কেয়ামত পৃথিবীর এক অনিবার্য পরিণতি। সৃষ্টিজগতের সব মানুষ ও প্রাণীর বিচার হবে কেয়ামতের মাঠে। বিশেষভাবে মানুষ ও জিন জাতির বিচার হবে। কেয়ামতের ভয়াবহ চিত্র সবাইকে অবলোকন করতে হবে, তা সংঘটিত হওয়ার খুব বেশি সময় বাকি নেই। এ বিষয়ে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আমি ও কেয়ামত এ দুটো আঙ্গুলের ন্যায় প্রেরিত হয়েছি।
(বুখারি ও মুসলিম)। অর্থাৎ কেয়ামত খুব কাছাকাছি। তবে যতদিন ভূ-পৃষ্ঠে আল্লাহর ওপর ইমান আনা ব্যক্তি জীবিত থাকবে ততদিন কেয়ামত হবে না। কেয়ামত হবে খারাপ মানুষে ভরপুর দুনিয়ায়। হজরত আনাস (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, কেয়ামত তখনই সংঘটিত হবে যখন ভূ-পৃষ্ঠে 'আল্লাহ আল্লাহ' বলার মতো কেউই থাকবে না।
আরেক রেওয়ায়েতে আছে, এমন ব্যক্তির ওপর কেয়ামত কায়েম হবে না, যে আল্লাহ আল্লাহ বলে। (মুসলিম)। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, নিকৃষ্ট ব্যক্তির ওপরই কেয়ামত সংঘটিত হবে। (মুসলিম)। হজরত আবু রাজিন উকায়লি (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহতায়ালা কীভাবে সৃষ্টিজগতের পুনরুত্থান ঘটাবেন? তাঁর সৃষ্টির মধ্যে এর কী নিদর্শন আছে? তিনি বললেন, আচ্ছা, বল, তুমি তোমার এলাকার এমন কোনো বিরান উপত্যকা দিয়ে কি অতিক্রম করেছ (যেখানে বৃষ্টি বর্ষণের পরে) যখন তুমি আবার অতিক্রম কর তখন তা বাতাসে দোলায়িত তরতাজা ঘাস ইত্যাদিতে পরিণত হয়ে যায়? আমি বললাম, হ্যাঁ, দেখেছি।
এবার নবী (সা.) বললেন, আল্লাহর সৃষ্টিজগতে এটাই তাঁর বাস্তব নিদর্শন। অর্থাৎ বর্তমান সুন্দর ও সুসজ্জিত পৃথিবী ও তার সবকিছু এক সময় আল্লাহর হুকুমে ধ্বংস ও বিরান হয়ে যাবে। এর পর আবার মহান রবের আদেশে সব প্রাণী জীবিত হয়ে যাবে। এর পর বিচার হবে। যখন কেয়ামত হবে তখন মানুষের যাবতীয় অপরাধ প্রমাণের জন্য পৃথিবীর মাটি সাক্ষ্য দেবে।
যে যে স্থানে অপরাধ করেছে সে স্থান তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, এক দিন রাসূল (সা.) এই আয়াতখানা তেলাওয়াত করলেন- (কেয়ামতের দিন জমিন তার বৃত্তান্ত প্রকাশ করে দেবে)। তারপর তিনি বললেন, তোমরা কি জান জমিনের বৃত্তান্ত কী? সাহাবিরা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বললেন, জমিনের বৃত্তান্ত হলো, প্রত্যেক পুরুষ ও নারী সম্পর্কে এই সাক্ষ্য দেবে যে, সে তার পৃষ্ঠে অবস্থানকালে কী করেছে, তা এভাবে বলবে, এ ব্যক্তি অমুক কাজটি অমুক দিন আমার উপরে করেছে। তিনি বললেন, এটাই জমিনের বৃত্তান্ত।
(আহমদ ও তিরমিজি)। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরকালে লজ্জিত হওয়া থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
লেখক : খতিব, বাইতুর রহমত জামে মসজিদ, গাজীপুরা, টঙ্গী
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।