আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ত্রিভুজ পার্টির চেয়ারম্যান লাফিয়ে উঠলেন, "ইউরেকা!!"

© ২০০৬ - ২০১১ ত্রিভুজ

বাংলাদেশ ত্রিভুজ পার্টি এখন ক্ষমতায়। ক্ষমতায় যাওয়ার আগে দেয়া নির্বাচনী ওয়াদা তারা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেই ক্ষান্ত হয়নি বরং আরো অনেক কিছুই করে ফেলেছে। ত্রিভুজ পার্টির সমর্থকদের মনে তাই আনন্দের সীমা নাই, সাধারণ আম জনতাও নির্লিপ্ত। কিন্তু ত্রিভুজ পার্টির চেয়ারম্যানের মনে শান্তি নাই, তিনি বেশ চিন্তিত ভঙ্গিতে বসে আছেন। মন্ত্রীপরিষদের সদস্যরাও বিব্রত... একজন একটু সাহস করে জিজ্ঞেস করেই বসলো- মহামান্য চেয়ারম্যান, আপনি এত চিন্তিত কি নিয়ে? এত কিছু করেও তো সবার ভাগে খুব বেশি কিছু থাকছে না, চেয়ারম্যানের জবাব আমরা কি ট্যাক্স, ভ্যাট আরেকটু বাড়িয়ে দেয়ার উপায় বের করার চেষ্টার করবো মাননীয়?, অর্থমন্ত্রী জানতে চাইলো নাহ, এই বছরের মত আর না..., চেয়ারম্যানের কথাটা অনেকটা স্বগোক্তির মত শোনালো।

শিক্ষা ব্যস্থার উপরে ভ্যাট আরোপ করার পর খুবই অনাকাংখিত ভাবে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসায় চেয়ারম্যান চিন্তিত। এইসব ছেলে ছোকরাকে লোকজন ডিজুস জেনারেশন নামে ডাকে বলে শুনতে পেয়েছিলেন তিনি। ডিজ্যুস জেনারেশন নাকি নিজেকেই নিয়ে সবসময় ব্যস্ত, দেশ নিয়ে তাদের ভাবার সময় নাই, এমনটাই বলা হয়েছিলো গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে। কিন্তু যেখানে দেশের বিরোধীদল টু শব্দটি করছে না সেখানে এই ডিজুস ছেলে ছোকরা রাস্তায় নেমে রীতিমত মিছিল করে ফেলবে এটা কল্পনাতীত ব্যপার। চেয়ারম্যানের চিন্তিত চেহারা দেখে মন্ত্রীপরিষদের সদস্যরাও চিন্তিত হয়ে পড়লো।

সভায় পিন-পতন নীরবতা। হঠাৎ চেহারম্যান এক ঝটকায় চেয়ার থেকে ওঠে দাঁড়ালেন... চিৎকার করে বললেন, "ইউরেকা!!... ইউরেকা!!!" মন্ত্রীরা পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে লাগলো। মাননীয়...... বলতে শুরু করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তাঁর মুখের কথা শেষ না করতে দিয়েই আবার "ইউরেকা!" বলে চেঁচিয়ে ওঠেন চেয়ারম্যান। পেয়েছি, এটাই সবচাইতে উত্তম, নিরাপদ, ঝামেলাহীন.. মাননীয়...., কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলেন যোগাযোগমন্ত্রী। তাঁকে থামিয়ে দিয়ে জানতে চাইলেন চেয়ারম্যান, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র আমাদের কাছে ট্রানজিট চাচ্ছে বহুদিন ধরে, তাই না? হ্যা, মাননীয়... আমরা কি তাদেরকে ট্রানজিট দিয়ে দিতে পারি না? কিন্তু... আমাদের জনগন তো এটা মানবে না মাননীয়... আমতা আমতা করে বলার চেষ্টা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী... মানবে না মানে? নির্বাচনী ওয়াদা বাস্তবায়ন করিনি আমরা? তারচাইতে বেশি কিছু করেছি, মাননীয়... তাতে জনগন কিছু বলেছে? না, তা বলেনি মাননীয়, ভাবতে ভাবতে বললেন মন্ত্রী তাহলে এবারও বলবে না..., অদ্ভুত হাসি দেখা গেল চেয়ারম্যানের চোখেমুখে.. কিন্তু ট্রানজিট দেয়ার মত অবকাঠামো আমাদের নাই মাননীয়, আমতা আমতা করে বললেন মন্ত্রী এতক্ষনে আসল বিষয়ে এসেছেন, চকচকে চোখে জবাব দিলেন চেয়ারম্যান পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ঋণ এনে আমরা সেটা তৈরি করতে পারি, অন্যমনস্ক ভঙ্গিতে বললেন অর্থমন্ত্রী কারেক্ট! উৎফুল্ল হয়ে ওঠলেন চেয়ারম্যান।

'এজনই আপনাকে অর্থমন্ত্রী বানানো হয়েছে', প্রসংশার দৃষ্টিতে অর্থমন্ত্রীর দিকে তাকালেন চেয়ারম্যান। 'চড়া সুদ ও কড়া শর্তে ঋণ নিতে পারি আমরা', অর্থমন্ত্রীর চোখও এবার চকচক করছে.. তাতে আমাদের লাভ?, জানতে চাইলো এক প্রতিমন্ত্রী.. লাভ? সে তো বহুবিধ... বন্ধুরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন, দলের বিদেশি ফান্ডে অজানা সোর্স থেকে অর্থাগমণ... কিন্তু পরের সরকার এসে যদি বাতিল করে দেয় চুক্তি?, জানতে চাইলেন এক মন্ত্রী সে উপায় থাকবে না, প্রকল্প বাতিল করলে চড়া হারে জরিমানা গুনতে হবে বাংলাদেশকে। সেই রিস্ক কোন দল নিবে না, কপাল কুঁচকে ভাবতে ভাবতে বললেন অর্থমন্ত্রী 'বিরোধী দলকেও শায়েস্তা করা যাবে', যোগ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি এতক্ষনে বিষয়টা পুরোপুরি বুঝে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন সেটা কিভাবে?, জানতে চাইলেন আরেক প্রতিমন্ত্রী 'ধরুন, আমাদের পরের টার্মে বিরোধীদল ক্ষমতায় গেলো। কিন্তু তারা ক্ষমতায় গিয়েই ঋণের দায়ে জর্জরিত এক দেশ ছাড়া আর কিছুই পাবে না।

ঋণের টাকা পরিশোধ করতে করতেই তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে, দেশের অবস্থা আরো খারাপ হবে আর আমরা আন্দোলন করার ইস্যু পাবো', স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে শয়তানী হাসির আভা কিন্তু দেশের তো বারোটা বেজে যাবে, পেছন থেকে কে বললো কথাটা ঠিক বোঝা গেল না দেশ!! দেশ নিয়ে কে ভাবছে?, বিরক্ত হয়ে বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অন্য সকল মন্ত্রীদের চোখেও বিরক্তির ছায়া.. পেছন ফিরে দেশ নিয়ে কে এত মাথা ব্যথা করছে দেখার চেষ্টা করছেন তারা... চেয়ারম্যান মন্ত্রীদের কথা শুনছেন আর মিটিমিটি হাসছেন। এতগুলো গুণী মন্ত্রী পেয়ে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন। বাংলাদেশ ত্রিভুজ পার্টির জয় হোক

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।