রোববার এক যৌথ বিবৃতিতে মাহমুদুর রহমানকে ‘গণশত্রু’ আখ্যায়িত করে তারা বলেন, মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবি করে ১৬ সম্পাদকের বিবৃতিতে তারা বিস্মিত, মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ।
বিবৃতিদাতা চার সংগঠনের নেতারা হলেন, সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল কে. এম. শফিউল্লাহ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দীন ইউসূফ, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও পেশাজীবি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. কামরুল ইসলাম খান।
মাহমুদুরের মুক্তি এবং তার পত্রিকার ছাপাখানা খুলে দেয়া, দিগন্ত ও ইসলামীক টেলিভিশনের সম্প্রচার চালুর দাবি জানিয়ে শনিবার বিবৃতি দেন ১৫টি দৈনিক ও একটি অনলাইন পত্রিকার সম্পাদক।
এ ঘটনায় ফেইসবুকসহ সোস্যাল মিডিয়ায়ও প্রতিক্রিয়া হয়।
চার সংগঠনের বিবৃতিতে বলা হয়, “আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফ পরিবর্তন সংক্রান্ত মিথ্যাচার এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী দেলওয়ার হোসেন সাঈদীকে চাঁদে দৃশ্যমান, এহেন সংবাদ এবং ছবি প্রকাশ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করে বাংলাদেশকে সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছিল।
”
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার হীন উদ্দেশ্যে এই পত্রিকাটি ক্রমাগতভাবে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ পরিবেশন করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা করতে নিরীহ ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে উত্তেজিত করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও বাড়িঘর পোড়াতে সাহায্যে করেছিল বলেও উল্লেখ করা হয়।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শাহবাগে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়, যা পরবর্তিতে সারাদেশে গণজাগরণ সৃষ্টি করে। আর শাহবাগের ওই আন্দোলন ‘ফ্যাসিবাদী’ বলে সংবাদের শিরোনাম করে খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা মাহমুদুর সম্পাদিত আমার দেশ।
ওই চার নেতা বলেন, সাংবাদিকতা ও সম্পাদনার সকল রীতি-নীতি, নৈতিকতা ও আদর্শ উপেক্ষা করে যে ব্যক্তি রাষ্ট্র ও জনজীবনকে বিপন্ন করার লক্ষ্যে উদ্দেশ্যপূর্ণ ভাবে সংবাদপত্রকে অপব্যবহার করে সেই ব্যক্তির মুক্তি দাবি করা আমাদের মোটেও যৌক্তিক মনে হয় না।
“বিবৃতিতে ১৬ সম্পাদকের মধ্যে প্রগতিশীল ও মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন সম্পাদকের সাথে কতিপয় প্রগতিবিরোধী ও ধর্মীয় মৌলবাদী রাজনীতির পৃষ্ঠপোষকতা দানকারী সংবাদপত্রের সম্পাদকের নাম দেখে আমরা মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ।
আমরা আশা করব, আমাদের দেশপ্রেমিক সম্মানিত সম্পাদকগণ এ ব্যাপারে তাঁদের সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত নেবেন। ”
এদিকে মাহমুদুরের পক্ষে বিবৃতি দেয়ায় ফেইসবুকে সম্পাদকদের ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে।
প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারী লিখেছেন, মাহমুদুর রহমানের গ্রেপ্তারের কারণে যদি মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হয় তাহলে ব্লগারদের গ্রেপ্তারে তা নয় কেন? মাহমুদুর রহমানকে যদি মুক্তি দেয়া হয় এর আগে মুক্তি দিতে হবে ব্লগারদের।
“পত্রিকার সম্পাদক সমাজের মত প্রকাশের স্বাধীনতার বোধ এতদিনে জাগিয়া উঠিল? এতদিন পর উনারা বুঝিতে পারিলেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর এর উপর জুলুম হইযাছে। একদিন শাহবাগ থেকে মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতারের দাবি উঠেছিল।
তখন এইসব সুশীল সম্পাদক সাহেবরা কোথায় ছিলেন?” লিখেছেন হাসান তারিক চৌধুরী।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকের কথিত স্কাইপ কথোপকথন প্রকাশ এবং রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গত ১১ এপ্রিল গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিনই পুলিশ পত্রিকাটির ছাপাখানায় তালা ঝুলিয়ে দেয়।
অন্যদিকে ৫ মে গভীর রাতে দিগন্ত টেলিভিশন ও ইসলামিক টিভির সম্প্রচার ‘সাময়িকভাবে’ বন্ধ করে দেয়া হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।