিক করলাম। পোস্টের জন্য রেডী, _ প্রকাশ করুন ক্লিক ক’রে দেখি নেট নাই। আমার নেট আবার পরকীয়ায় বিশ্বাসী।
আমার খাইবে, আমায় বসত করবে, কিন্ত জল ঢালবে অন্য কোথাও। তাইতো আমার কাজে সে একটা উৎসাহ পায় না। যাহোক, আরো এক ঘন্টা অপেক্ষা ক’রে আবার নতুন করে পোস্ট সাজিয়ে প্রকাশ বাটনে ক্লিক করতে হয়। তাইতো দেখা যায়, অধিকাংশ দিন পোস্ট করতে হয় রাত ২/৩টা নাগাদ। এ সময় প্রথম আলো ব্লগে ২/১ জন ব্লগার অনলাইনে থাকে।
সামুতে একটু বেশি সংখ্যক ব্লগার, অতিথি সবসময়ই থাকে। আলোব্লগে বেশি সময় ধ’রে পোস্টটা প্রথম পাতায় থাকে। তারপর পূর্বতন পোস্টের সারিতে লিংকটা অনেক সময় ধরে থাকে। সে কারণে পোস্টটার সহজেই চোখের সামনে পাওয়া যায় ১৫/২০ ঘন্টা। এতোক্ষণ পাঠকের নাগালে থাকা সত্বেও এটা প্রথম আলোতে পঠিত হয় ১০০ বার।
সামুতে খুব দ্রুতই পোস্টটা স’রে যায়। লিংকটা নাকের ডগায় ঝুলিয়ে রাখার ব্যবস্থা নেই। পোস্টটা সহজেই পাঠকের আড়ালে চলে যায়। ওখানেও পাঠক ১০০ জনের কাছাকাছি। মন্তব্য ২/৫ জন করেন।
উভয় ব্লগেই সমানে সমান। এককথায় বলা যায়, এই বইমেলা নিয়ে এই দুই ব্লগের ব্লগারদের মধ্যে আগ্রহ খুবই কম। দুই একজন বলেছেন মেলায় যাবেন, কিন্তু আমি তাদের দেখিনি। প্রথম আলো ব্লগের ব্লগারদের মধ্যে দেশ-জাতিকে উদ্ধার করার মতো ব্যপারে তাদের রয়েছে খুবই আগ্রহ। খাজুরে আলাপ আর খাজুরে পোস্টে তাদের তুমুল উৎসাহ।
প্রিয় নেতার কর্মকান্ড বা পোস্টে উৎসাহ দিতে বিপুল করতালির যোগান দিয়ে যায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে। প্রথম আলো ব্লগারদের বারোয়ারী উপন্যাস ’নিবর্ষ শ্রাবণ’ পাঠসূত্রের স্টলে নেড়েচেড়ে দেখলাম। পাঠসূত্রের স্টলে নিয়মিত বসছেন পাঠসূত্রের নির্বাহী রাজীব নূরের স্ত্রী। ভাবীকে জিজ্ঞেস করলাম, বইটি কেমন চলছে? উনি ঠোঁট উল্টে দিয়ে বললেন, একুশে বইমেলাতে ১০/১৫ কপি বিক্রি হয়েছে। নাজলার বাবা এসে ৫০ কপি বই নেবার কথা ছিলো, উনিও আসেননি আর।
এই মেলাতে তো ২/১ কপি বিক্রির আশা করাই যায় না। কিন্তু আমরা দেখেছি এই বইটা নিয়ে একুশে বইমেলার পুরো সময়টা জুড়ে ব্লগ কর্তৃপক্ষসহ ব্লগারদের কী যে সাম্বা নাচ! সামুর ব্লগাররা আড়ালে থাকতেই পছন্দ করে। কিন্তু সামুর ব্লগাররা যে দুটো সংকলন ’অপরবাস্তব’ ও ’সবুজ অঙ্গন’ নিয়মিত করে, ব্লগে বা বইমেলাতে তাদের নাচন না দেখা গেলেও সংকলনগুলো বেশ সফল হয়েছে বলে জানা যায়। প্রথম আলো ব্লগ ও সাম হোয়্যার ব্লগারদের উপস্থিতি আমি এই বইমেলাতে টের পাইনি। আমার পোস্টে দু’ একজন জানালেও তারা বইমেলাতে গেছে, এমন আমার চোখে পড়েনি।
প্রথম আলোব্লগ, সাম হোয়্যার ইন ও সচলায়তন ব্লগের ব্লগারদের মানসিক তফাতটা তুলে ধরবার জন্য এতোগুলো কথা বলছি।
সচলায়তনের ব্লগার নজরুল ইসলামের সাথে আমার আগে পরিচয় হয়নি। ৩দিন আগে ফেসবুকের ম্যাসেজ বক্সে নজরুল জানালো বইমেলা নিয়ে সচলায়তনে লিখছেন। এবং আমার পোস্ট থেকে তিনি ছবি ব্যবহার করছেন। এ ব্যাপারে কিছুটা বিস্তারিত আমি আমার গতকালের পোস্টে বিস্তারিত জানাবার চেষ্টা করেছি।
লিংকটা নিচে পাবেন। নজরুলের সাথে এ কয়দিন মেলাতে নিয়মিত দেখা হচ্ছে। সচলায়তনের ব্লগাররা ঝাঁকে ঝাঁকে মেলায় আসছেন। ছবি তুলছেন। আড্ডা দিচ্ছেন।
বই কিনছেন। সচলের যে সংকলনগুলো বের হয়েছে। সেগুলোকে পাঠকের হাতে তুলে দেবার জন্য সচলের যে বইগুলো যে যে স্টলে আছে, সেখানে সেখানে আবর্তিত হচ্ছে সবাই। অগ্রসর ব্লগার রণদীপম বসুর সাথে আমার পরিচয় ব্লগে লেখালেখির শুরুতে। তিনি আমাকে উৎসাহিত করেছিলেন ব্লগে লেখালেখিতে।
প্রথম আলোর পোস্টে বইমেলাতে যাবেন ব’লে আমাকে জানিয়েছিলেন। বইমেলার ৭ম দিনে তিনি এলেন। সাথে নজরুল, শাহেনশাহ, পান্থ, গৌতম, পলাশ, অনিন্দ রহমান, মিনামী ও জুয়েইরিযাহ মউ। সবার সাথে পরিচয় হলো। আমরা বিশ্বাবিদ্যালয় মার্কেটের সাথে লাগোয়া একটা চায়ের দোকানে গিয়ে পিয়াজু, সিঙাড়া, বেগুনি, পুরি ও চা গেলাম।
আড্ডা, ছবি তোলা চলতে থাকলো। ও হ্যা আমাদের সাথে পুরোভাগেই শুদ্ধস্বরের স্বত্বাধিকারী টুটুল ভাই ছিলেন। আমরা আবার মেলা প্রাঙ্গণে এলাম। কনকর্ড থেকে প্রকাশিত ’এইসব দিনরাত’ ম্যাগাজিন দিলাম রণদীপমদাকে। এরপর অগ্রদত প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মনি মহম্মদ, নজরুল, রনদা আমাদের প্রকাশনী, আমাদের বইমেলা, আমাদের লেখক, পাঠক আর ভয়ানক সব ব্যর্থতাগুলো নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলাপ-আলোচনা ক’রে মনটা ভারি করলাম।
তারা বারবার মেলায় আসবে ব’লে বিদায় নিলো। নজরুল রাতের বইমেলার উপর পোস্ট দিয়েছে সচলে। মনকাড়া সব ছবি। তাকে আগেই জানিয়েছিলাম, আপনি কি লেখেন, তারপর আমি লিখবো। তার পোস্টটি করার সাথে সাথে অনেক পাঠক পড়েছে।
অনেকে মজার মজার মন্তব্য করেছে। আর এই দেখে আমার আর লিখতে ইচ্ছে করে না। আগেই লিখেছিলাম লিখতে ইচ্ছে করে না। এবার লিখতে ইচ্ছে না করার কারণ বললাম।
বইমেলা নিয়ে অনেককিছু বলার আছে।
অনেকদিন ধরেই লিখতে হবে সেগুলো। সচলে গতকাল রেজি করেছি। একাউন্টটা একটিভ হলে ওখানে নিয়মিত লিখতে ভালোলাগবে আমার।
কাঁটাবনস্থ কনকর্ড এম্পোরিয়াম শপিং কমপ্লেক্সে বর্ষার বইমেলা শুরু হয়েছে ০১ আগস্ট, চলবে ১০ আগস্ট ২০১০ অবধি। সকাল ১১:০০টায় শুরু হয়ে রাত ৮:০০ নাগাদ চলছে।
আরো ৫দিন বর্ধিত করার জল্পনা-কল্পনা চলছে আয়োজকদের। প্রতিদিনই চলছে কবি শামসুর রাহমান মঞ্চে কবিকন্ঠের পাঠ ও কবিতা আবৃত্তি। অংশ নিতে পারেন যে কেউ। সবাই ভালো থাকুন।
সচলায়তনে নজরুলের ব্লগ
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।