আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুরা ইউনুস (৯০-৯৬) : জুলুমকারী 'ফিরাউনেরা' ডুববে একসময় কিন্তু সুবিধাবাদী

জেলখানাতে যাওয়া প্রত্যেক বালেগ নর-নারীর জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয়।
************ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। ************** আয়াত- ৯০) আর আমি বনী ইসরাঈলকে সাগর পার করে নিয়ে গেলাম৷ তারপর ফেরাউন ও তার সেনাদল জুলূম নির্যতন ও সীমালংঘন করার উদ্দেশ্য তাদের পেছনে চললো৷ অবশেষে যখন ফেরাউন ডুবতে থাকলো তখন বলে উঠলো, আমি মেনে নিলাম, নবী ইসরাঈল যার উপর ঈমান এনেছে তিনি ছাড়া আর কোন প্রকৃত ইলাহ নেই, এবং আমিও আনুগত্যের শির নতকারীদের অন্তরভুক্ত৷*** ৯১ **৯১ . বাইবেলে এ ঘটনার কোন উল্লেখ নেই৷ তবে তালমূদে বলা হয়েছে ডুবে যাওয়ার সময় ফেরাউন বলেছিলঃ আমি তোমার ওপর ঈমান আনছি৷ হে প্রভূ! তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই৷ আয়াত-৯১) (জবাব দেয়া হলো) এখন ঈমান আনছো! অথচ এর আগে পর্যন্ত তুমি নাফরমানী চালিয়ে এসেছো এবং তুমি বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের একজন ছিলে৷ আয়াত-৯২) এখন তো আমি কেবল তোমার লাশটাকেই রক্ষা করবো যাতে তুমি পরবর্তীদের জন্য শিক্ষনীয় নিদর্শন হয়ে থাকো৷ **৯২ যদিও অনেক মানুষ এমন আছে যারা আমার নিদর্শনসমূহ থেকে উদাসীন৷ ***৯৩ ***৯২ . সিনাই উপদ্বীপের পশ্চিম সাগর তীরে সেখানে ফেরাউনের লাশ সাগরে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল আজো সে জায়গায়টি অপরিবর্তিত রয়েছে৷ বর্তমান সময়ে এ জায়গাটির নাম জাবালে ফেরাউন বা ফেরাউন পর্বত৷ এরি কাছাকাছি আছে একটি গরম পানির ঝরণা৷ স্থানীয় লোকেরা এর নাম দিয়েছে হাম্মামে ফেরাউন৷ এর অবস্থান স্থল হচ্ছে আবু যানীমর কয়েক মাইল ওপরে উত্তরে দিকে৷ স্থানীয় লোকেরা এ জায়গাটি চিহ্নিত করে বলে, ফেরাউনের লাশ, এখানে পড়ে থাকা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল৷ এ ডুবন্ত ব্যক্তি যদি মিনফাতাহ ফেরাউন হয়ে থাকে, যাকে আধুনিক গবেষনার মূসার আমলের ফেরাউন বলে চিহ্নিত করা হয়েছে , তাহলে এর লাশ এখনো কায়রোর যাদু ঘরে রয়েছে৷ ১৯০৭ সালে স্যার গ্রাফটিন এলিট স্মিথ তার মমির ওপর থেকে যখন পট্রি খুলেছিলেন তখন লাশের ওপর লবনের একটি স্তর জমাটবাধা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল৷ এটি লবণাক্ত পানিতে তার ডুবে যাওয়ার একটি সুষ্পষ্ট আলামত ছিল৷ ****৯৩ . অর্থাৎ আমি তো শিক্ষনীয় ও উপদেশমূলক নিদর্শনসমূহ দেখিয়েই যেতে থাকবো, যদিও বেশীর ভাগ লোকদের অবস্থা হচ্ছে এই যে, বড় বড় শিক্ষনীয় নিদর্শন দেখেও তাদের চোখ খোলে না৷ আয়াত-৯৩) বনী ইসরাঈলকে আমি খুব ভালো আবাসভূমি দিয়েছি*** ৯৪ এবং অতি উৎকৃষ্ট জীবনোপকরণ তাদেরকে দান করেছি৷ তারপর যখন তাদের কাছে জ্ঞান এসে গেলো, তখনই তারা পরষ্পরে মতভেদ করলো৷*** ৯৫ নিশ্চয়ই তোমার রব কিয়ামতের দিন তাদের মধ্যে সেই জিনিসের ফায়সালা করে দেবেন, যে ব্যাপারে তারা মতভেদে লিপ্ত ছিল৷ **৯৪ . অর্থাৎ মিসর থেকে বের হবার পর ফিলিস্তিন৷ **৯৫ . এর অর্থ হচ্ছে, পরবর্তী পর্যায়ে তারা নিজেদের দীনের মধ্যে যে দলাদলী শুরু করে এবং নতুন নতুন মাযহাব তথা ধর্মীয় চিন্তাগোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটায় তার কারণ এ ছিল না যে, তারা প্রকৃত সত্য জানতো না এবং না জানার কারণে তার বাধ্য হয়ে এমনটি করে৷ বরং আসলে এসব কিছুই ছিল তাদের দুর্বৃত্তসূলভ চরিত্রের ফসল৷ আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদেরকে সুষ্প্ষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছিলঃ এ হচ্ছে, সত্য দীন, এ হচ্ছে তার মূলনীতি, এগুলো- এর দাবী ও চাহিদা, এগুলো হচ্ছে কুফর, ও ইসলামের পার্থক্য সীমা, একে বলে আনুগত্য৷ আর এর নাম হচ্ছে গোনাহ, এসব জিনিসের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে জবাবদিহে করতে হবে এবং এসব নিয়মনীতির ভিত্তিতে দুনিয়ায় তোমরা জীবন প্রতিষ্ঠিত হতে হবে৷ কিন্তু এ সুষ্পষ্ট হেদায়াত সত্ত্বেও তারা একটি দীনকে অসংখ্য দীনে পরিণত করে এবং আল্লাহর দেয়া বুনিয়াদগুলো বাদ দিয়ে অন্য বুনিয়াদের ওপর নিজেদের ধর্মীয় ফেরকার প্রসাদ নির্মাণ করে৷ আয়াত-৯৪) এখন যদি তোমার সেই হিদায়াতের ব্যাপারে সমান্যও সন্দেহ থেকে থাকে যা আমি তোমার ওপর নাযিল করেছি তাহলে যারা আগে থেকেই কিতাব পড়ছে তাদেরকে জিজ্ঞেস করে নাও৷ প্রকৃতপক্ষে তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার কাছে এ কিতাব মহাসত্য হয়েই এসেছে৷ আয়াত-৯৫) কাজেই তুমি সন্দেহকারীদের অন্তরভূক্ত হয়ো না এবং যারা আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা বলেছে তাদের মধ্যেও শামিল হয়ো না, তাহলে তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের দলভুক্ত হবে৷ ***৯৬ ***৯৬ . বাহ্যত এ সম্বোধনটা করা হয়েছে নবী (সা) কে ৷ কিন্তু আসলে যারা তার দাওয়াতের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেছিল৷ তাদেরকে শুনানোই মূল উদ্দেশ্য৷ এ সংগে আহলি কিতাবের উল্লেখ করার কারণ হচ্ছে এই যে, আরবের সাধারণ মানুষ যথার্থই আসমানী কিতাবের জ্ঞানের সাথে মোটেই পরিচিত ছিল না৷ তাদের জন্য এটি ছিল একটি সম্পূর্ণ নতুন আওয়াজ৷ কিন্তু আহলি কিতাবরদের আলেমদের মধ্যে যারা ধর্মভীরু এ ন্যায়নিষ্ঠ মননশীলতার অধিকারী ছিলেন তারা একথার সত্যতার সাক্ষ্য দিতে পারতেন যে কুরআন যে জিনিসটির দাওয়াত দিয়ে যাচ্ছে পূর্ববর্তী যুগের সকল নবী তারই দাওয়াত দিয়ে এসেছেন৷ আয়াত-৯৬) আসলে যাদের ব্যাপারে তোমার রবের কথা সত্য সাব্যস্ত হয়েছে** ৯৭ ***৯৭ . সে কথাটি হচ্ছে, এই যে, যারা নিজেরাই সত্যের অন্বেষী হয় না এবং যারা নিজেদের মনের দুয়ারে জিদ, হঠকারিতা , অন্ধগোষ্ঠী প্রীতি ও সংকীর্ণ স্বার্থ বিদ্বেষের তালা ঝুলিয়ে রাখে আর যারা দুনিয়া প্রেমে বিভোর হয়ে পরিণামের কথা চিন্তাই করে না তারাই ঈমান লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত থেকে যায়৷
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৫ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.