আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লালমনিরহাট স্টেশন মাস্টারও ট্রেনের টিকিট বেচে কালোবাজারীতে!!

আসুন,সরকারী কর্মচারীদের ঘুষগ্রহণসহ সকল দুর্নীতিবন্ধে সর্বাত্মক সহায়তা করি। কারন সরকারি কর্মচারীরা দেশপরিচালনার হাতিয়ার। তারা যদি না হয় দক্ষ ও সততার অধিকারী, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং বাংণাদেশকে কল্যাণরাষ্ট্রে পরিণত করার কাজটি হবে সুদূরপরাহত।

ঈদের পর ১২ আগস্ট জরুরি প্রয়োজনে গেছিলাম লালমনিরহাটে (ন'টার গাড়ী ক'টায় ছাড়ে বলে সাধারনত আমি ট্রেন ভ্রমণ করিনে)। তবুও বিশেষ কারণে লালমনিরহাট এক্সপ্রেসে যাবার জন্য রাত ১০।

১০ এর ট্রেনের আশায় আমি অনেক আগেই পৌঁছি কমলাপুরে। কিন্তু সেই ট্রেন ছাড়ে রাত ১টায়। ৪বছর পর সখ করে ট্রেনভ্রমনে এসে একই মহালেট দেখে আমি হতভম্ব; অথচ শুনি অনেক নাকি উন্নতি হয়েছে ট্রেনভ্রমনের। হ্যাঁ -উন্নতি হয়েছে একক্ষেত্রে-তা হলো-ট্রেনটি খুব জোড়েই চলছিলো গরুগাড়ীর গতির বদলে, যা অভাবনীয়!! সীট খুঁজতে গিয়েও অবাক হলাম, তৃতীয়শ্রেনীর সীটের আদলে ৬সীটে পাশাপাশি বসলাম মোট ৬জন? ঠিক যেনো শোভন সীট কোনো চেয়ার নয়। অথচ যাবার সময় শোভন চেয়ারেই গেছিলাম ৪৬৫/=টাকায়।

এবার ৮২০/=টাকায় এমনই প্রথমশ্রেনী!!!!!!! ১৮ আগস্ট ফেরার জন্য লালমনিরহাট স্টেশনে গিয়ে দেখি ১৮--২৪ তারিখ পর্যন্ত কোনো ক্লাশেরই সীট নেই মানে সীট আগাম বুক হয়েছে। আরেকজনকে পাঠিয়েও একই ফল হলে অবাক হলাম। এটা অবিশ্বাস্য বলে ডিটিএসকে (ডিভিশনাল ট্রেন সুপারভাইজার) ফোন দিলাম একটা টিকিটের জন্য এবং তার কাছে লোকও পাঠালাম। কিন্তু সেই হারামী ডিটিএস আমার লোককে ''আপনি স্টেশনে যান আমি আসছি'' বলে একেবারেই লাপাত্তা!! পরে খোঁজ নিয়ে জানলাম যে, এই ছোট্ট শহরেও ট্রেনের টিকিট কালোবাজারী করে নাকি স্বয়ং স্টেশন মাস্টারসহ রেলের অনেকেই। রেলের কিছু পরিচিত লোকই এসব জানালো এবং বললো যে, টিকিট কাঊন্টারে টিকিটমূল্যের চেয়ে ৫০/১০০ টাকা বেশী দিলেই টিকিট পাবেন অনায়াসেই।

আর প্লাটফরমের কিছু দোকানদারের নাম বললেন যাদের কাছে বেশী দামে টিকিট পাওয়া যাবে। হানিফ নামের একজনের কাছে একজনকে পাঠালাম কালোবাজারীর টিকিটের আশায় কিন্তু তার স্টক শেষ বলে কাজ হলোনা। পরে একজন বললো--সে নাকি ২১ তারিখের প্রথমশ্রেনীর ৩টি টিকিট কেটেছে গতকাল একজন এন এস আই এর কর্মকর্তার মাধ্যমে। শেষে বেকায়দায় পরে আমিও এই পথ ধরে পেয়ে গেলাম ২১ তারিখের তৃতীয় শ্রেনীর একটা টিকিট যার দাম ৩৯০টাকা। এদিকে শুনলাম এবং দেখলামও, সকাল সাড়ে ১০টার ঢাকাগামী ট্রেন চলছে ১২ ঘন্টা লেটে।

আমার ট্রেনও ছাড়বে ২১ তারিখ রাত ৮টায়। কিন্তু হায়, ২১ তারিখ বিকেলে খোঁজ নিয়ে জানলাম যে, আমার ট্রেন আজ সকালেই ছেড়ে গেছে মানে হঠাত রাইট টাইমে গেছে!! আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলাম । এখন আরেক জ্বালা, টিকিট ফেরত দেয়া বা বদলিয়ে নেয়া দরকার। স্টেশনে এসে দেখি--আমার মতো বহুলোক ট্রেন ফেল করেছে হায় হায় করছে? আবার তাদের টিকিট ফেরত নেয়া দুরে থাক টিকিটের তারিখও বদলিয়ে দিচ্ছেনা। আমিও বেকায়দায় পরলাম।

টিকিটের তারিখ বদলিয়ে নেয়ার সব চেষ্টা বিফল হলে আমি আবার আশ্রয় নিলাম সেই এন এস আইর। সবাই বলছেন--১২ঘন্টা লেট এগিয়ে যথাসময়ে ট্রেন ছাড়া ভালো, কিন্তু ৭/৮দিন যাবত লেটেচলা ট্রেনের টাইম বদলালে কি যাত্রীদের জানান কি উচিৎ ছিলোনা? ছোট্ট শহরে কি মাইকিং করা যেতোনা বা টিভিতে ঘোষণা দেয়া যেতোনা!! যাক--সেই ভদলোক আমার টিকিট মুহূর্তেই বদলিয়ে দিলেন কিন্তু আমার জরিমানা হলো ৫০% টাকা কর্তন?? তাদেরই অপরাধ অথচ আমার ২০০/=টাকা কেটে রেখেই তবে আমার ২২ তারিখের টিকিট দিলো যেনো ট্রেন ফেল করে আমিই মহাঅপরাধ করেছি!! দেখুন আবার রাইট টাইমের মজা, ভয়ে টেনশনে এবার আমি সাড়ে ১০টার ট্রেনের আশায় সোয়া ৯টায় এসে বসে থাকলাম স্টেশনে। কিন্তু ট্রেন এলো সকাল ১১টায় এবং ছাড়লো দুপুর ১টায়। তবে ট্রেনে লালমনিরহাটের ডিআরএমসহ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ঢাকাগামী হওয়ায় এবারও গরুর গাড়ী খুব চলেছে এবং ঢাকায় এসেছে সকাল সাড়ে ১১টায়!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.