আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্মৃতি বিজড়িত চৌদ্দটা বছর, যা কখনই অমলিন হবে না....

আনাড়ী রন্ধন শিল্পীর ব্লগ B-)। ব্লগের বাজে-মানহীন লেখাগুলোর মাস্টার পিস দেখতে চাইলে এই ব্লগারের পোষ্ট গুলো পড়ে দেখতে পারেন। কথা দিচ্ছি, নিরাশ হবেন না। B-)

ক্লাশ ওয়ানের ঘটনা, একদিন আম্মা আমাকে মাদ্রাসা থেকে আনার পথে বললেন আমাদের নতুন বাসা দেখে এসেছি। আমাকে কেন নেওয়া হল না সে জন্যে আমি নাকি রাস্তার মধ্যেই চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেছিলাম।

পরে আমাকে নিয়ে দেখায় বাসা। সেই বাসাটিতে একে একে কাটালাম চৌদ্দটি বছর। জীবনের প্রতিটি রঙীন মুহূর্ত কেটে এই বাসাটিতে। পেয়েছিলাম খেলার সাথী জুঁই, বেলী, তাসনুভা আপুকে। প্রতিটি দুপুর-বিকেল কাটতো পুতুল, হাড়ি-পাতিল, কানামাছি, মাংস চোর আরো কত্ত খেলা খেলে।

প্রতিদিন বিকেলে ছাদে যেতে না পারলে মনে হত দম বন্ধ হয়ে গেল। মনে হত জীবনের চরম গুরুত্বপূর্ণ কিছু একটা মিস হয়ে গেল। বেশী বন্দী হতাম আমি। এ নিয়ে আমার গৃহ শিক্ষকদের সাথে অভিমানের শেষ ছিল না। শুধু যে খেলা হতো তা না, ঝগড়া ঝাটিও হত প্রচুর।

বেশী হত বেলীর সাথে, সেই বেলী এখন অন্যের ঘরনী। সময়ের সাথে সাথে সব কিছুই পরিবর্তন। আমাদের বন্ধুত্ব ছিল অটুট। কিন্তু জুঁই বেলী'রা গত বছর ওদের বাড়ীতে চলে গেলে মনে হয় সব কিছুরই ছন্দ পতন ঘটেছে। এখন বিকেলে ছাদে যেতে আর বাঁধা নেই কিন্তু যেতে ইচ্ছে করে না।

তার পরেও আজকের আগ পর্যন্ত সব স্বাভাবিক লাগছিল। বেশ কিছু দিন ধরেই আমার আর ভাইয়ার অভিযোগ ছিল এত্ত ছোট বাসায় আর থাকা যায় না। বড় বাসা নেওয়ার তাগাদা দিচ্ছিলাম। সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় না ঘটার ফলে তা এত দিন বাস্তবে রুপান্তরিত করতে পারেননি আব্বা-আম্মা। কিন্তু এত দিনের আজকে সকালে সব কিছুতেই মিলে যাওয়ায় বাড়ীওয়ালাকে বলে দিয়েছেন টু-লেট টানাতে।

আগে মনে হলেই কেমন যেন লাগত! এই বাসা ছেড়ে চলে যাবো! চোখ ভিজে উঠতো। আর আজকে যখন সব চুড়ান্ত হয়ে যায় তখন থেকেই খুব খারাপ লাগছে। কান্না আসছে। ভাইয়াকে বললে বলে, "এটাইতো স্বাভাবিক, আমদের তো আর নিজের বাড়ী নাই যে সারা জীবন থাকবো। " কিন্তু সব সময় বাস্তবতাকে মানতে কষ্ট হয়।

বার বার মনে হয় সেই পাঁচ বছর বয়সে এসেছিলাম এইবাড়ীতে। চৌদ্দটা বছর কাটালাম এক জায়গায়। সান্তনা শুধু এইটুকুই দূরে যাওয়া হচ্ছে না। নতুন বাসাটা পাশের বিল্ডিংয়েই। তার পরও চৌদ্দটা বছর....কম না... আজকের দিনটাতো চলেই গেল।

আর ২৮ দিন আছি এই বাসায়......

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.