প্রথমআলো অনলাইন জরিপ যার কোন গ্রহনযোগ্যতা নাই । গ্রহন যোগ্যতা থাকলেও ০'০০১% থাকতে পারে তাও সন্দেহজনক । অবশ্যই অনেক কারন আছে । প্রথম কারনটি হচ্ছে বাংলাদেশে প্রায় ১৬.২ কোটি মানুষ আছে । এই ১৬.২ কোটি মানুষের মধ্যে ৯.২ কোটি ভোটার ।
জরিপে অংশ গ্রহনকারী ৩,০০০ জন মোট জনসংখ্যা অনুপাতে ০'০০১% । দেশের এই ০'০০১ % জনগন চায় তত্তাবধায়ক সরকারের অধিনে নিবর্াচন । বাকী ১৬ কোটি ১৯ লক্ষ ৯৭ হাজার জন ভোটারের কোন মতামত গ্রহন করা হয় নাই । প্রথমআলো অনলাইন জরিপে যে ৩,০০০ জন অংশ গ্রহন করিয়াছে তার মধ্য ২৭০০ জন সম্ভবত জামাত ও বিএনপির সর্মথক এবং বাকী ৩০০ জনের রাজনৈতিক অবস্থান আমাদের নিকট পরিষ্কার না । তারা স্বতন্ত্র হইতে পারে আবার আওয়ামীলীগও হইতে পারে ।
এই একটি বিষয় বিবেচনায় আনিলে বুঝতে সহজ হয় জরিপের গ্রহনযোগ্যতা কতখানি । বিনয়ের সহিত বলিতে চাই সরকারে যারা যারা আছেন তারা কেন যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন আমার বুঝতে কষ্ট হচ্ছে । যদি বলি এই ফলাফল পরোক্ষভাবে মানিয়া না লইবার প্রবনতা তবে কি ভুল হবে । মানিয়া লওয়া বা নালওয়ার কিছু নাই । যারা এমন করে ভাবেন তাদেরকে বলতে দ্বিধা নাই যে এই জরিপের ফলাফল গুরুত্ব দিবার কোনই প্রয়োজন নাই ।
কেউই ফলাফল মানিয়া লইবার জন্য সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করিতেছে না । এমন জরিপের প্রতি সামান্যতম অভিনিবেশ কিংবা অবলোকন করায় স্বীয় শক্তিহীনতা প্রতিভাত হইতে পারে । ফলাফল গুরুত্বে আনাই মস্ত বড় ভুল । সরাকারকে ভয় দেখাইতে যদি কোনই পত্রিকা আরেকটা জরিপ(পল্টনে বিএনপি জামাত জোটের সমাবেশ চলাকালীন) পরিচালনা করিয়া পরের দিন তাদেরই পত্রিকায় ফলাফল প্রকাশ করে তবেতো সরকার আরও বেশী ঘাবড়াইয়া যাইবে । সেই জরিপের ফলাফল অবশ্যই ৯৯% ভোট বিএনপি জামাত পাইবে কারন সমাবেশের মধ্যে যারা উপস্থিত থাকবে তারা সকলেই বিএনপি জামাতের সর্মথক ।
সোজা কথায় জরিপ অনুযায়ী আওয়মীলীগের স্বিদ্ধান্তের বিরোধীতা করিয়াছে ৯০% লোক এবং বাকী যে ১০% লোক রহিল তারা যেন তাদের স্বিদ্ধান্তকে বিবেচনায় আনিয়া ৯০%-এ আসিয়া ভীর জমায় তারই পরোক্ষ আহব্বান জানাইয়া রাখিল ।
ভারতের ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসের ১৬ তারিখের নির্বাচনের পূবর্ে একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল জরীপ করিয়া প্রচার করিয়াছিল এবং তাদের জরিপ অনুযায়ী ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ এ্যালায়েন্স (ইউপিএ) জোটের
চাইতে ন্যাশনাল ডেমক্রেটিক এ্যালায়েন্স(এনডিএ) জোট অনেক অনেক অগ্রসর । সব রাজ্যের ভোট গ্রহন সমাপ্তির এক সপ্তাহ পরে সমগ্র ভারতের জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনায় দেখা যায়
ইউপিএ পুনরায় সরকার গঠনের জন্য আসন সংখ্যার দিক দিয়ে অগ্রসর ছিলো এবং তারাই সরকার গঠন করে । এই জরিপের উদ্দ্যেশ্য নিবর্াচনের ময়দানে ইউপিএ জোটের ইমেজ নষ্ট করিয়া ভোটারদের কাছে অগ্রহনযোগ্য বা অসমর্থিত এনডিএ জোটকে জয়ী করিবার জন্য পরোক্ষভাবে প্রচার চালনো । অতঃপর ভারতের নিবর্াচন কমিশন এবং হাইকোর্ট উক্ত টেলিভিশন চ্যানেল-এর বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিয়েছিল ।
যার ফলশ্রুতিতে এমন ধরনের জরিপ ভারতে আজও কোন সংস্থা করতে অনুৎসাহী । যদি কোন সংস্থা করেও তবে তারা সরকারী দপ্তর হইতে পূবর্ে অনুমতি লইয়া জরিপ কাজে অগ্রসর হয় ।
আমরা সকলেই জানি এই ধরনের জরিপের মূল উদ্দ্যেশ্য থাকে যে কোন রাজনৈতিক দল বা জোটকে নিবর্াচনের ময়দানে ক্ষতি করিয়া অপর কোন রাজনৈতিক দলের ভোট কারচুপী বা ভোট ক্রয়ের অসৎ উদ্দ্যেশ্য সফল করার জন্য অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করিয়া দেয়া । আমরা যারা কম রাজনীতি বুঝি তারা সবাই অন্তত পক্ষে এতটুক বুঝিবার ক্ষমতা রাখি প্রথমআলোর দাসমনোভাবপূর্ণ, ভিত্তিহীন, যুক্তিহীন, কবিকল্পিত অমূলক অনলাইন জরিপের আসল উদ্দ্যেশ্য । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।