আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে ছয় কোটি ষাট লাখ টাকা চাদাবাজীর অভিযোগ , চাচাত শ্যালক নিপু জড়িত


এবার খোদ প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে ছয় কোটি ষাট লাখ টাকা চাদাবাজীর অভিযোগে করেছেন নারায়নগঞ্জের নসিব পরিবহনের মালিকরা। তিনি তার চাচাত শ্যালক জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপুর মাধ্যমে নসিব পরিবহন সংস্থা থেকে এই বিপুল অংকের টাকা চাঁদা নিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। নসিব পরিবহনের বাস মালিকদের অভিযোগ- চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করলেই মালিকদের নির্যাতন করা ও বাস লাইন থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। চাঁদাবাজি থেকে পরিত্রান পেতে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, র‌্যাব, পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কাছে অভিযোগ করেছেন এ সংস্থার ১৭ জন বাস মালিক। নারায়ণগঞ্জ বাস টার্মিনাল থেকে লিংক রোড হয়ে নসিব পরিবহন সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড় পর্যন্ত চলাচল করে।

এর বাস সংখ্যা চব্বিশটি। ভাড়া আঠার টাকা। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে দেয়া আবেদনপত্রে নসিব পরিবহনের বাস মালিকরা বলেন, ২০০৫ সাল থেকে বাস কোম্পানীটি গঠনের পর কোন সমস্যা ছিলো না। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি এহসানুল হক নিপু (শামীম ওসমানের চাচাত শ্যালক) জোর করে আমাদের কোম্পানী থেকে প্রতিদিন দশ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। আমরা তখন বিষয়টি সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানকে জানালে বিষয়টি তিনি সমাধান করে দেয়ার আশ্বাস দেন।

এবং বিষয়টি নিয়ে বারাবারি না করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে তার কাছে আমরা বহুবার গিয়েও কোন সদুত্তর না পেয়ে বুঝতে পারলাম যে এ কে এম শামীম ওসমানের নির্দেশেই নিপু আমাদের কাছে চাঁদা দাবী করছে। আমরা নারায়ণগঞ্জের প্রশাসনকে মৌখিক ও লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েও সমস্যার সমাধান পাইনি। পরবর্তীতে নিপু ও তার সহযোগি সাইফুল ইসলাম ভূইয়াদের সকল অন্যায় কাজগুলো নিরবে সহ্য করে যেতে লাগলাম। নিপু নিজের একক ক্ষমতায় , নিজেই সাক্ষর করে ২০০৯ এর ৭ জানুয়ারী (আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার ছয়দিন পরে) নসিব পরিবহনের একটি উপদেষ্টা কমিটি কমিটি গঠন করে।

সে কমিটিতে সে ২ নাম্বার উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হয়। যা সম্পূর্নভাবে অবৈধ ও অগনতান্ত্রিক। পরবর্তীতে সে নসিব পরিবহনের মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মালিকদের বেকায়দায় ফেলে স্বাক্ষর নিয়ে নিজে কোম্পানীর চেয়ারম্যান ও তার সহযোগি সাইফুলকে পরিচালক বানিয়ে লুটপাট শুরু করে দেয়। আবেদনে তারা আরো বলেন, নিপুর নেতৃত্বাধীন চাঁদাবাজ চক্র প্রথম দিকে দৈনিক দশ হাজার টাকা করে চাঁদা নিতো। নিপু কোম্পানীর চেয়ারম্যানের পদ দখল করার পর থেকে মাসে কোম্পানীর কাছ থেকে মাসিক কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা নিয়ে গেছে।

যা কোম্পানীর আয়ের সিংহভাগ। ফলে মালিকরা বলতে গেলে কোন টাকাই পাচ্ছে না। উল্টো গাড়ি মেরামতের টাকা তাদের পকেট থেকে দিতে হচ্ছে। ২০০৯ এর ৭ জানুয়ারী হতে ২০১৩ এর জুলাই পর্যন্ত চার বছর সাত মাসে শামীম ওসমানের ছত্রছায়ায় তার শ্যালক নিপু নসিব পরিবহন থেকে কমপক্ষে ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা চাঁদা নিয়ে গেছে। কোম্পানীর আয়ের খাতাপত্র আমাদের দেখতে দেয়না।

দেখতে দিলে আমরা নিশ্চিত এ চাঁদাবাজির পরিমান আরো বেশি হবে। যা আমরা ঐ খাতাপত্রের মাধ্যমে প্রমান দিতে পারবো। এসবের প্রতিবাদ করলেই নিপু-সাইফুল গং মালিকদের মারধর, মামলা-হামলা করে। প্রতিবাদকারি মালিকদের গাড়ি লাইনে চলতে দেয়না। বন্ধ করে সাইড করে রাখে।

চেয়ারম্যান-এমডির পদ দখলের প্রতিবাদ করায় তারা কোম্পানীর বৈধ এমডি মোহাম্মদ আল-আমিনের গাড়ি ( ঢাকা-চ-১২২৮) লাইন থেকে বের করে দেয়। এটি সাড়ে তিন বছর ধরে লাইনের বাইরে আছে। সর্বশেষ গত ২১ আগষ্ট মোহাম্মদ আসলামের দু’টি গাড়ি লাইন থেকে বের করে সাইড করে দেয়। রিজার্ভ ট্রিপের মাধ্যমে আসলাম যে ভাড়া পেয়েছিলো তা থেকে চাঁদা চাওয়ার প্রতিবাদ করায় তার গাড়ি সাইড করা হয়। তারা এ চাঁদাবাজদের নির্মূলের আবেদন জানান।

অভিযোগের ব্যাপারে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হক নিপুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা মালিকদের গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নসিব পরিবহনের চেয়ারম্যান-এমডি হয়েছি। অবৈধভাবে আসিনি। আমরা কোন ধরনের চাঁদাবাজির সাথে জড়িত না। যারা এ অভিযোগ করেছে তারাই এ ব্যাপারে বলতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী বরাবরে যখন অভিযোগ গেছে তখন তার দপ্তরের মাধ্যমেই এটা তদন্ত হোক।

আমরা আমাদের বৈধতা প্রমান করবো। এ ব্যাপারে সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সাথে কথা বলার জন্য তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
 

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।