হট নিউজ
ছাত্রলীগের ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃক্মখলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও কঠোর অ্যাকশন নিতে নির্দেশও দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু তাতেও নিবৃত্ত হচ্ছে না। একদিকে হুমকি-ধমকি; অন্য দিকে নেতা আর কতিপয় এমপির প্রশ্রয়ে যা হবার তাই হচ্ছে। ঘটনার পর মাঝেমধ্যে সাংগঠনিক ব্যবস্থা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কারের ঘটনাও কোন ফল দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছাত্রলীগের অভিভাবকত্ব না মানলেও ঘুরেফিরে ছাত্রলীগ কিন্তু আওয়ামী লীগকেই তাদের অভিভাবক বলে মানছে।
যে যা-ই বলুক, জনগণও বিষয়টি বিশ্বাস করে না যে, ছাত্রলীগ আওয়ামী লীগের কেউ নয়। এ প্রসংগটি এলে নাকি হাস্যকর মনে হয় অনেকের কাছে। সুতরাং ছাত্রলীগের অপকর্মের দায়ভার এড়ানোর কোন সুযোগ নাই। বলতেই হয় ছাত্রলীগের চেইন অব কমান্ড একেবারেই ভেঙে পড়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের চেয়ে জেলা-উপজেলা শাখার নেতাদের বয়স অনেক বেশি।
ফলে কেউ কাউকে মানছে না। সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, বিগত দেড় বছরে ছাত্রলীগ থেকে প্রায় পৌনে ৩শ নেতা বহিষ্কৃত হয়েছেন। সর্বশেষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দু'গ্রুপে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় যে ১৩ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে কিন্তু বহিষ্কৃত নেতাকর্মীরাই কিছুদিন বাদে আবার খোলস পাল্টে যা-তাই হয়ে যাচ্ছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা যদি মনে করে যে, যত রক্তপাতই করি না কেন, শান্তি হবে না। তবে এখন তারা যে ত্রাস সৃষ্টি করছে, তা সময় বুঝে বহুগুণে বাড়বে।
জাহাঙ্গীরনগরের ঘটনায় ঢাকার সংবাদপত্রগুলো বিষয়টিকে যত গুরুত্ব দিয়ে ছেপেছে, দেশের অন্য কোন স্থানের খবর ততো গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয় না। সকল সংবাদ প্রকাশিত হলে ছাত্রলীগের অগ্নিমূর্তি সকলের কাছেই ধরা পড়তো। আমরা সারাদেশ থেকেই ছাত্রলীগের তান্ডবের এমন ভয়াবহ চিত্র পাই। ক'দিন আগে বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দেখলাম ছাত্রলীগের অন্তর্কোন্দলের এমনি এক ভয়াবহ চিত্র। বেঞ্চের ওপর শুইয়ে একই দলের প্রতিপক্ষ গ্রুপের এক ছাত্রকে জবাই করার চেষ্টা করছে।
জবাই-এ উদ্যত ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ ছাত্র আরিফকে হত্যা করেছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। তার শাস্তি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার। আছে সে বীরদর্পেই। বিষয়টা এমন বড় পাপ শাস্তি লঘু।
তাই ছাত্রলীগ ধরাকে সরা জ্ঞান করছে বারবার।
এ সরকার ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর থেকেই আমরা দেখেছি যে, ছাত্রলীগ দেশের সর্বত্র উন্মত্ত আচরণ শুরু করেছে। আর কোথায়ও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এখন অবশ্য ক্ষমতাসীন দল থেকে বলা হচ্ছে, ছাত্রলীগ তাদের অঙ্গ সংগঠন নয়। ছাত্রলীগের অপকর্মের দায় দলটি নেবে না এমন কথাও দেশের আকাশে বাতাসে ঘুরপাক খাচ্ছে।
কিন্তু ছাত্রলীগকে শাসন করার কোন উদ্যোগ সরকার থেকে নেয়া হচ্ছে এমন আভাসও নেই। বরং ছাত্রলীগের বেপরোয়া আচার-আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান না নেয়ার কারণেই প্রশ্রয় পাচ্ছে সংগঠনটি। অন্যদিকে ‘দায় নেবে না' মুখে ক্ষমতাসীন দল এ কথা বললেও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের অতীত, বর্তমান- হয়তো ভবিষ্যৎও এক সুতায় বাঁধা। দায় না নিলেও দায় এড়াতে পারবে এমন কোন সম্ভাবনাই নেই। আর একটি সংগঠন দিনের পর দিন দেশে খুনাখুনির ঘটনা ঘটিয়ে যাবে, আইনের হাত তাদের ক্ষেত্রে বামনের হাত হয়ে থাকবে তাইবা হয় কি করে? সংগঠনে নাকি বহিরাগতরা ঢুকে পড়েছে।
তাহলে ধরেও নেয়া যায়, সময় এলে এ বহিরাগতরা বেরিয়েও যাবে। তাদের অপকর্মের দায় জমা পড়ে থাকবে সংগঠনের হিসাবের খাতায়। সরকার যদি সত্যটি বুঝেন তাহলে ক্যাডারদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়াই বাঞ্ছনীয় নয় কি?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।