ভারত-বাংলাদেশ স্থলসীমান্ত চুক্তি সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধনী বিলটি গত সোমবার ভারতের সংসদে পেশ করতে দেয়নি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি বলে অভিযোগ দলটির। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার তিন মাস পর দেশটির কেন্দ্রীয় পররাষ্ট্র সচিবকে চিঠি লিখে ওই খসড়া চুক্তিতে সায় দিয়েছিলেন রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যসচিব সমর ঘোষ।
আজ শনিবার দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত 'স্থলসীমান্ত চুক্তিতে সায় দিয়েছিল রাজ্য' শিরোনামের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
আনন্দবাজার জানায়, স্থলসীমান্ত চুক্তির ব্যাপারে রাজ্যের সম্মতি চেয়ে ২০১১ সালের ১৫ আগস্ট চিঠি পাঠিয়েছিলেন দেশটির তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব রঞ্জন মাথাই।
সেই চিঠির উত্তরে ২০ আগস্ট সমর ঘোষ লেখেন, খসড়া চুক্তির ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সম্মতির কথা আমি আপনাকে জানাচ্ছি। আর একারণে গত সোমবার মমতার নেতৃত্বে তৃণমূল সাংসদরা রাজ্যসভায় বিলটি পেশ করতে বাধা দিলেন দিলেন কেন- এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ পশ্চিমবঙ্গেই।
অবশ্য মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, চিঠিটি যখন পাঠানো হয়, তখন সবেমাত্র আমরা সরকারে এসেছি। চিঠির খসড়া তৈরি হয়েছিল আগের সরকারের সময়ই। আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সেই খসড়া অনুযায়ী চিঠিটি চলে গিয়েছে এবং সেটির বক্তব্যে বাম সরকারের মতামতেরই প্রতিফলন থেকে গেছে।
মমতা আরও বলেন, তার দল চিরকালই রাজ্যের জমি অন্যকে দিয়ে দেওয়ার বিরোধী।
এদিকে, চিঠিটি প্রকাশ্যে আসায় স্থলসীমান্ত চুক্তি বিতর্কে নতুন ইন্ধন জুগিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, মুখ্যসচিবের পাঠানো চিঠির বক্তব্য থেকে রাজ্য সরকার এভাবে সরে আসতে পারে কি না। সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যখন বিলটিকে সমর্থন করেছিল, তখন তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মধ্যে জোট ছিল। এখন জোট ভেঙে যাওয়ার পরে তৃণমূল কেন নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসছে, সেই উত্তর তাদের দেয়া উচিত।
কিন্তু এই চুক্তি হলে স্থানীয় বাসিন্দা, বিশেষ করে ছিটমহলের মানুষের সুবিধা হবে।
অন্যদিকে, মমতা বন্দোপাধ্যায় ব্যানার্জির বক্তব্য, স্থলসীমান্ত চুক্তি হলে রাজ্যের লাভ নয়, লোকসানই হবে। কারণ ভারতে বাংলাদেশী ছিটমহল রয়েছে ৫১টি, যার মোট এলাকা প্রায় ৭ হাজার একর। আর বাংলাদেশের মধ্যে ভারতের যে ১১১টি ছিটমহল রয়েছে, তার জমির পরিমাণ প্রায় ১৭ হাজার একর। ফলে ছিটমহল হস্তান্তর হলে ভারত পাবে ৭ হাজার একর, কিন্তু দিতে হবে ১৭ হাজার একর।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।