দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ক্লান্ত টুন। সে এখন পদ্মায়।
এ যেন এক নতুন দেশ, সবকিছুই অচেনা লাগছে তার। চলার পথ অগে কত সোজা ছিলো, এখন পথে পথে বাধা। বালি আর মাটির পাহাড়।
পানি ছিলো কত গভীর, এখন পানির ভিতর থেকে মাথার উপর সুজ্জি মামা দেখা যায়। একটু এক জায়গায় দাঁড়ালে গরম লাগে। মাথার উপর কোন ডাল পালা ওয়ালা গাছ নাই। দুর দুরান্তে কোনো স্বজাতির বসত চোখে পড়ে না। শ্যাওলার বাগান, চারন ভুমি কিছুই খুঁজে পায়না টুন।
কিভাবে এসব হলো, কোথায় গেছে সব স্বজন পরিজন, চেনা জানা স্বজাতিরা? আকাশ পাতাল ভাবতে ভাবতে মাটি ছুঁয়ে অসল পর্যটকের মত সাঁতার কেটে এগিয়ে যায় সে।
প্রচন্ড খিদায় শরীর আরো দুর্বল বোধ করছে টুন। এই এলাকায় বাবার সাথে কত ঘুরে ফিরে খাবার খেয়েছে টুন। এখানে তার নানা বাড়ি ছিলো। এখন কিছুই খুজে পাই না সে।
হঠাৎ একটা নটংপ্লা দেখতে পেলো। নটংপ্লা টুনের প্রিয় খাদ্য। দাদার দেশে অনেক আছে। এখানে এবার আসার পর প্রথমা একটা খুজে পেলো। প্রচন্ড খিদার তাড়ায় তাড়া করলো নটংপ্লাটিকে।
নটংপ্লা হলো পানির ছোট পোকা মাকড়। টুন যেটা পছন্দ করে তাকে লেখাপড়া মানুষে বলে ড্যাফনিয়া প্লাংটন। শক্তিহীন শরীরে ছুটতে গিয়ে সজোরে ধাক্কা খেলো শক্ত কিসে যেনো। কয়েক নুহুর্ত যেনো কিছুই খেয়াল ছিলো না তার, বোধ হয় হুশ হারিয়েছিলো। স্বাভাবিক হয়ে সে খেয়াল করলো ওটা বাঁধানো পদ্মার তীর।
বাঁধানো তীর ঘেঁসে এগিয়ে যেতে লাগলো টুন।
সামনের পানিটা কেমন যেনো একটু বেশি ঘোলা। মাঝে মাঝে কি যেনো উপর থেকে নিচে যাচ্ছে। একটু পর পর আবার দ্রুত বেগে কোথায় যেনো হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। আজিব তো।
কত কি যে দেখার আছে বাকি। টুন এগিয়ে গেলো। ওয়াও!! কি মজা!! কি মজা!!! আমার আর একটা প্রিয় খাবার "চোঁকে"। আগে কয়েক টা খাওয়া যাক। টুন যেই এগিয়েছে অমনি চোঁকে হঠাৎ ছোঁ মেরে হারিয়া গেলো।
শক্ত কিসের সাথে যেনো বাড়ি খেলো টুন। আ হা হা হা,, উ উ.. কি দুর্দশা আমার, একটুকরো খাবারের জন্য। একি আবার আর একটা এসে পড়লো দেখছি কোথা থেকে। পেয়েছি আর একটা। জান বাঁচানো আগে ফরজ কাজ।
এবার আর পালিয়ে যেতে দেয়া হবে না। এমন সময় পেছন থেকে ঘাড়ের কাছে কে যেনো ছোঁয়া দিলো। চমকে পেছন ফিরলো টুন। আশ্চর্য, তার স্বজাতি একটা তরুনী পুটি। কি চমৎকার দেখতে।
এত সুন্দর পুঁটি মেয়ে টুন কখনও দেখেনি। খাবারের কথা বেমালুম ভুলে গেছে টুন। এক দিকে পদ্মায় ফিরে এই প্রথম কোনো স্বজাতির সাথে দেখা হওয়ার আনন্দ তার উপর এত সুন্দরী পুটি তরুনী।
টুনের লেজের কাছে টোকা দিলো পুটি তরুনীটি। মাছেদের ভাষায় আইস ব্রেকিং এটা, বাংলায় আমরা যেমন বলি হাই, বা হ্যালো ইত্যাদি।
তার পর স্বাভাবিক ভাবে বললো ওটা ফেলে দাও। আমার সাথে এস... । খিদে যেনো বেমালুম উবে গেছে টুনের। মন্ত্র মুগ্ধের মত তার সাথে এগিয়ে গেলো টুন। আমি তোমাকে বেশ কিছুক্ষন হলো ফলো করছিলাম।
নিশ্চয় আমাদের পদ্মার নও তুমি। নতুন এসেছো। পরিচিত হই আমার নাম....(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।