আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আগামীকাল চেলসির বিয়ে : সবাইরে দাওয়াত



কল্পনাকেও হার মানায় এমন কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে আগামীকাল ক্লিনটন-হিলারি তনয়া চেলসি ভিক্টোরিয়া ক্লিনটনের বিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বর দীর্ঘদিনের বয়ফ্রেন্ড মার্ক মেজভিনস্কি। এ বিয়ে নিয়ে মিডিয়ায় গুঞ্জন শুরু হয়েছিল বছর চারেক আগেই। তবে আগামী-কালকে বিয়ের অনুষ্ঠান নিয়ে মার্কিনিদেরও আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। দাওয়াত না পেলেও বিয়ে-ভেন্যুর আশপাশের সব হোটেল, রিসোর্ট আগেভাগেই বুকিং করে ফেলেছেন তারা।

বিদেশি মিডিয়াও ঘুর ঘুর করছে নিউইয়র্কজুড়ে। সাধারণ মার্কিনিরা বলছেন, ‘আমাদের তো রাজপরিবার নেই। রাজা নেই, রানীও নেই। চেলসির প্রতি সব মার্কিনির রয়েছে আলাদা একটা আকর্ষণ। তাই এ বিয়েকে আমরা রাজকীয় ভেবেই আনন্দ পেতে চাইছি।

’ অথচ ২০০৮ সালে টেক্সাসে সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের মেয়ে জিনার বিয়ে নিয়ে মার্কিনিরা মোটেও মাততে পারেনি। অবশ্য মিডিয়া শত চেষ্টা করেও চেলসির শতাব্দী-কাঁপানো বিয়ের ধরন-ধারণ সম্পর্কে নিশ্চিত বিছু বলতে পারেনি, যা লেখা হচ্ছে সবই অনুমান। শেষে ক্লান্ত হয়ে মিডিয়া স্বীকার করে নিয়েছে : ‘গোপনীয়তা? এটাও চেলসিস্টাইল। অভিনন্দিত চেলসি প্রমাণ করেছেন, বিয়েতে গোপনীয়তা বজায় রাখা সম্ভব। ’ মজার ব্যাপার হচ্ছে, চেলসি এখন পর্যন্ত মিডিয়ায় ইন্টারভিউ দেননি।

নিরাপত্তার বহর দেখে মিডিয়া আগেভাগেই রায় দিয়ে ফেলেছে, ‘এটাই হবে গত এক দশকের সেরা বিয়ে। ’ মিডিয়া হিলারিকে বারবার বিরক্ত করেও একই জবাব পেয়েছে ‘আরে বাবা, বিয়ে হচ্ছে চেলসির। তাকেই জিজ্ঞেস করে দেখুন না। ’ কত টাকা খরচ হচ্ছে চেলসির বিয়েতে? সঠিক তথ্য কারও কাছে পাবেন না। কেউ বলছেন ২০ লাখ ডলার।

কেউবা ৩০ লাখ ডলার। কারও মতে ৭০ লাখ ডলার। তবে আমেরিকার এবিসি নিউজ এক তথ্যে দাবি করেছে, চেলসির বিয়েতে ক্যাটারিংয়ে সাড়ে ৭ লাখ ডলার, ফুল বাবত আড়াই লাখ ডলার, মিউজিকে ৪০ হাজার ডলার, বিয়ের পোশাক বাবত ১৫ হাজার ডলার, ফটোগ্রাফিতে ৩৫ হাজার ডলার, ভিডিওতে ২৫ হাজার ডলার, লাইটিংয়ে ১ লাখ ডলার, মেকাপে ২০ হাজার ডলার, নিমন্ত্রণে ৫০ হাজার ডলার, অনুষ্ঠান পরিকল্পনায় পোনে ২ লাখ ডলার, নিরাপত্তায় ৩০ হাজার ডলার ও বিবিধ খাতে ৫০ হাজার ডলার ব্যয় হচ্ছে। চেলসির বিয়ের পোশাক সম্পর্কেও চূড়ান্ত তথ্য মেলেনি। তাই বলা যাচ্ছে না বধূবেশে চেলসির গায়ে উঠবে কোন পোশাক? ‘অস্কার ডি লা রেনাতা’ নাকি ‘ভিরা ওয়াং?’ হাডসন নদীর তীরে নিউইয়র্কের রাইনবিক এলাকার শতাব্দী প্রাচীন বাড়ি অ্যাস্টর কোর্টে চেলসির বিয়ের আতশবাজি পোড়াবে।

ফ্রেঞ্চস্টাইলে নির্মিত ৫০ একরের এ ঢাউস বাড়ির ভেতরে ঢুকতে গিয়ে এরই মধ্যে দুই বিদেশি সাংবাদিক আটক হয়েছেন। আকাশপথে হেলিকপ্টার যোগে পাপারাজ্জিরা যাতে ছবি তুলতে না পারেন, সে লক্ষ্যে এলাকাটিকে ‘নো-ফ্লাই জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আর বাড়িটির চারপাশে এত ঘনজঙ্গল, বাইরে থেকে উঁকি মেরেও কেউ কিছু ঠাওর করতে পারবেন না। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবুতে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। প্রায় ৫শ’ হাই-প্রোফাইল অতিথি এ বিয়েতে দাওয়াত পেয়েছেন।

তবে যাদের চেলসি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না, তারা দাওয়াত পাননি। সৌভাগ্যবানরাও আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত জানতে পারবেন না, বিয়ের মেন্যুতে কী কী থাকছে। ওপরা উইনফ্রে, বারবারা স্ট্রেইসেন্ড, মিডিয়া মুগল টেড টার্নার, স্টিভেন স্প্রিলবার্গসহ সেলিব্রেটিরা এ বিয়েতে থাকছেন বলে জানা গেছে। দাওয়াত পেলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যোগ দিতে পারছেন না। নিরামিষভোজী চেলসির বাবা বিল ক্লিনটন সাউদার্ন ব্যাপটিস্ট, মা হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন মেথলজিস্ট।

বর মেজভিনস্কি ইহুদি। কোন ধর্মরীতিতে এ বিয়ে সম্পন্ন হবে, তা জানা যায়নি। ইহুদিরা এরই মধ্যে শোর-চিত্কার করে জানতে চাইছে, চেলসি-মেজভিনস্কির সন্তানরা কোন ধর্মের পরিচয় দেবে। গুজব রয়েছে, চেলসি পরে ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করবেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মা-বাবার ছায়া থেকে বের হয়ে আসতেই চেলসি সুস্থির পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন।

২০০৫ সাল থেকে চেলসি-মেজভিনস্কি ডেটিং শুরু করলেও গত বছরের নভেম্বরে এ হবু দম্পতি তাদের বাগদানের কথা ঘোষণা দেন। তবে গত ২৫ এপ্রিলের আগে চেলসির ঘনিষ্ঠজনরাও তার হাতে এনগেজমেন্ট রিং দেখেননি। নিউইয়র্কের ট্যারাপিন রেস্তরাঁর মালিক জোশ ক্রুনার বিয়ের খানা পাকাবেন। মেন্যুতে কী কী থাকছে, তা বলতে রাজি হননি তিনি। ধারণা করা হচ্ছে, অহি টুনা মাছ আর আদার সমন্বয়ে তৈরি বিখ্যাত ডিশ থাকছেই।

চেলসির বয়স এখন ৩০ আর বর মেজভিনস্কির বয়স ৩২। বরের মা-বাবাও রাজনীতিবিদ। দুজনই ডেমোক্রেট দলের কংগ্রেসম্যান ছিলেন। চেলসির সঙ্গে মেজভিনস্কির প্রথম পরিচয় টিনএজ থাকাকালেই। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত তারা একসঙ্গেই পড়েছেন।

মেজভিনস্কি এখন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকার। মেজভিনস্কিরা ১১ ভাই-বোন। অবশ্য বেশিরভাগই দত্তক। মা-বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে অনেক আগেই। জুডি কলিন্সের বিখ্যাত গান ‘চেলসি মর্নিং’ অনুসারেই ক্লিনটন দম্পতি মেয়ের নাম রাখেন চেলসি।

হোয়াইট হাউসে থাকাকালে তার গোপন নাম ছিল ‘এনার্জি’। ওই সময়ই চেলসি লাইমলাইটে আসেন। অক্সফোর্ডপড়ুয়া চেলসি চোস্ত জার্মান বলতে পারেন। কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি জনস্বাস্থ্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন সূত্র: Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।