ব্যাতিক্রম থাকার চেষ্টা করে পাগল বলে গণ্য হয়েছি বহু,তবুও আমি আমার মতো, কেউ নেই আমার মতো।
হঠাত্ করেই শুনি আমার নাকি বিয়ে। বাসা থেকে আব্বা আম্মা ঠিক করে ফেলেছে। 'পড়ালেখা করি না, কোন কাজের না' এই যুক্তিতে আমাকে বিয়ে করানো হবে যদি মতিগতি ফিরে। মেয়ে হচ্ছে আমার এক কাজিন, যাকে আমি দেখতে পারি না।
গত ছয় বছরে একটা কথাও বলি নি। আমি নারাজ বিয়েতে। দুলাভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি নাকি এতে নাক গলাবেন না। এমনিতেই আমার উপর বিরক্ত। আমি মনে মনে অস্বস্থিতে, এই মেয়েরে বিয়ে করব না।
এখন কিভাবে বাসায় বলি যে আমার পছন্দের একজন আছে। এদিকে বিয়ের সদাইপাতি হয়ে গেছে। আমি হতবাক। আম্মাকে বললাম, ওরে আমি বিয়ে করব না। বিয়ে যখন করব তখন আমার নিজের পছন্দের একজনকেই করি? আম্মা আমার কথায় নাখোশ হলেও রাজি হয়ে গেল।
'ইয়েস ইয়েস' চিল্লাইতে চিল্লাইতে লাফাইতে লাগলাম। অতঃপর
↓
↓
↓
↓
↓
আমার ঘুম ভাঙ্গিয়া গেলো যাক বাঁচলাম! আমার আর বিয়ে করা লাগলো না।
বিয়ে তখন না করা লাগলেও আমার হবু বউ ফেবুতে এই স্ট্যাটাসের প্রথমভাগ দেখে ভড়কে গেলো তার কাছে সত্যিই মনে হলো আমার বিয়ে হয়ে যাবে, যখন সে মানুষিকভাবে বিপর্যস্ত তখন আবিষ্কার করল ব্যাপারটা সত্যি সত্যি নয়, স্বপ্নে ঘটছে আমারে ফোন করে বলে, 'ভালো তো, কাজিনকে বিয়ে করে ফেলো। '
যাহ বাবা সে তো ক্ষেপে গেছে তখন আমি তাকে কী বলে ম্যানেজ করলাম সেদিকে আর না যাই
তখনকার ঘটনা, বেশ কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করতেছি আমার কানে কিছু সমস্যা দেখা দিছে। কেউ কিছু কইলে আমি অন্য কিছু শুনি।
এটা নিয়ে প্রায় বেশিরভাগই ফোনে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ি।
মে মাসের কথা, সপ্তাহখানেক আগে ছোটবোনের বার্থডে গেছে। হালকা পাতলা মেজবান হয়েছে বাসায়, আমি ঢাকা থেকে যেতে পারলাম না, আকাইম্ম্যা মানুষের কাজকাম বেশি থাকে বলে। রাতে ফোন দিছি তো সে মেজবানের কথাবার্তা বর্ণণা করতেছে, এক পর্যায়ে বলল, 'কিছু আত্নীয়স্বজন আইছে। '
আমি বললাম, 'সুজন? কোন সুজন আইছে?'
ও বলে, 'সুজন কেডা?'
'আরে মোর জ্বালা তুইই তো কইলি সুজন আইছে।
'
'আমি কই কইলাম সুজন আইছে! কইছি আত্নীয়স্বজন আইছে। '
এই হইলো আমার কানের অবস্থা।
বউয়ের লগে কথা বলার সময় প্রায়সময়ই এরকম প্যাঁচ লেগে যায়। সেদিন কথা প্রসঙ্গে বলতেছে, 'শুধু তোমার জন্যে। '
আমি বললাম, 'কি বললা!!!'
'কই কি কইছি!'
আমি কি বুঝেছিলাম সেটা আর বললাম না।
এরপর বউ রেগে গিয়ে বলল, 'খালি ঐসব চিন্তাই তো তোমার মাথায় ঘুরে সারাদিন, আর কিছু না। '
আমি সাথে সাথে প্রতিবাদ করলাম, 'আরে কি যে কও, আমি ভালো ছেলে, উল্টাপাল্টা কিছু চিন্তা করি না। '
'হুম জানিই তো কেমন ভালো ছেলে! একটা কইলে আরেকটা শোনো আর তাও খালি এডাল্ট কথাবার্তা। '
আমি ঝাড়ি খেয়ে হতাশ নয়নে আকাশের দিকে তাকালাম, হায়রে নিজেরে বউয়ের সামনে ভালো ছেলে হিসেবে প্রমাণ করতে পারলাম না।
এর মাসদুয়েক পরে, যথারীতি আমি কানে উল্টাপাল্টা শুনি।
মানে কেউ যদি 'আকার' বলে তো আমি শুনি 'আবার', এমন আর কি!
সেবারের ঘটনা, আমার কানের সমস্যা থাকাকালীন সময়েই বউর কানে সমস্যা দেখা দিলো। তিনিও কানে উল্টাপাল্টা শুনেন। একদিন কি এমন একটা কথা বলছে আর আমি চান্সে পাইয়া তার ডায়লগ তারে ফিরায় দিলাম, 'হুম খালি এসব অশ্লীল জিনিসই ভাবো তাই না??'
বেচারী হতাশ, আগে দিত সে বাঁশ, এবার দিলাম আমি বাঁশ।
চলতেছে ঘটনা এমনই, রোজার প্রথম দিককার ঘটনা। কাপড় কেনার গল্পের প্রসঙ্গে হঠাত্ করে বউ বলে উঠলেন, 'আম্মু আসতেছে, আবার মার্কেটে যাবো।
'
আমি বললাম, 'কীহ্হ!!!'
তিনি বললেন, 'কি হইছে?'
আমি বললাম, 'কি বলছো আবার বলো?'
ভালো করে শুনে আমি হাসতে লাগলাম, উনি জিজ্ঞেস করে, 'হাসির কি হইলো!!'
আমি বললাম, 'আমি আসলে শুনছি তুমি বলছো 'আবার মার পেটে যাবো' হাহাহা'
কানের অবস্থা যেমন তেমন চালিয়ে নেয়া যায়, কিন্তু চোখও উল্টাপাল্টা দেখা শুরু করল!!
তখন ফেবুতে একজনের স্ট্যাটাস দেখেছিলাম, 'পু*কীটা চলে গেল.....'
প্রথম লাইন পড়ে তো পুরাই তব্দা, 'মেয়ে লেখলো কি এইটা!!'
আবার পড়ে দেখি, নাহ ঐখানে লেখা আছে, 'পুচকীটা চলে গেল.....'
এইডা কিছু হইলো!!
অনেক অনেক আগের কথা, একটা অতি সুন্দরী মেয়ে যে কিনা আমার ফ্রেন্ডলিস্টের, আমাকে খুব সুন্দর করে আদুরে গলায় ডাকত ভাইয়া, তারপর সে বেদ্দপ হয়ে গেল আমারে ভালবেসে। ফেবুতে তখন স্ট্যাটাস দিছিলাম,
''একটা বেদ্দপ মেয়ে আছে যে কিনা আগে আমারে 'আকিব ভাইয়া' ডাকত আর এখন সবার সামনে আমারে নাম ধইরা ডাকে।
দুঃখের বিষয় সে এখন আমার গার্লফ্রেন্ড......''
ঐ পোস্টে এসে রিয়েল ডেমোন (রিক ভাই) এসে কমেন্ট করে, 'সেইম হেয়ার ম্যান'
দুজনেই একই কষ্টে কষ্টিত
যা হোক সবকিছুই ভালো চলছে আমার বউয়ের সাথে, শুধু একটা 'বেদ্দপ মেয়ে'র কাছে আমি 'অশ্লীল পোলা' হয়েই রইলাম
একদিন এক ছোট ভাই ইনবক্সে আমার কাছে বুদ্ধি চাইলো, সে তার গার্লফ্রেন্ডকে কি গিফট দিবে তা নিয়া কনফিউজড্। সামনে কোন একদিন দেখা করতে যাবে।
আমি তারে মেয়েদের কি কি গিফট করা যায়, কত দাম, কই কই পাওয়া যায় সব কইলাম।
আটদশটা আইটেম বলার পর সে বলে, 'না, মানে এমন কিছু দিতে চাইছিলাম যেন তার ফ্যামিলির কেউ না দেখে আর কি, দেখলে প্রবলেম। '
আমি কইলাম, 'এক কাম করো, স্যানেটারি ন্যাপকিন গিফট করো আর না হয় আন্ডার গার্মেন্টস। ও গায়ে জড়ায়া রাখবো ঠিকই মাগার ওর ফ্যামিলির কেউ দেখবো না। '
যা হোক বেচারা শেষ পর্যন্ত গিফট কিনতে যায় নি, তার মাসখানেকের প্রেমিকা হঠাত্ করে ডুব মেরে দেয়। আর দেখা হয় নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।