রাতের আকাশের নগ্নতা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি কিন্তু পারি না মনের আকাশ দেখতে।
প্রতিক্রিয়াশীল ব্লগার ত্রিভুজ, আপনার লেখাটা পড়ে নিজের জিহ্বাটাকে সংযত রাখতে পারলামনা। তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাচ্ছি। ড: জাফর ইকবাল কে নিয়ে আপনার অবস্থান কি সেটা ঐ লেখাটায় যা তুলে ধরেছেন তার চেয়েও প্রকৃত সত্যিটা আপনি নিজে জানেন। তবে আমি এখানে যা বলব হয়ত আপনার মত অত গোছান আর চাতুর্যে ভরা হবে না।
সেজন্যে আন্তরিক দু:খিত।
আপনি ভারতীয় সংস্কৃতির ব্যাপারে নাক সিটকিয়েছেন। আচ্ছা বলুন তো আপনি কোন উপমহাদেশে বাস করেন? বাংলাদেশ কি তার বাইরে? কোন আকাশ সংস্কৃতি আপনি, আপনার পরিবার বেশি উপভোগ করে? আচ্ছা বাদ দিলাম এই প্রসঙ্গ। এবার বলুন, এই মাতৃভূমি বাংলাদেশে কোন পতিতা পল্লী আছে কিনা? যদি এটিও জেনে থাকেন তবে আশা করি, এটা স্বীকার করবেন যে, ভালর পাশে মন্দের বসবাস। কাজেই সুস্থ সংস্কৃতির পাশে অসুস্থ সাংস্কৃতির সহ অবস্থান আছে, সুস্থ বিনোদনের পাশে অসুস্থ বিনোদন থাকবে,এটাই স্বাভাবিক।
এই যুক্তি মেনে নিলেও আমি স্বীকার করব না যে, শা.বি.প্র.বি ড: জাফর ইকবাল এর সেই নৈশ নৃত্য ছিল অসুস্থ বা অশালীন।
আমার যুক্তি হল, ভারতীয় ঐ হিন্দি গানটার ভিডিও + expression+ emotion+উপস্থাপন + ইঙ্গিত, যাই বলি না কেন, অশালীন ছিল। কিন্তু সেদিনের ঐ আনন্দ অনুষ্ঠানে যেভাবে গানের মিউজিক গ্রহন করা হয়েছে সেখানে ড: জাফর ইকবাল + ছাত্রীদের মধ্যে কোন অসভ্যতা ছিল না। ঐ অনুষ্ঠানের ভিডিওতে কোন মেয়েকে দেখেছেন যে অশালীন ইঙ্গিত করছে বা তার পোশাক পরিচ্ছদ ছিল উগ্র?
আপনি জেনে থাকবেন, সাপের বিষ বা যে কোন ড্রাগ অপব্যবহার এ মানুষের মৃত্যু ঘটায়। আবার সেগুলো জীবন দানকারী পথ্য হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
ভাল দৃষ্টিকোণ এবং সেইসাথে আপনি কিভাবে ওটা গ্রহন করবেন, সেটিই বড় কথা। ঐ গানটার উৎস নোংরা হতে পারে, কথা অশালীন হতে পারে কিন্তু যে আনন্দ অনুষ্ঠানে ওটা যেভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে, তা অশোভন নয়। সেই অনুষ্ঠানে প্রায় ৪০০ মেয়ে সমবেত ছিল। আপনি শুধু একজন মেয়েকে উপস্থাপন করুন, যে বলবে ঐ অনুষ্ঠানটা সে উপভোগ করেনি এবং অনুষ্ঠানের ঐ গানে ড: জাফর ইকবাল যা কেরেছে তা অশালীন ও অসামাজিক ছিল। যদি পারেন, তবে আমি ১০০০ মানুষের সামনে আপনাকে কদমবুচি করব এবং মেনে নেব সেদিনের সব মেয়ে অসুস্থ অশালীন সংস্কৃতিতে আসক্ত।
শুনুন ত্রিভুজ (তিন কোণের সমাহার) ক, খ, গ এর উপস্থাপক, ড: জাফর ইকবাল যখন সন্ধ্যা থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত বাউল গানের আসরে মাটিতে বসে থাকেন, তখন তা আপনাদের চোখে পরে না। যখন ক্যাম্পাসে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, আমার ছাত্রকে আঘাত করতে হলে আমার লাশের উপর দিয়ে যেতে হবে, তখন আপনাদের ঠোঁট কাপে না। যখন বিদেশে গিয়ে দেশের গুনগান করেন, মুক্তি যুদ্ধের বীরত্বের কথা বলেন, মেধাবী ছাত্রদের কথা বলেন, যুব সমাজের মনের মুক্তির কথা বলেন, তখন আপনাদের হাতে প্রশংসার বানী লেখা হয় না।
এবার একটু নিজের কথা বলি, আমার মা যখন ভাল রান্না করেন, তখন আমি বলতে ভুলেই যাই "মা আজ রান্না ভাল হয়েছে। " মা কিন্তু আমার খাওয়া দেখে আরও খাবার তুলে দিয়ে নিজেও খুশি হতেন।
অথচ যেদিন লবন কম হত বা স্বাদ হত না, সেদিন ঠিকই বলতাম "আজ রান্না বাজে হইছে"। ফল হত, মায়ের মন খারাপ। তাই আপনাকে অনুরোধ, দৃষ্টিভঙ্গি বদলান। যদি না পারেন, তবে এই দৃষ্টিভঙ্গি ধরে রাখুন, আরও তীক্ষ্ন করুন, উপযুক্ত জায়গায় প্রয়োগ করুন।
ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি, বারিধারার নাইট ক্লাব গুলো নিয়ে লিখুন।
Gp, Blink, HSBC bank, DBB bank celebrating প্রোগ্রাম গুলো নিয়ে লিখুন। যেখানে নর্তকীরা এসে অর্ধ নগ্ন হয়ে নাচে। সুন্দরী প্রতিযোগিতার পণ্য স্বরুপ তরুণীদের নিয়ে লিখুন। নাকি সেখানে আপনি নিজেও মজা লোটেন?
সময়ের সাথে ভাষা এবং সংস্কৃতির রুপ পরিবর্তন হবে। দেখবেন সেটি যেন ভাল স্বত্ত্বাকে নষ্ট না করে।
তাই বলে নিজেকে মিথ্যা স্বন্তনা দেবেন না। যদি তা করেন, সাপের লেজে পা পড়লে যেমন দংশন করতে আসে, সংস্কৃতিও আপনাকে তেমন আক্রমন করবে। আপনার মনের অপমৃত্যু হবে।
তবে হ্যাঁ, আপনি যদি পপুলার, কাট কাট মার মার টাইপের ব্লগার হবার স্বপ্ন দেখেন, তাহলে ড: জাফর ইকবালরে মত মানুষদের নিয়ে লেখেন, কটূক্তি করেন আরও বেশি বেশি। সেক্ষেত্রে আমি জোড় দিয়ে বলব, চালাও বেটা, বিহারীকা ঘোড়া থোরা থোরা।
বিদ্রঃ আপনার ব্যাপারে বেশি কিছু জানি না। আপনার সব কমেন্ট + উত্তর দেখার ধৈর্য্য আমার নেই। তাই লেখাটা পড়েই আপনার মতই প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।