লটকন আমাদের দেশি ফল। অঞ্চলভিত্তিক এর বেশ কিছু স্থানীয় নাম আছে। চট্টগ্রামে এর নাম হাড়ফাটা, সিলেটবাসী চেনে ডুবি নামে। ময়মনসিংহে বলে কানাইজু। এ ছাড়া লটকা, লটকাউ, কিছুয়ান —এসব নামেও ফলটি পরিচিত।
আঙুরের মতো থোকায় থোকায় ধরে বলে ইংরেজিতে এর নাম Burmese grap। বৈজ্ঞানিক নাম Baccaurea sapida। গাছ ছোটখাটো ঝাঁকড়া ধরনের। পাতা ডিম্বাকৃতির, গাঢ় সবুজ। বসন্তে ফুল আসা শুরু।
ফল পাকতে বর্ষা। ডুমুরের মতো লটকনও গাছের কাণ্ড ও মোটা ডালের বাকল ফেটে লম্বা বৃন্তে গুচ্ছাকারে ধরে। একটি গুচ্ছে কুড়ি থেকে ত্রিশটি পর্যন্ত ফল ধরতে পারে। লটকন বেশ পরিচিত ফল। সে কারণে কম-বেশি সবাই জানে এর মোটা খোসার ভেতরে তিন-চারটি রসাল কোষ থাকে, যেগুলোর স্বাদ অম্লমধুর।
কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে জানা গেল, লটকন নিয়ে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে গবেষণামূলক কাজ হয়েছে। গবেষকেরা বারি-১ নামে লটকনের একটি উন্নতজাত উদ্ভাবন করেছেন।
লটকনের পুষ্টিমান প্রচুর। আসলে আমাদের দেশি মৌসুমি ফলগুলোর প্রতিটিই স্বাদে যেমন বিচিত্র, তেমনি পুষ্টিমানেও অনন্য। লটকনে প্রচুর পরিমাণ রয়েছে ভিটামিন বি-২, ভিটামিন-সি।
এ ছাড়া ফলটি ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহসহ বিভিন্ন খনিজ উপাদানে সমৃদ্ধ। রোজ আমাদের দেহের জন্য যে পরিমাণ ভিটামিন সি প্রয়োজন, চারটি লটকন সেই চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট। লটকনের ভেষজগুণও রয়েছে। এটি অত্যধিক তৃষ্ণা নিবারণ ও বমনের ভাব দূর করতে কার্যকর। শুকনো পাতার গুঁড়ো সেবনে ডায়রিয়া নিরাময় ও মানসিক চাপ কমে।
কাজেই হাতের নাগালে থাকা দেশি ফলের স্বাদ যত বেশি, আস্বাদন করা যায় ততই ভালো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।