ছাত্রলীগের প্রতি পত্রিকার মায়াবি আচরণ
সাকিব ফারহান
সোমবার দৈনিকগুলোর জন্য দুটি হট নিউজ। একটি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের বিবদমান গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ অন্যটি পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে উচ্চ আদালতের একটি রায়। প্রথম সংবাদটি ইত্তেফাক ছাড়া সবগুলো পত্রিকার প্রধান শিরোণাম হয়েছে। সমকালের প্রথম পাতায় সবার উপরে চার কলামের একটি ছবি। ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, দেখে মনে হতে পারে সবুজ ঘাসের ওপর শুয়ে কিছু যুবক বর্ষাস্নাত সকাল উপভোগ করছে।
বস্তুত তা নয়। গতকাল জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু‘গ্রুপের সংঘর্ষ চলাকালে- বেরুণী হলের চার তলার ছাদ থেকে ওদের নিচে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তারা এখন হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে।
ঠিক এর নিচে তিন কলামে লালকালিতে হেডলাইন,‘বেপরোয়া ছাত্রলীগের লঙ্কাকান্ড জাবিতে’। এর পাশে এক কলামে আরো একটি ছবি।
ছবির ক্যাপশনে লেখা, সংঘর্ষকালে চাপাতি হাতে এক ক্যাডার। যদিও ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে একাধিক ছাত্রলীগ ক্যাডারের হাতে ধারালো অস্ত্র।
পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে উচ্চ আদালতের রায়ের সংবাদটি সমকাল দ্বিতীয় প্রধান শিরোণাম করেছে। পত্রিকাটি লিখেছে, রাজধানীতে পুলিশ হেফাজতে পৃথক তিনটি মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে সাত দিনের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। পুলিশ বা অপর কোনো আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যকে এ তদন্ত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত না করে বেসামরিক ব্যক্তি দিয়ে তা গঠন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে এসব ঘটনার ফৌজদারি আইন অনুযায়ী কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করে এর মধ্যেই কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানানোর জন্য হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতকে তা অবহিত করতে ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পরদিন প্রথম আলোর প্রধান সংবাদ ছিল জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের বিবদমান গ্রুপগুলোর মধ্যেসংঘর্ষের কারণ নিয়ে। তারা শিরোণাম করেছে, ‘চাঁদাবাজি ও জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব’। পত্রিকাটি বিস্তারিত উঠিয়ে এনেছে।
জাবি ছাত্রলীগ পরিবহনের চাঁদা, জমি দখল বুঝিয়ে দেওয়াসহ নানা ধরনের অবৈধ অর্থ আহরণে জড়িয়ে আছে। টাকা ভাগাভাগি নির্ভর করে শক্তি অনুযায়ী। যার অধীনে যতবেশি ক্যাডার বা যতবেশি হলের নিয়ন্ত্রণ সে ততবেশি টাকা বাগাতে পারে। এজন্য নেতাদের মধ্যে হল ও ক্যাম্পাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সেখানে একের পর এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটছে। প্রতিবেদনের একটি বিষয় লক্ষণীয় ছিল।
বিশ্ববিদ্যলয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুটি গ্রুপ। এ দুটি গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হোলিখেলা। কর্মী বাহিনী ও ক্যাডাররা জান দিচ্ছে কিন্তু এ দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক। তারা সংবাদমাধ্যমে একই ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন। কেউ কারো বিরুদ্ধে কিছু বলেন নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।