আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ডেমো প্রোজেক্ট

আমি একজন শিল্পী, গেমার এবং প্রোগ্রামার
অনেকদিন পর আবার লিখতে বসলাম। প্রচুর ব্যাস্ততা। আজ আমি পিএসপিতে প্রিন্স অব পারশিয়া দ্য ফরগটেন স্যান্ডস খেললাম। পিএসপি ভার্সনটা সাইড স্ক্রলিং করেছে। তবুও খেলতে বেশ ভাল লাগে।

পিসিতে অবশ্য এখনও আসেনি। পিসিতে বর্তমানে স্প্লিন্টার সেল কনভিকশন খেলছি। অসাধারন গেম। অনেকটা বর্ন আলটিমেটারমের মত ভাব আছে। ইতি মধ্যে অনেক গেমই শেষ করে ফেলেছি।

আজ আসুন আনরিয়াল ইন্জিন ৩ ব্যবহার করে করা আমার একটা ডেমো প্রোজেক্টের কথা বলি। কিছুদিন আগে আমার কাছে একজন Some War in blog (দুষ্টামি করলাম দয়া করে কেউ কিছু মনে করবেননা) এর একজন ব্লগার আমার সাথে যোগাযোগ করেছিল গেম ডেভেলপের কারণে। তবে দুঃখজনক হল আমি তাকে সাহায্য করতে পারিনি। আমার বর্তমানে সময়ের খুবই অভাব। অনার্সটা শেষ না করে গেম ডেভেলপিং এ যেতে পারছিনা।

তবে সেই ব্লগারকে আমি আনরিয়াল ইন্জিন ৩ এর কথা বলেছিলাম। অবশ্য সে সেটাতে কাজ করতে পছন্দ করেনি এটা তার ব্যাপার। এজন্য আমি এই ইন্জিনটাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাইছিলাম। সময়মত আমার ইন্সটিটিউটে একটা প্রোজেক্ট এক্সিবিশন হল এবং তাতে আমাকে প্রোজেক্ট দিতে বলা হল। আমি তো বেশ খুশি কেননা এটাতে তাহলে আমি ইন্জনটার ক্ষমতা দেখাতে পারব এবং সবাই ইন্জনটার দিকে আকৃষ্ট হবে।

আমার হাতে সময় ছিল মাত্র ২ সপ্তাহ। আর আমি ইন্জিনটাতে কোন কিছু বানিয়ে রাখিনি। তাই ২ সপ্তাহ আমাকে প্রচুর খাটতে হয়েছে একটা ডেমো বানানোর জন্য। এত কম সময়ে আমি বুদ্ধি করে ইন্জিনের সাথে দেয়া ফ্রি মডেলগুলো ব্যবহার করলাম। এবং স্যাম্পল ম্যাপের ভেতর থেকে GDC তে দেখানো তাদের ডেমো লেভেলটার উপর কাজ শুরু করলাম।

ডেমো লেভেলটাতে বেশ কিছু জায়গায় সমস্যা ছিল যদিও হঠাৎ করে ধরা যায়না, সেগুলো আগে ঠিক করলাম। এরপর ২ সপ্তাহ কাজ করে বানিয়ে ফেললাম একটা ডেমো লেভেল যা দেখতে প্রচুর সুন্দর। ডেমোতে আমি প্রিন্স অব পারশিয়া স্যান্ডস অব টাইম, মাস ইফেক্ট ২ এবং নারুতো সিপুদেন এর সাউন্ড ব্যবহার করেছি। সৌভাগ্য অথবা দুর্ভাগ্য যাই বলেন বাংলাদেশে এর আগে কেউ আনরিয়াল ইন্জিন ব্যবহার করেনি বলে কেউ এই ইন্জিনের ক্ষমতা সম্পর্কে জানে না। এর সাথে আমি অবশ্য আরও দু'টি প্রোজেক্ট দেখিয়েছিলাম ১টা হল মোবাইলের জন্য প্যাকম্যান গেম এবং ২য়টা হল মোবাইলের জন্য j2me বেজড 2d ফিজিক্স ইন্জিন।

তবে আমার বানানো 2d ফিজিক্স ইন্জিনে এখন পর্যন্ত শুধু রিজিড বডি সিমুলেশন হয়। যাক আবার কাহিনীতে আসা যাক। আমি ডেমোগুলো দেখাতে নিয়ে গেলাম এবং আমাদের দু'জন শিক্ষক মাসুম ভাই আর মুক্তি ভাইকে দেখালাম। আমার কিছুক্ষন এত ভাল লাগল দেখলাম মাসুম ভাই আর মুক্তি ভাইএর মুখ হা হয়ে আছে। হা হা হাঃ তারা আনরিয়াল ইন্জিনের শক্তির প্রেমে পরে গেছে।

হা হ আহ হাঃ তারা আমাকে অনেক প্রশ্ন করার মাঝে এটাও জিজ্ঞাসা করল যে এটার নাম কি তখন আমি এটার নাম Avalon দিয়ে দিলাম টুম্ব রাইডার গেমের একটা লেভেলের নাম থেকে। এক্সিবিশনের দিন আমার পিসি নিয়ে গেলাম কেননা ইন্সটিটিউটে গেম চলার মত কোন পিসি নেই। এক্সিবিশনে আমি পিসিতে দু'টি মনিটর ব্যবহার করলাম আনরিয়াল ইন্জিনের মজা পুরোপুরি পাওয়ার জন্য। তাতে দেখলাম কারও আমার প্রোজেক্টের দিকে আকর্ষণ নেই সবাই ব্যাস্ত কিভাবে দু'টা মনিটর ব্যবহার করলাম সেটা নিয়ে হা হা হা। তবে অনেকে দেখলাম ইন্জিনটা ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠল।

আমি তাদের কিছু বলতেই তারা বড়ই হতাস হল যে গেম তৈরী যদি ইন্জিনে করি তবুও কেন প্রোগ্রামিং করতে হবে। হা হা হা। তবে বেশ কিছু লোক দেখলাম আসলেই আগ্রহী হল। আমি আমার পিসির পাশে আমার এক ছোটভাই রকির পিসি রাখার ব্যবস্থা করেছিলাম। তাতে অবসরে আমরা দু'জন ল্যানে মাল্টিপ্লেয়ারে স্পিন্টারসেল কনভিকশন খেলতে পারি।

এক্সিবিশনে লোকজন অন্যদিকে চলে গেলে আমি জোরে সাউন্ড দিয়ে গেম ট্রেইলার চালিয়ে দিচ্ছিলাম আর আবার লোকজন আমার দিকে আকৃষ্ট হচ্ছিল। হা হ আহা। আমি প্রোজেক্টের একটা ভিডিও ক্যাপচার করে সামনের মনিটরে চালিয়ে দিয়ে পেছনের মনিটরে এ্যাসাসিন'স ক্রিড ২ খেলছিলাম। খুবই আনন্দ পাচ্ছিলাম। দুপুরটা পেরোতেই ব্যাস আর কোন প্রজেক্ট দেখাইনি শুধু গেম গেম গেম।

দুই মনিটরেই গেম। আমি আর রকি দু'জনেই খেলছি। আর সবাই দেখছে। তাদের মধ্যেই উত্তেজনা দেখা গেল। মাঝখানে দেখলাম কোথা থেকে যেন ঢাকা ইউনিভার্সিটির ডিন আর এক মন্ত্রীকে আমাদের চেয়ারম্যান ম্যাডাম নিয়ে এল।

তারাও খুবই ভাল ভাল কমেন্ট করল। সবচেয়ে বড় হল তারা আমাকে বলল যে বাংলাদেশে নেক্সট জেনারেশন গেমের এই প্রথম এমন একটা ডেমো তৈরী হল। তারা তো আর নেক্সট জেনারেশন বলতে পারেনা তারা বলল সুন্দর গ্রাফিক্সের যুগের গেম। হা হা হা। আমাদের চেয়ারম্যান ম্যাডাম বলল যে এটা কাউকে বিনা পয়সায় দিবানা।

এখন মনে হচ্ছে তাদের চাপেই ডেমো লেভেলটা নিয়ে আরও ভাবতে হবে। ইতি মধ্যে আমি আমার ৮সেমিস্টারের ফাইনাল প্রোজেক্ট ঠিক করেছি। সেটা হল ক্রাউড টেকনোলজি। আমি এটাও আনরিয়াল ইন্জিন ৩ তে করব। এজন্য আনরিয়াল ইন্জিন ৩ চলে এমন একটা ল্যাপটপ কিনতে হবে।

কেননা ইন্সটিটিউটে কোন গেমিং পিসি নেই। আমি ঠিক করেছি Alienware M17x ল্যাপটপটা কিনব ইনশাল্লহ। দেখা যাক কি হয়। আমি আমার ডেমো প্রোজেক্টের একটা ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে দিলাম। তবে এটা কাজ করার মাঝখানের ভিডিও।

লাইটিং রিবিল্ড করা হয়নি। তাছাড়াও এরপরও অনেক পরিবর্তন করা হয়েছে। যাই হোক। ডেমোর ডেমো ভিডিওটা দেখতে পারেন।
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.