২রা মার্চ, ২০০৬।
আমি ক্লান্ত,বিধ্বস্ত হয়ে বাসায় ফিরেছি। ফার্স্ট ইয়ারের বাধা শেষ হল। দীর্ঘ ক্লান্তিকর পরীক্ষা শেষ হয়েছে এতেই আমি খুশী। কোনমতে পাশ করবো এই দু:খবোধটা খুব একটা পীড়া দিচ্ছে না।
ক্লান্ত কিন্তু তারপরও কম্পিউটার নিয়ে বসেছি। গান শুনবো- হিমেশ রেশামিয়ার গান। মাঝে একবার মোবাইল ফোনটা বেজে উঠেছিল। আপু ফোন দিয়েছিলো-বলছিলো আম্মু অসুস্থ, তাড়াতাড়ি যেন হাসপাতালে যাই।
প্রতিদিনই একবার করে হাসপাতালে যেতে হয়, আম্মুকে দেখতে।
বোন ক্যান্সারে ভুগছে আম্মু প্রায় ৬ মাস হল। আচ্ছা, আমি আম্মু আম্মু করছি কেন, আমি কি আম্মু বলে ডাকি, নাকি মা বলে ডাকি ?
দূর ! কি ভাবছি আমি? গান শুনবো আপাতত:। একটু রিলাক্স করা দরকার।
গান ছেড়ে দিয়েছি হিমেশের। নাকা কন্ঠে গাইছে গান, শুনতে কিন্তু ভালোই লাগছে।
নতুন নতুন সিগারেট খাোয়া ধরেছি। সাথে এক কাপ চা। উফ! বেচে থাকার স্বাদই আলাদা। আবারো ফোনটা বেজে উঠলো। আহ, আপু ফোন দিয়েছে।
মা আমার....
আমি ছুটছি...পাগলের মতো ছুটছি। আমাকে হাসপাতালে পৌছতে হবে.....মার অবস্থা ভালো না...হিমেশের গান ঠিকই বাজছে আমার কম্পিউটারে , আধা কাপ চায়ের মধ্যে জ্বলন্ত সিগারেট ডুবিয়ে দিয়ে এসেছি। শেষবারের মতো প্রিয় মুখ না দেখতে পারায় সংকায় কাপছি আমি, ছুটছি আমি.....
৩রা মার্চ, ২০০৬।
বেচে থাকার স্বাদই আলাদা, প্রচন্ড আলাদা--কিন্তু মার যে আর সে স্বাদ আর পাোয়া হলোনা--আমাকে ফেলে চলে গেলো দূর অজানায়। হায়রে হিমেশের গান, হায়রে আমার আধাকাপ চা, হায়রে জ্বলন্ত সিগারেট, হায়রে অবুঝ আমি.....
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।