আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাকা বিকালে আটক, রাতে মুক্ত

সর্বদা আপডেট

নির্বাচন কমিশনের একটি মামলায় আটক হওয়ার প্রায় ছয় ঘণ্টা পর বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বুধবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে তিনি কোতয়ালি থানা থেকে বেরিয়ে যান। মহাগনগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডল সাংবাদিকদের বলেন, "সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশন সালাউদ্দিন কাদেরকে মুক্তির দিতে বলেছে। সে অনুযায়ী তাকে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার মুন্সী আহসান কবিরের জিম্মায় মুক্তি দিয়েছি আমরা। " বিকাল সাড়ে ৫টায় নগরীর বাকলিয়া থানার অদূরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পুলিশের একটি টহলদল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের ও তার গাড়িবহর আটক করে।

রাত পৌনে ১০টায় তাকে নির্বাচন কমিশনের একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে থানা নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে পর্যন্ত থানার বাইরে গাড়িতে ছিলেন এই সংসদ সদস্য। রাতে তাকে কোতয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ১০ জুন নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা প্রণয়ন বিধি-২০০৯ ভঙ্গের অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলাটি করেছিলো। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা জেসমিন টুলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর গ্রেপ্তার নিয়ে কেউ যেনো কোনো গেম না খেলতে পারে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাকে ছেড়ে দিতে বলা হয়।

" বাকলিয়া থানার ওসি মাহবুবুল হক সাংবাদিকদের জানান, নগরীর বলিরহাট এলাকা থেকে তিনি ও তার কয়েকজন সহযোগী পাজেরো, মাইক্রোবাসসহ চারটি গাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দুটি গাড়ি পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে চলে যায়। ওসি দাবি করেন, সালাউদ্দিন ও তার সহযোগীদের বহনকারী দুটি গাড়ি তল্লাশি করা হয়েছে। তবে প্রচারপত্র বা নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করার মত কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। তবে গাড়িবহর ব্যবহার করা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।

তাকে আটকের পর সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় কোতয়ালি জোন পুলিশের সহকারী কমিশনার হেলালুদ্দিন থানায় আসেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "বিষয়টি আমি পুরোপুরি জানার চেষ্টা করছি। এ মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। " বলিরহাট এলাকা থেকে সালাউদ্দিন কাদের তার গুডস হিলের বাসায় যাওয়ার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। খবর পেয়ে থানায় আসেন বিএনপির সাংসদ জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম নগর সংস্থার নির্বাচন হবে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদক মিন্টু চৌধুরী জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে সালাউদ্দিন পুলিশকে কিছু না বলে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ গিয়ে তাকে আবার আটক করে। এর আগে থানার সামনে গাড়িতে অবস্থান করার সময় সালাউদ্দিন কাদের সাংবাদিকদের বলেন, "নির্বাচনে নিশ্চিত ভরাডুবি জেনে এবং ভোটারদের হয়রানি করতে এ কাজ করা হয়েছে। " গ্রেপ্তারের পর বাকলিয়া থানায় সালাউদ্দিন কাদের সাংবাদিকদের বলেন, "আসল ঘটনা হলো নির্বাচন।

উনারা (সরকার) আমাকে জেলের ভেতর ঢুকিয়ে ভোট চুরির কাজ সিদ্ধ করতে চায়। "নির্বাচনে চুরি করে দেখুন, তার পরদিন থেকে টিকতে পারেন কিনা। " এর আগে তিনি বিএনপি কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, "সরকার আমার প্রতি যে অন্যায় আচরণ করেছে আপনারা আগামীকালের নির্বাচনে তার জবাব দেবেন। " মুক্তির পরপরই তিনি নেতাকর্মী পরিবেষ্টিত হয়ে নগরীর গুডস হিলের বাসায় যান। মুক্তির সময় সাকা চৌধুরীর ভাই উত্তর জেলা বিএনপি'র সভাপতি গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মুক্তি পাওয়ার পর সালাউদ্দিন কাদের বলেন, "সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হওয়ায় আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। আশা করি নির্বাচনের দিনও এই শুভবুদ্ধি থাকবে। " রাতে বিএনপি কর্মীরা ইট-পাথর ফেলে এবং গাড়ির টায়ার পুড়িয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে অবরোধ করে রাখে। এর ফলে বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সৃষ্ট যানজট আরো তীব্র আকার নেয়। এতে করে দূরের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

শফিকুল ইসলাম নামে এক যাত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে আনোয়ারায় যাওয়ার জন্য বহদ্দারহাট বাসস্ট্যান্ডে আসেন। কিন্তু যানজট দেখে হেঁটে সামনে গিয়ে বাস ধরার জন্য রওনা দেন। প্রায় চার কিলোমিটার দূরে কালামিয়ার বাজারে এসেও দেখেন একই অবস্থা। সালাউদ্দিনের মুক্তির আগে রাত ১০ টা ১৯ মিনিটে নির্বাচন কমিশন সচিব মুহম্মদ হুমায়ুন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "বিষয়টি সেক্রেটারিয়েটের নয়। রিটার্নিং কর্মকর্তাই ব্যবস্থা নেবেন।

তাকে গ্রেপ্তার কিংবা ছাড়ার বিষয়টি এখন রিটার্নিং কর্মকর্তার এখতিয়ার। আমি কিছুই জানি না এ বিষয়ে। " নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, "রিটার্নিং কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনিই যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। " বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এমসি/এএডি/এমএইচসি/এমএসবি/এইচএ/০১১৫ ঘ.


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।