আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি
পরকাল অস্বীকারকারীদের দুর্দিন
আমাদের মানব সমাজে বহু মানুষ আছে যারা পরকালকে অস্বীকার করে থাকে। তারা বলে থাকে দুনিয়ার জীবনই জীবন। যা দেখি না তা বিশ্বাস করি না। পরকাল অস্বীকার করার ফলে তারা যে পরকালের শিকার হবে না তা কিন্তু নয়। কেহ আগুনের দাহ্য শক্তি অস্বীকার করলেও আগুন তাকে পেলে দগ্ধ করবেই।
আল্লাহ তাআলা এদের সম্পর্কে বলেন :
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ ﴿10﴾ الَّذِينَ يُكَذِّبُونَ بِيَوْمِ الدِّينِ ﴿11﴾ وَمَا يُكَذِّبُ بِهِ إِلَّا كُلُّ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ ﴿12﴾ إِذَا تُتْلَى عَلَيْهِ آَيَاتُنَا قَالَ أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ ﴿13﴾ كَلَّا بَلْ رَانَ عَلَى قُلُوبِهِمْ مَا كَانُوا يَكْسِبُونَ ﴿14﴾ كَلَّا إِنَّهُمْ عَنْ رَبِّهِمْ يَوْمَئِذٍ لَمَحْجُوبُونَ ﴿15﴾ ثُمَّ إِنَّهُمْ لَصَالُو الْجَحِيمِ ﴿16﴾ ثُمَّ يُقَالُ هَذَا الَّذِي كُنْتُمْ بِهِ تُكَذِّبُونَ ﴿17﴾ (سورة المطففين)
সেদিন ধ্বংস অস্বীকারকারীদের জন্য। যারা প্রতিদান দিবসকে অস্বীকার করে। আর সকল সীমালঙ্ঘনকারী পাপাচারী ছাড়া কেউ তা অস্বীকার করে না। যখন তার কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয় তখন সে বলে, পূর্ববর্তীদের রূপকথা। কখনো নয়, বরং তারা যা অর্জন করত তা-ই তাদের অন্তরসমূহকে ঢেকে দিয়েছে।
কখনো নয়, নিশ্চয় সেদিন তারা তাদের রব থেকে পর্দার আড়ালে থাকবে। তারপর নিশ্চয় তারা প্রজ্জ্বলিত আগুনে প্রবেশ করবে। তারপর বলা হবে, এটাই তা যা তোমরা অস্বীকার করতে। (সূরা আল মুতাফফিফিন, আয়াত ১০-১৭)
وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُمْ مِنَ الْأَجْدَاثِ إِلَى رَبِّهِمْ يَنْسِلُونَ ﴿51﴾ قَالُوا يَا وَيْلَنَا مَنْ بَعَثَنَا مِنْ مَرْقَدِنَا هَذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمَنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُونَ ﴿52﴾ إِنْ كَانَتْ إِلَّا صَيْحَةً وَاحِدَةً فَإِذَا هُمْ جَمِيعٌ لَدَيْنَا مُحْضَرُونَ ﴿53﴾ فَالْيَوْمَ لَا تُظْلَمُ نَفْسٌ شَيْئًا وَلَا تُجْزَوْنَ إِلَّا مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُونَ ﴿54﴾
আর শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে, তৎক্ষণাৎ তারা কবর থেকে তাদের রবের দিকে ছুটে আসবে। তারা বলবে, হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে আমাদের নিদ্রাস্থল থেকে উঠালো? (তাদেরকে বলা হবে) এটা তো তা যার ওয়াদা পরম করুনাময় করেছিলেন এবং রাসূলগণ সত্য বলেছিলেন।
তা ছিল শুধুই একটি বিকট আওয়াজ, ফলে তৎক্ষণাৎ তাদের সকলকে আমার সামনে উপস্থিত করা হবে। সুতরাং আজ কাউকেই কোন যুলম করা হবে না এবং তোমরা যা আমল করছিলে শুধু তারই প্রতিদান তোমাদের দেয়া হবে। (সূরা ইয়াসীন, আয়াত ৫১-৫৪)
وَيَوْمَ الْقِيَامَةِ تَرَى الَّذِينَ كَذَبُوا عَلَى اللَّهِ وُجُوهُهُمْ مُسْوَدَّةٌ أَلَيْسَ فِي جَهَنَّمَ مَثْوًى لِلْمُتَكَبِّرِينَ (سورة الزمر)
আর যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে কিয়ামতের দিন তুমি তাদের চেহারাগুলো কালো দেখতে পাবে। অহঙ্কারীদের বাসস্থান জাহান্নামের মধ্যে নয় কি? (সূরা যুমার, আয়াত ৬০)
وَقَالُوا إِنْ هِيَ إِلَّا حَيَاتُنَا الدُّنْيَا وَمَا نَحْنُ بِمَبْعُوثِينَ ﴿29﴾ وَلَوْ تَرَى إِذْ وُقِفُوا عَلَى رَبِّهِمْ قَالَ أَلَيْسَ هَذَا بِالْحَقِّ قَالُوا بَلَى وَرَبِّنَا قَالَ فَذُوقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُونَ ﴿30﴾ قَدْ خَسِرَ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِلِقَاءِ اللَّهِ حَتَّى إِذَا جَاءَتْهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً قَالُوا يَا حَسْرَتَنَا عَلَى مَا فَرَّطْنَا فِيهَا وَهُمْ يَحْمِلُونَ أَوْزَارَهُمْ عَلَى ظُهُورِهِمْ أَلَا سَاءَ مَا يَزِرُونَ ﴿31﴾ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَلَلدَّارُ الْآَخِرَةُ خَيْرٌ لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ أَفَلَا تَعْقِلُونَ ﴿32﴾ (سورة الأنعام)
আর তারা বলেছিল, আমাদের এ দুনিয়ার জীবন ছাড়া কিছু নেই এবং আমরা পুনরুজ্জীবিত হব না। আর যদি তুমি দেখতে যখন তাদেরকে দাঁড় করানো হবে তাদের রবের সামনে এবং তিনি বলবেন, এটা কি সত্য নয়? তারা বলবে, হ্যাঁ, আমাদের রবের কসম! তিনি বলবেন, সুতরাং তোমরা যে কুফরী করতে তার কারণে আযাব আস্বাদন কর।
যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এমনকি যখন হঠাৎ তাদের কাছে কিয়ামত এসে যাবে, তারা বলবে, হায় আফসোস! সেখানে আমরা যে ত্রুটি করেছি তার উপর। তারা তাদের পাপসমূহ তাদের পিঠে বহন করবে; সাবধান! তারা যা বহন করবে তা কত নিকৃষ্ট! আর দুনিয়ার জীবন খেলাধুলা ও তামাশা ছাড়া কিছু না। আর যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য আখিরাতের আবাস উত্তম। অতএব তোমরা কি বুঝবে না? (সূরা আল আনআম, আয়াত ২৯-৩২)
وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ ﴿28﴾ انْطَلِقُوا إِلَى مَا كُنْتُمْ بِهِ تُكَذِّبُونَ ﴿29﴾ انْطَلِقُوا إِلَى ظِلٍّ ذِي ثَلَاثِ شُعَبٍ ﴿30﴾ لَا ظَلِيلٍ وَلَا يُغْنِي مِنَ اللَّهَبِ ﴿31﴾ إِنَّهَا تَرْمِي بِشَرَرٍ كَالْقَصْرِ ﴿32﴾ كَأَنَّهُ جِمَالَةٌ صُفْرٌ ﴿33﴾ وَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ ﴿34﴾ (سورة المرسلات)
মিথ্যারোপকারীদের জন্য সেদিনের দুর্ভোগ! (তাদেরকে বলা হবে), তোমরা যা অস্বীকার করতে সেদিকে গমন কর। যাও তিন শাখা বিশিষ্ট আগুনের ছায়ায়, যা ছায়াদানকারী নয় এবং তা জাহান্নামের জ্বলন্ত অগ্নিশিখার মোকাবেলায় কোন কাজেও আসবে না।
নিশ্চয় তা (জাহান্নাম) ছড়াবে প্রাসাদসম স্ফুলিঙ্গ। তা যেন হলুদ উষ্ট্রী। মিথ্যারোপকারীদের জন্য সেদিনের দুর্ভোগ! (সূরা আল মুরসালাত, আয়াত ২৮-৩৪)
আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীসমূহ মুষ্ঠিবদ্ধ করা
মহা পরাক্রমশালী আল্লাহ তাআলা এরপর আকাশসমূহকে ডান হাতে আর পৃথিবীগুলোকে অন্য হাতে মুষ্ঠিবদ্ধ করবেন। অত:পর বলবেন, কোথায় শক্তিধর স্বৈরাচারীরা? কোথায় অহংকারীরা?
আল্লাহ তাআলা এ প্রসঙ্গে বলেন:
وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّماوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ (سورة الزمر)
আর তারা আল্লাহ-কে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়নি। অথচ কিয়ামতের দিন গোটা পৃথিবীই থাকবে তাঁর মুষ্ঠিতে এবং আকাশসমূহ তাঁর ডান হাতে ভাঁজ করা থাকবে।
তিনি পবিত্র, তারা যাদেরকে শরীক করে তিনি তাদের ঊর্ধ্বে। (সূরা যুমার, আয়াত ৬৭)
يَوْمَ نَطْوِي السَّمَاءَ كَطَيِّ السِّجِلِّ لِلْكُتُبِ كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ وَعْدًا عَلَيْنَا إِنَّا كُنَّا فَاعِلِينَ (سورة الأنبياء : 104)
সে দিন আমি আসমানসমূহকে গুটিয়ে নেব, যেভাবে গুটিয়ে রাখা হয় লিখিত দলীল-পত্রাদি। যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টির সূচনা করেছিলাম সেভাবেই পুনরায় সৃষ্টি করব। ওয়াদা পালন করা আমার কর্তব্য। নিশ্চয় আমি তা পালন করব।
(সূরা আল আম্বিয়া, আয়াত ১০৪)
হাদীসে এসেছে
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা পৃথিবী মুষ্ঠিবদ্ধ করবেন আর আকাশকে নিজ ডান হাতে ভাজ করে ধরবেন অতঃপর বলবেন, আমিই বাদশা। কোথায় আজ পৃথিবীর রাজা-বাদশাগণ? (বর্ণনায় : বুখারী ও মুসলিম)
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা আকাশসমূহকে ভাঁজ করে ফেলবেন। অতঃপর তা ডান হাতে ধারণ করবেন আর বলবেন, আমি বাদশা। কোথায় আজ স্বৈরাচরীরা? কোথায় আজ অহংকারীরা? এরপর পৃথিবীগুলোকে বাম হাতে ভাঁজ করে ধরবেন। অত:পর বলবেন, কোথায় আজ স্বৈরাচরীরা? কোথায় আজ অহংকারীরা? (বর্ণনায় : মুসলিম)
সংকলনঃ আব্দুল মালেক আলী আল-কুলাইব
অনুবাদক : আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
সূত্রঃ
http://www.islamhouse.com/p/262011
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।