হিংস্র কিছু শকুন আজ খামছে ধরেছে মানবতার পতাকা...জেগে উঠার এইতো সময়...
অনেক স্মৃতিময় আমার শৈশব এর একটা বিশাল অংশ জুড়ে আছে বিশ্বকাপ। মফস্বলে বড় হয়েছি। কালার টিভি দেখার সৌভাগ্য হয়েছে অনেক বড় হবার পর। সাদা কালো একটা টিভি ই ছিল আমাদের সম্বল। সেই সাদা কাল টিভি তেও বিশ্বকাপ খেলা দেখার জন্য মানুষের ভিড় আমাকে অবাক করত।
সবাই মেঝেতে বসে খেলা দেখতে আসত। তখন পুরা গ্রাম এ টিভি ছিল ২ টা। আমাদের টা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছিল। বিশ্বকাপ বলে কথা। সে কি আগ্রহ নিয়ে সবাই আসত।
প্রতিটা গোল এর পর পুরা বাড়িটা কেপে উঠত। মানুষ দেখতে বরাবর ই আমার ভাল লাগত। এখনো লাগে। আমিও বসেই থাকতাম কখন খেলা শুরু হবে। মানুষজন আসবে।
কোলাহল মুখর সেই বিশ্বকাপ।
সেই প্রথম ব্রাজিল এর খেলা দেখা। ছোট ছোট পাস। ড্রিব্লিং। অসাধারন ফুটবল খেলল ব্রাজিল সেবার।
হা আমি ১৯৯৮ সালের কথা বলছি। তার আগে থেকেই শুনতাম ব্রাজিল এর খেলার কথা। মামার মুখে। বাবার মুখে। ১৯৯৪ এ আমি অনেক ছোট।
বাবার কোলে শুয়ে শুয়ে দেখা বিশ্বকাপ এর সেই স্মৃতি খুব একটা মনে নেই। শুধু মনে আছে রোমারিও এর কথা। একটা খেলা দেখেছিলাম। অসাধারন খেলেছিল তখন। এরপর আসলো রোনালদো,রিভালদো,রবারতো কার্লোস,কাফু এদের পালা।
অনেক সুন্দর একটা বিশ্বকাপ উপহার দিয়েছিল ব্রাজিল সেবার। ফ্রান্স এর কাছে হেরেছিল সত্যি কিন্তু এতটা মহাকাব্যিক খেলা এর আগের ম্যাচ গুলোতে খেলেছিল সত্যি তুলনা হয়না এখনো। রোনালদো,কার্লোস দের চোখের পানির সাথে আমার চোখের পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছিল সেই ফাইনালের রাতে। এখনো মনে পরে সেই রাতের কথা। অনেক ছোট ছিলাম।
অনেক কিছুই বুঝতাম না। কিন্তু সেই যে অদ্ভুত এক মায়ায় জড়িয়ে পরলাম সাম্বার সাথে। আজও ব্রাজিল এর খেলা হলেই সেই অনুভুতি টাই চলে আসে।
১৯৯৮ এ রোনালদো হঠাত করে মাথা নেড়া করলো। একটু চুল রাখল সামনের দিকে।
আমি ওর এতটাই ফ্যান ছিলাম আমিও মাথা ওরকম করে ন্যাড়া করে ফেললাম। বাসায় আসতেই তো আম্মার ঝাড়ি। আর যাই কোথায়। গিয়া পুরো নেড়া হয়ে আসলাম। ব্রাজিল হেরে গেল।
বন্ধুবান্ধব রা সবাই খুব খেপাত এটা নিয়া। বলাই বাহুল্য তখনও বেশিরভাগ দর্শক ই আরজেন্টিনার। সেই এক ম্যারাডোনা রে নিয়াই লাফালাফি। আমার রোনালদো,রিভালদো দের কি আর পাত্তা আছে ওদের কাছে? আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম পর্যন্ত। ২০০২ এর বিশ্বকাপ টা জিতিয়ে দাও প্লিয।
আল্লাহর রহম হল। ২০০২ এ ব্রাজিল পেন্টা জিতল। আমাকে খেপাতো না এরপর থেকে আর কেউ। ফুটবল খেলা দেখাই ছেড়ে দিলাম এরপর থেকে।
এবারের ব্রাজিল টিম এর অনেক খেলোয়ার কেই চিনতাম না।
দুঙ্গার কৌশল টাকেও পছন্দ করতাম না। কিন্তু শেষ ম্যাচ টা দেখে আমার ধারনা সত্যি পালটে গেল। ব্রাজিল কে হেক্সা জিতালে একমাত্র দুঙ্গাই পারবে। ধুর্ত শেয়াল তো আর এমনি বলা হয়না। জয়তু ব্রাজিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।